ঢাকা, সোমবার, ১৮ ভাদ্র ১৪৩১, ০২ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ২৭ সফর ১৪৪৬

বিএনপি

বিএনপির ‘সহায়ক সরকার’ নিয়ে বিদেশিদের আগ্রহ আছে

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩৫৫ ঘণ্টা, মে ৯, ২০১৭
বিএনপির ‘সহায়ক সরকার’ নিয়ে বিদেশিদের আগ্রহ আছে ড. আসাদুজ্জামান রিপন। ছবি: দেলোয়ার হোসেন বাদল

ড. আসাদুজ্জামান রিপন। ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি। বিএনপির সাবেক আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক। বর্তমানে বিএনপির বিশেষ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করছেন। দলের বিদেশনীতির সঙ্গে তিনি যুক্ত। বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার দেওয়া বিশেষ অ্যাসাইনমেন্টে মাঝে-মধ্যেই বিভিন্ন দেশের দূতাবাস ও হাইকমিশনে যেতে হয় তাকে। কূটনীতিকদের সঙ্গে খালেদা জিয়ার বৈঠকেও মাঝে মধ্যে ডাক পড়ে তার।

সম্প্রতি তার নিউ ইস্কাটনের অফিসে বাংলানিউজের সঙ্গে একান্ত সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছেন, বিএনপির নির্বাচনকালীন ‘সহায়ক সরকার’ নিয়ে বিদেশিদের ভীষণ আগ্রহ আছে। তারা জানতে চায় কী আছে বিএনপির ‘সহায়ক সরকারে’? সাক্ষাৎকার নিয়েছেন বাংলানিউজের স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট আসাদ জামান

ছবি তুলেছেন সিনিয়র ফটো করেসপন্ডেন্ট দেলোয়ার হোসেন বাদল। সাক্ষাৎকারের চুম্বক অংশ তুলে ধরা হলো।  
 
বাংলানিউজ: আপনি এখন বিএনপির বিশেষ সম্পাদক। দলে আপনার কাজটা কী?
 
ড. আসাদুজ্জামান রিপন: আসলে পদটার দায়িত্ব গঠনতন্ত্রে সেভাবে স্পেসিফিক নেই। যেমন ক্রীড়া সম্পাদক ক্রীড়া বিষয়ক কাজ করবেন। আন্তর্জাতিক সম্পাদক আন্তর্জাতিক সম্পর্ক নিয়ে কাজ করবেন। কিন্তু বিশেষ সম্পাদকের কাজ এভাবে স্পেসিফিক নেই।
 
বাংলানিউজ: দলে যখন একটি পদ সৃষ্টি করা হয়েছে, নিশ্চয়-ই সে পদের কর্মপরিধিও ঠিক করে দেওয়া হয়েছে…
 
ড. আসাদুজ্জামান রিপন:
যেহেতু পদটির নামই বিশেষ সম্পাদক; সম্পাদক বিশেষ দায়িত্বে। অর্থাৎ দলের চেয়ারপারসন বা মহাসচিব অর্পিত বিশেষ দায়িত্বই এ পদের স্পেসিফিক দায়িত্ব।
 
বাংলানিউজ: আগের কমিটিতে আপনি আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক ছিলেন। ওই পদের দায়িত্ব কী ছিল?
 
ড. আসাদুজ্জামান রিপন: আন্তর্জাতিক সম্পর্ক রক্ষা।
 
বাংলানিউজ: কিন্তু বিএনপিতে তো আন্তর্জাতিক সম্পর্ক দেখভালের জন্য আলাদা একটি উইং আছে। ওই উইংয়ের সদস্যরাই তো বিদেশিদের সঙ্গে খালেদা জিয়ার যোগাযোগ, বৈঠক অ্যারেঞ্জসহ সব কিছু করে। আন্তর্জাতিক সম্পাদকরা কি সেখানে যেতে পারেন?
 
ড. আসাদুজ্জামান রিপন: 
অবশ্যই। ড. আসাদুজ্জামান রিপন।  ছবি: দেলোয়ার হোসেন বাদল
 
বাংলানিউজ: এর আগের কমিটিতে আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক হিসেবে কী কাজ করেছেন?
 
ড. আসাদুজ্জামান রিপন: 
পার্টি আমাকে যে কাজে লাগিয়েছে, সে কাজ করেছি।
 
বাংলানিউজ: কী ধরনের কাজ?
 
ড. আসাদুজ্জামান রিপন:  আন্তর্জাতিক সম্পাদক হিসেবে স্পেসিফিক জবটাই করেছি। নট অনলি ফরেনার। প্রবাসে আমাদের তো অনেকগুলো শাখা। …শাখা তো থাকতে পারে না, মানে সহযোগী সংগঠন আছে। এগুলোকে সমন্বয় করা। তাছাড়া আন্তর্জাতিক সম্পাদক পদটা অনেকটা রিসার্স ওরিয়েন্টেড। ধরুন এখন উত্তর কোরিয়া আমেরিকার মধ্যে সংঘাতময় পরিস্থিতি চলছে। এগুলো তো পার্টিতে আলোচনা ও বিশ্লেষণের প্রয়োজন আছে।
 
বাংলানিউজ:
নির্বাচন কমিশনের আরপিওতে আছে, রাজনৈতিক দলগুলোর কোনো শাখা প্রবাসে থাকতে পারবে না। বিভিন্ন দেশে বিএনপির শাখা আছে-এটা কীভাবে সম্ভব?
 
