২০১১ সালের এই দিনে সিঙ্গাপুরের মাউন্ট এলিজাবেথ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি।
২০০৭ সালের ৩ সেপ্টেম্বর খোন্দকার দেলোয়ার বিএনপির মহাসচিব নিযুক্ত হন।
বিএনপির পঞ্চম কাউন্সিলের পর মহাসচিব পদ নিয়ে নানা গুঞ্জন শোনা গেলেও দেলোয়ারকেই আবারও মহাসচিব করা হয়। মহাসচিব হওয়ার পর থেকেই তিনি শারীরিকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়েন। প্রায়ই তাকে হাসপাতালে যেতে হতো।
খোন্দকার দেলোয়ার হোসেন মানিকগঞ্জ জেলার পাচুরিয়ায় ১৯৩৩ সালের ১ ফেব্রুয়ারি জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৯৫২ সালে অনার্স ও ১৯৫৩ সালে মাস্টার্স পাস করেন। ১৯৫৫ সালে একই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এলএলবি ডিগ্রি অর্জন করেন।
ভাষা আন্দোলন, মহান মুক্তিযুদ্ধ ও স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনে খোন্দকার দেলোয়ার হোসেন সক্রিয় ভূমিকা পালন করেন। ভাষা আন্দোলনে সক্রিয় ভূমিকা পালনের জন্য একুশে পদকে ভূষিত হন। তিনি ঘিওর-দৌলতপুর নির্বাচনী এলাকা থেকে ২য়, ৫ম, ৬ষ্ঠ, ৭ম, ৮ম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। একাধিকবার চিফ হুইপ ও বিরোধী দলীয় চিফ হুইপের দায়িত্ব পালন করেন।
দেশের ইতিহাসে খোন্দকার দেলোয়ার হোসেন শুধু একজন রাজনীতিবিদই নন, তিনি ছিলেন আপসহীন জাতীয় নেতা। ওয়ান ইলেভেনের জরুরি সরকারের সময় বিএনপির সিনিয়র অনেক নেতাই যখন খালেদা জিয়াকে মাইনাস করার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত তখন রক্ত চক্ষুকে উপেক্ষা করে তিনি বিএনপির ঝাণ্ডাকে একাই তুলে ধরেছিলেন। সে সময় যদি খোন্দকার দেলোয়ার চীনের মহা প্রাচীরের ন্যায় শক্ত বাধা না হয়ে দাঁড়াতেন, তাহলে এ দেশের গণতন্ত্র ও রাজনীতির ইতিহাস অন্যদিকে মোড় নিতে পারতো বলে অনেকেরই ধারণা।
খোন্দকার দেলোয়ার হোসেনের ষষ্ঠ মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে বুধবার (১৫ মার্চ) দেওয়া এক বাণীতে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, খোন্দকার দেলোয়ার হোসেন একজন দৃঢ়চেতা, আদর্শনিষ্ঠ রাজনীতিবিদ হিসেবে দেশের মানুষের মনে শ্রদ্ধার আসনে অধিষ্ঠ থাকবেন। দৃঢ়তা, অটুট মনোবল এবং ব্যক্তিত্বে তিনি ছিলেন ঈর্ষণীয় উচ্চতায়।
ফখরুল বলেন, ১/১১-তে দেশের এক চরম রাজনৈতিক সংকটকালে বিএনপি মহাসচিবের দায়িত্ব কাঁধে নিয়ে খোন্দকার দেলোয়ার হোসেন দলের বিরুদ্ধে চক্রান্ত রুখে দিতে যোগ্য নেতৃত্ব দিয়েছিলেন। ভাষা আন্দোলন থেকে শুরু করে স্বাধিকার, স্বাধীনতা, গণতন্ত্র ও জনগণের মুক্তির সকল সংগ্রামে তিনি রেখেছেন অসামান্য অবদান। ব্যক্তিগতজীবনে তিনি চার ছেলে ও দুই মেয়ের জনক।
খোন্দকার দেলোয়ার হোসেনের ষষ্ঠ মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে ২ দিনের কর্মসূচি হাতে নিয়েছে বিএনপি। বৃহস্পতিবার বাদ জোহর মানিকগঞ্জের ঘিওরের পাচুরিয়া গ্রামে স্মরণ সভা ও দোয়া মাহফিলের আয়োজন করা হয়েছে। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। এর আগে খোন্দকার দেলোয়ার হোসেনের কবর জিয়ারত করবেন তিনি।
আগামী ১৮ মার্চ রাজধানীর সেগুনবাগিচায় কচিকাঁচার মেলা মিলনায়তনে আলোচনা সভা করবে বিএনপি। এতে দলের মহাসচিব, স্থায়ী কমিটির সদস্য, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা, ভাইস চেয়ারম্যান, যুগ্ম মহাসচিবসহ বিভিন্ন পর্যায়ের নেতারা অংশে নেবেন।
বাংলাদেশ সময়: ০০৪৭ ঘণ্টা, মার্চ ১৬, ২০১৭
এজেড/এমজেএফ