প্রতিবেদনে বলা হয়, বাংলাদেশের তরুণ শ্রমশক্তির জন্য আরো উন্নতমানের কাজের পরিবেশ তৈরি করার জন্য উল্লেখিত খাতের প্রবৃদ্ধি থেকে সহায়তা প্রয়োজন।
তবে নীতি সহায়তার পাশাপাশি বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোকে ঋণ বিতরণের পর ঋণের যথাযথ ব্যবহার নিশ্চিত করতে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন অর্থনীতিবিদ ও জ্যেষ্ঠ ব্যাংকাররা।
এ বিষয়ে বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ডেভলপমেন্ট স্টাডিজের (বিআইডিএস) সাবেক মহাপরিচালক ড. মুস্তাফা কে মুজেরী ঋণের যথাযথ ব্যবহার নিশ্চিত করার জন্য পর্যবেক্ষণ কার্যক্রম আরো জোরদার করতে বাংলাদেশ ব্যাংককে পরামর্শ দিয়েছেন। একই সঙ্গে ঋণ বিতরণের ফলাফলও নিরীক্ষা করা উচিত বলে মনে করেন মুস্তাফা কে মুজেরী।
অ্যাসোসিশেন অব ব্যাংকার্স বাংলাদেশের চেয়ারম্যান ও ঢাকা ব্যাংকের এমডি সৈয়দ মাহবুবুর রহমান বলেন, ঋণের যথাযথ ব্যবহার নিশ্চিত করা গেলেই এসব অর্থনৈতিক উন্নয়ন নিশ্চিত করা যাবে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের বার্ষিক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, অভ্যন্তরীণ ও বহির্মুখী নানা রকম বাধা সত্ত্বেও বাংলাদেশ সামগ্রিক বহুমুখী অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা দেখা যাচ্ছে।
তবে, ২০৩০ সাল নাগাদ বাংলাদেশকে উচ্চ-মধ্যম আয়ের দেশ হিসেবে গড়ে তোলার লক্ষ্য এবং ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নয়নশীল দেশে উন্নীত করতে বিশ্বব্যাপী অর্থনীতির ক্রমবর্ধমান প্রতিযোগিতায় ধারাবাহিক সংস্কারের প্রয়োজন হবে।
দেশে দীর্ঘমেয়াদী বিনিয়োগ এবং নতুন নতুন বাজার তৈরির বিষয়ে সহায়তা করতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক বিভিন্ন উদ্যোগ নিয়েছে। তারই অংশ হিসেবে ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোক্তা, কৃষি, সবুজ অর্থায়নের জন্য দীর্ঘমেয়াতী গ্রিন ট্রান্সফরমেশন ফান্ড (জিটিএফ) থেকে সহায়তা চালু রেখেছে।
এসব প্রকল্পে অর্থায়ন টেকসই প্রবৃদ্ধি নিশ্চিত করবে বলেও কেন্দ্রীয় ব্যাংকের বার্ষিক প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।
প্রতিবেদনে আরো বলা হয়, ২০১৮-১৯ অর্থবছরে বাংলাদেশের অর্থনীতির আরো প্রবৃদ্ধি হবে। অভ্যন্তরীণ ও বিশ্ব চাহিদার কারণে সরকারি বেসরকারি বিনিয়োগ বৃদ্ধি এবং উচ্চ রপ্তানি, রেমিটেন্স ও বেসরকারি খাতে ঋণ প্রবাহ বাড়বে।
উচ্চ প্রবৃদ্ধির জন্য উত্পাদনশীল খাতে বেসরকারি বিনিয়োগ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। একই সঙ্গে প্রতিযোগিতামূলক বিনিয়োগের জন্য এবং উৎপাদনশীল খাতে সরকারি বিনিয়োগও বৃদ্ধি করা প্রয়োজন।
দেশি-বিদেশি অর্থনৈতিক দৃষ্টিকোণ থেকে বিশ্বব্যাপী প্রবৃদ্ধির সম্ভাবনা এবং সম্ভাব্য ঝুঁকির আলোকে ২০১৮-১৯ অর্থবছরের বাজেটে জিডিপির হার ৭ দশমিক ৮ শতাংশ এবং মুল্যস্ফীতির হার ৫ দশমিক ৬ শতাংশে নির্ধারণ করা হয়েছে।
তবে বাংলাদেশ ব্যাংক চলমান উন্নয়ন প্রকল্পগুলো বিবেচনা করে বলছে, ২০১৮-১৯ অর্থবছরে জিডিপির হার ৭ দশমিক ৫ শতাংশ থেকে ৭ দশমিক ৭ শতাংশ হতে পারে। যদি দেশে সুষ্ঠু রাজনৈতিক পরিবেশ বজায় থাকে এবং কোনো ধরনের বৈশ্বিক বাণিজ্য সংঘাত তৈরি না হয়।
প্রতিবেদন অনুযায়ী, বহুমুখী আর্থিক স্থিতিশীলতা বজায় রাখার জন্য এবং মুল্যস্ফীতি নির্ধারিত সীমার মধ্যে রাখতে একটি ‘সতর্ক’ আর্থিক নীতি অনুসরণ করছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
বাংলাদেশ সময়: ২০৪৮ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৫, ২০১৯
এসই/এমজেএফ