ড. আসাদুজ্জামান রিপন:  বিএনপির গঠনতন্ত্রে আছে-প্রবাসে সমমনারা সংগঠন করতে পারবে। সেই গঠনতন্ত্র নির্বাচন কমিশনে জমা দেওয়া আছে এবং তারা সেটা অনুমোদন করেছে। ড. আসাদুজ্জামান রিপন।  ছবি: দেলোয়ার হোসেন বাদল
 
বাংলানিউজ: কূটনীতিকদের সঙ্গে খালেদা জিয়ার সর্বশেষ কয়েকটি মিটিংয়ে আপনাকে ডাকা হয়েছে। ওইসব মিটিংয়ে বাংলাদেশের নির্বাচন পদ্ধতি নিয়ে কী আলোচনা হয়?
 
ড. আসাদুজ্জামান রিপন:  সব কিছু যে আমাদের বলতে হয়, তা না। তারা নিজেরাই ভালো জানেন। আমাদের চেয়েও তারা বেশি অবহিত। অবহিত হয়েই তারা আসেন। আজকে আপনার বাংলানিউজে কী লেখা হলো, সেটা জানা তাদের কাছে খুব বেশি কঠিন কাজ না। আপনাদের ইংরেজি ভার্সনে গেলেই তারা জানতে পারেন।
 
বাংলানিউজ: তারপরও তারা আসে কেন?
 
ড. আসাদুজ্জামান রিপন:  আমার যেটা মনে হয়েছে, বিএনপিসহ অন্যান্য স্টেকহোল্ডারদের সঙ্গে কথা বলে ওরা কোটেশন যোগাড় করে। ইনফরমেশন হাইওয়েতে কোনো ইনফরমেশন আবডালে রাখার সুযোগ নেই।
 
ইউরোপীয় ইউনিয়নে সম্প্রতিককালে কতগুলো রেজুলেশন হয়েছে। তারা কিন্তু বাংলাদেশে এসে রেজুলেশন করেনি। বিকজ দে আর ভেরিমাচ অ্যাওয়ার অব দ্যা সিসুয়েশন। প্রতিটা ঘটনা তারা জানে। সুতরাং র্যাব নিয়ে, এক্সট্রা জুডিশিয়াল কিলিং নিয়ে তাদের কাছে বিএনপির অভিযোগ করার কোনো প্রয়োজন নেই।
 
বিদেশিদের কাছে নালিশ করা আমাদের দল পছন্দ করে না। ওরা নিজেরাই খুব ভালো করে জানে। এখানে ওদের হাইকমিশন-অ্যাম্বাসি আছে। অ্যাম্বাসেডরদের বোঝানোর জন্য বাঙালি কর্মকর্তারাও থাকেন। তাদের নিজস্ব চ্যানেলেই, দে আর অ্যানাফ টু গ্যাদার ইনফরমেশন। বড় বড় অ্যাম্বাসিতে পলিটিক্যাল উইং থাকে। অনেক অ্যাম্বাসিতে বাংলা সংবাদপত্র রি-ট্রানস্লেট করার জন্য লোক আছে।
 
বাংলানিউজ: পরবর্তী নির্বাচনে যাওয়া না যাওয়া নিয়ে কূটনীতিকরা বিএনপিকে কোনো পরামর্শ দেয় কী?
 
ড. আসাদুজ্জামান রিপন:  এটা তাদের দায়িত্ব বা টার্মস অব রেফারেন্সের মধ্যে পড়ে না। তারা কোনো রাজনৈতিক দলকে নির্বাচনে যাওয়া না যাওয়ার ব্যাপারে পরামর্শ দিতে পারে না। বাইরের লোকদের কাছ থেকে এটা বিএনপি  প্রত্যাশাও করে না।
 
বাংলানিউজ: বাংলাদেশের ব্যাপারে আমেরিকা ও ইন্ডিয়ার আগ্রহ আছে। তারা কী কোনো পরামর্শ বিএনপিকে দেয়?
 
ড. আসাদুজ্জামান রিপন:  তারা কখনই বলবে না, তোমাদের নির্বাচনে যাওয়া উচিত অথবা উচিত না। তারা কোনো সাজেসটিভ কথা বলে না। আমাদের সাথে অনেকক্ষণ কথা বলার প্রেক্ষিতে তারা আমাদের মাইন্ডসেট বোঝার চেষ্টা করে। আমাদের কথা-বার্তা বলার ধরন দেখে তারা বোঝার চেষ্টা করে আমরা নির্বাচনে যাওয়ার ব্যাপারে কতটা পজেটিভ, না যাওয়ার ব্যাপারে কতটা নেগেটিভ।  
 
বাংলানিউজ: তারা কী আপনাদের কাছে কিছু জানতে চায়?
 
ড. আসাদুজ্জামান রিপন: হ্যাঁ, তারা জানতে চায়, আমরা প্রধানমন্ত্রীর অধীনে নির্বাচনে যাব কি না? তখন আমরা বলি, প্রধানমন্ত্রীর অধীনে নির্বাচনে গেলে নির্বাচন নিরপেক্ষ হওয়ার সম্ভাবনা থাকবে না। নির্বাচনে কারচুপি হতে পারে, জালিয়াতি হতে পারে, প্রশাসন নিরপেক্ষ থাকবে না। এ কারণেই আমরা নির্বাচনকালীন ‘সহায়ক সরকার’ চাই। তখন তারা বলে, তোমাদের ‘সহায়ক সরকার’র ফরমেট আমাদের দেখাও।
 
বাংলানিউজ: তার মানে বিএনপির ‘সহায়ক সরকার’ নিয়ে বিদেশিদের আগ্রহ আছে?
 
ড. আসাদুজ্জামান রিপন: ভীষণ আগ্রহ আছে।
                                        
বাংলানিউজ: সময় দেওয়ার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ
 
ড. আসাদুজ্জামান রিপন: আপনাকেও ধন্যবাদ
 
বাংলাদেশ সময়: ১৯৪০ ঘণ্টা, মে ৯, ২০১৭
এজেড/জেডএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।