তিনি বলেন, কে মরলো সেটি বড় কথা নয়। সব মৃত্যুই কষ্ট দেয়।
রোববার (০১ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে আয়োজিত ছাত্র সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
বিএনপির অঙ্গ সংগঠন জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের ৩৮তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে এ ছাত্র সমাবেশ আয়োজন করা হয়।
এর আগে বিকেল ৪টায় সমাবেশস্থলে উপস্থিত হয়ে জাতীয় ও দলীয় পতাকা উত্তোলনের মধ্য দিয়ে সমাবেশের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন খালেদা জিয়া। এ সময় বেলুন ও সাদা পায়রা ওড়ানো হয়। ছাত্রদলের কয়েক হাজার নেতা-কর্মী করতালির মাধ্যমে খালেদা জিয়াকে স্বাগত জানান।
ছাত্রদলের সভাপতি রাজীব আহসানের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি আবদুল কাদের ভুঁইয়া, সাবেক সাধারণ সম্পাদক হাবিবুর রশীদ হাবিব, ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক আকরামুল হাসান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সভাপতি আল মেহেদি তালুকদার।
সমাবেশ মঞ্চে উপস্থিত থাকলেও সময় স্বল্পতার কারণে বক্তব্য দেননি বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, ড. মঈন খান, ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আমান উল্লাহ আমান, আবুল খায়ের ভূঁইয়া, ড. আসাদুজ্জামান রিপন, সাংগঠনিক সম্পাদক ফজলুল হক মিলন ও বিএনপির প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি।
দর্শক সারিতে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল মান্নান, এ জেড এম জাহিদ হোসেন, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা নাজমুল হক নান্নু, আতাউর রহমান ঢালী, সাংগঠনিক সম্পাদক রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু, বিলকিস জাহান শিরিন, মহিলা দলের সভাপতি আফরোজা আব্বাস, শ্রমিক দলের সভাপতি আনোয়ার হোসেইন, ওলামা দলের সভাপতি হাফেজ আবদুল মালেক, মহিলা দলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক শিরিন সুলতানা, সাবেক সংসদ সদস্য রেহানা আখতার রানু, নিলোফার চৌধুরী মনি, রাশেদা বেগম হীরা, শাম্মী আখতার।
সমাবেশের শুরুতে শোক প্রস্তাব উপস্থাপন করেন ছাত্রদলের সিনিয়র সহ সভাপতি মামুনুর রশিদ ও সাংগঠনিক রিপোর্ট পেশ করেন সাংগঠনিক সম্পাদক ইসহাক সরকার।
সময় মতো আন্দোলনে নেমে বিএনপিকে ফের ক্ষমতায় নেওয়ার প্রত্যাশা ব্যক্ত করে খালেদা জিয়া বলেন, সেই আন্দোলনের জন্য এখন থেকেই তৈরি থাকতে হবে। আমরা এরশাদবিরোধী আন্দোলন করেছি। আমি তোমাদের সঙ্গে রাজপথে ছিলাম। এ বিএনপিকে তিনবার ক্ষমতায় এনেছি। ইনশাল্লাহ দলকে সুন্দর করে গুছিয়ে আমরা ফের আন্দোলনে যাবো। কোনো গ্রুপিং-লবিং থাকবে না, যারা উপযুক্ত-যোগ্য, তাদের নেতৃত্বে বিএনপি আবার ক্ষমতায় আসবে।
ছাত্রদলের উদ্দেশে তিনি বলেন, তোমাদের সেইভাবে নিজেদেরকে তৈরি করতে হবে দেশটাকে রক্ষা জন্য; আগামী দিনে ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য, গরিব-দুঃখী মানুষের মুখে হাসি ফোটানোর জন্য।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, আজকে যারা বিএনপির নেতৃত্ব দিচ্ছেন তারা বেশিরভাগই ছাত্রদলের নেতা। ভবিষ্যতে এরাই দলের কর্ণধার হিসেবে আবির্ভূত হবেন।
তিনি বলেন, বাংলাদেশের ছাত্র আন্দোলনের ইতিহাস, অত্যন্ত গৌরবময় ইতিহাস। ৫২’র ভাষা আন্দোলন, নব্বইয়ের গণঅভ্যুত্থানসহ বাংলাদেশের সব আন্দোলনেই ছিল ছাত্রদের গৌরবময় ভূমিকা।
ছাত্রদলের ত্যাগ বৃথা যাবে না উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল বলেন, সম্প্রতি বিভিন্ন আন্দোলনে অনেক ছাত্রনেতা আহত হয়েছেন, পঙ্গু হয়েছেন, কারাবরণ করেছেন। তাদের এ ত্যাগ বৃথা যাবে না। খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে দেশ পুনর্গঠনের কাজে এ ছাত্রনেতাদের সম্পৃক্ত করা হবে।
দেশ ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে পৌঁছে গেছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, কোনো কিছু আর অবশিষ্ট নেই। খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে আবার ঘুরে দাঁড়াতে হবে। দেশকে বাঁচাতে হবে। দেশ নিয়ে জিয়াউর রহমান যে স্বপ্ন দেখেছিলেন, তা বাস্তবায়ন করতে হবে।
জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের সমালোচনা করে ফখরুল বলেন, জাতীয় পার্টির সমাবেশ ছিল আজ। সেখানে হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ বক্তব্য দিয়েছেন। তিনি আরো বাঁচতে চান। এজন্য তাকে রাষ্ট্রপতি বানাতে হবে, প্রধানমন্ত্রী বানাতে হবে। নইলে তিনি বাঁচবেন না।
এই ধরনের একজন লোককে দূত বানিয়েছেন শেখ হাসিনা। তার দলকে বিরোধীদলের মযার্দা দিয়েছেন। তার উপর আস্থা রেখেছেন তিনি (হাসিনা)। কিন্তু জনগণের আস্থা বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার প্রতি। তার নেতৃত্বে ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের মধ্য দিয়ে স্বৈরাচার ও অত্যাচারী সরকারের পতন হোক। ২০১৭ সাল জনগণের।
বাংলাদেশ সময়: ২০২০ ঘণ্টা, জানুয়ারি ০১, ২০১৭
এজেড/জেডএস