ঢাকা: করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ রোধে সরকার ঘোষিত লকডাউনে ব্যাংকিং সময়সীমা সীমিত করায় র্নিধারিত সময়ে লেনদেন কার্যক্রম শেষ হয়নি ব্যাংকগুলোতে। সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে লাইনে দাঁড়ানোর কারণে গ্রাহকদের অপেক্ষা করতে হয়েছে ব্যাংকের বাইরেও।
এক সপ্তাহের লকডাউন শুরু হয়েছে সোমবার (৫ এপ্রিল) ৬টায়। দেশব্যাপী এ লকডাউনের সময় ব্যাংকের কার্যক্রম চালু রাখার বিষয়ে ৪ এপ্রিল একটি নির্দেশনা দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। সেখানে বলা হয়েছে, লকডাউনের সময় সকাল ১০টা থেকে বেলা সাড়ে ১২টা পর্যন্ত লেনদেন চালু থাকবে। তবে অন্যান্য আনুষঙ্গিক কাজ সম্পাদনের জন্য ব্যাংক খোলা থাকবে দুপুর ২টা পর্যন্ত।
সোমবার (৫ এপ্রিল) রাজধানীর মতিঝিল, গুলশান, বনানী ও বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার ব্যাংকগুলোর শাখায় গিয়ে দেখা যায়, গ্রাহকদের উপচে পড়া ভিড়। ভেতরে সামাজিক দূরত্ব মেনে লাইনের কারণে ব্যাংকের বাইরেও লম্বা লাইন দিয়ে অপেক্ষা করছেন গ্রাহকরা।
যারা ব্যাংকে ঢুকছেন, নিরাপত্তা কর্মীরা তাদের শরীরের তাপমাত্রা পরিমাপ করার পাশাপাশি স্যানিটাইজার দিচ্ছেন হাত পরিষ্কার করতে।
বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায় ব্যাংক এশিয়ার শাখায় গিয়ে দেখা গেছে, দু’টি কাউন্টারে নগদ লেনদেনের পাশাপাশি আরও একটি কাউন্টারে চেক ক্লিয়ারিং করা হচ্ছে। ভেতরে সব গ্রাহক সামাজিক দূরত্ব মেনে লাইনে দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করছেন। ফলে ভেতরে দু’টি লাইনে ১০-১২ জন গ্রাহক দাঁড়াতে পারছেন। বাইরেও অপেক্ষা করছেন অনেকেই। বাইরেও অপেক্ষা করছেন অনেকেই।
ব্যাংক এশিয়ার এ শাখায় বেলা ১টা পর্যন্ত অপেক্ষা করে দেখা যায়, লেনদেনের জন্য বেশ কয়েকজন গ্রাহক অপেক্ষা করছেন।
এ বিষয়ে ব্যাংক এশিয়ার বসুন্ধরা শাখার অপারেশনস ম্যানেজার এবিএম শাহিদুল হক বলেন, লকডাউনের কারণে অনেকেই এদিন ব্যাংকের কাজ করতে এসেছেন। কেউ টাকা জমা দিচ্ছেন। আবার কেউ কেউ তুলতে এসেছেন। আবার অনেক গ্রাহক জানেন না লেনদেনের সময় বেলা সাড়ে ১২টা পর্যন্ত। এ কারণে নির্ধারিত সময়ের পরেও গ্রাহক আছেন। সাড়ে ১২টার আগে ব্যাংকে আসা সব গ্রাহকের সেবাই নিশ্চিত করা হবে।
তিনি আরও বলেন, সীমিত ব্যাংকিং কার্যক্রমে আমাদের শাখায় গড়ে ১০ থেকে ১৫ শতাংশ জনবল কমেছে। যাদের বাসা অনেক দূরে, যাতায়াতে সমস্যা, বিশেষ করে নারী কর্মকর্তাদের আপাতত বাসায় থাকতে বলা হয়েছে।
ইস্টার্ন ব্যাংকের গুলশান শাখার নিরাপত্তা কর্মী আকবর হোসেন বলেন, লকডাউনের কারণে সাড়ে ১২টার পরে কোনো গ্রাহককে ভেতরে ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না। আগে যারা এসেছেন, তাদের সবাইকে ভেতরে যেতে দেওয়া হয়েছে। সময় যতই লাগুক, সবাই সেবা পাবেন। সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার কারণে ভেতর থেকে একজন বের হলে বাইরে থেকে একজনকে ভেতরে ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে। প্রবেশমুখে শরীরের তাপমাত্রা পরিমাপের পাশাপাশি হাত স্যানিটাইজড করা হচ্ছে।
রূপালী ব্যাংক স্থানীয় শাখার মহাব্যবস্থাপক খান মো. ইকবাল বলেন, সামাজিক দূরত্ব মেনে লেনদেন চলছে। এতে গ্রাহকের লম্বা লাইন দেখা যাচ্ছে। লকডাউনের সময় ব্যাংক পরিচালনা ও লেনদেনের বিষয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নির্দেশনা মেনে চলা হচ্ছে।
করোনা ভাইরাসজনিত রোগ কোভিড-১৯ এর সংক্রমণ বাড়ায় দ্বিতীয় দফায় সারাদেশে লকডাউন ঘোষণা করেছে সরকার। লকডাউনে সীমিত পরিসরে দেশের ব্যাংকিং ব্যবস্থা চালু রাখার ঘোষণা দেয় সরকার। সেই ঘোষণার আলোকে বাংলাদেশ একটি প্রজ্ঞাপন জারি লেনদেন ও অন্যান্য নির্দেশনা দিয়েছে ব্যাংকগুলোকে।
সোমবার (৫ এপ্রিল) থেকে আগামী রোববার (১১ এপ্রিল) পর্যন্ত লকডাউন দিয়েছে সরকার। ফলে সরকারি-বেসরকারি অফিস-আদালত এবং দোকানপাট ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখা হয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ১৪১২ ঘণ্টা, এপ্রিল ০৫, ২০২১
এসই/এসআই