ঢাকা, শনিবার, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ২৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

বিএনপি

‘ক্ষমতাসীনদের লুটপাটের টাকা সুইস ব্যাংকে’

পলিটিক্যাল ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৬৩৬ ঘণ্টা, জুন ৩০, ২০১৭
‘ক্ষমতাসীনদের লুটপাটের টাকা সুইস ব্যাংকে’

ঢাকা: সরকারকে উদ্দেশ্য করে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী আহমেদ বলেছেন, কারা সুইস ব্যাংকে টাকা পাচার করছে, কারা কানাডায় বেগম পল্লী গড়ে তুলেছে, কারা মালয়েশিয়ায় সেকেন্ডহোম বানাচ্ছে- তার জবাব জনগণ একদিন দেবে।

শুক্রবার (৩০ জুন) সকালে রাজধানীর নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন। সুইজারল্যান্ডের ব্যাংকে বাংলাদেশিদের অর্থ রাখার পরিমাণ বৃদ্ধির খবরসহ সাম্প্রতিক নানা ইস্যুতে বিএনপির অবস্থান জানাতে এ সংবাদ সম্মেলন ডাকা হয়।

রিজভী বলেন, সংবাদমাধ্যমে খবর বেরিয়েছে সুইজারল্যান্ডের ব্যাংকে বাংলাদেশিদের টাকা রাখার পরিমাণ আরও বেড়েছে। এক বছরের ব্যবধানে এক হাজার কোটি টাকার বেশি অর্থ জমা হয়েছে সুইজারল্যান্ডের বিভিন্ন ব্যাংকে। অথচ সারা দুনিয়া থেকে সুইজারল্যান্ডের ব্যাংকে অর্থ জমার পরিমাণ কমেছে। ২০১৬ সালে সুইস ব্যাংকগুলোতে বাংলাদেশ থেকে জমা হওয়া অর্থের পরিমাণ ছিল ৬৬ কোটি ১০ লাখ সুইস ফ্রাঁ, বাংলাদেশি মুদ্রায় বিনিময় করলে এর পরিমাণ দাঁডায় প্রায় ৫ হাজার ৬৮৫ কোটি টাকায়। ২০১৫ সালে সুইস ব্যাংকগুলোতে বাংলাদেশ থেকে জমার পরিমাণ ছিল প্রায় ৫৫ কোটি সুইস ফ্রাঁ, বাংলাদেশি মুদ্রায় যার পরিমাণ ছিল প্রায় ৪ হাজার ৭৩০ কোটি টাকা। সেই হিসাবে আগের বছরের চেয়ে ২০১৬ সালে জমার পরিমাণ প্রায় এক হাজার কোটি টাকা বেড়েছে।

বিএনপির এ মুখপাত্রের দাবি, মূলতঃ দুর্নীতি আর লুটপাটের টাকা সুইস ব্যাংকে পাচার করেছে ক্ষমতাসীনরা। অর্থমন্ত্রী সংসদে যে বলেছেন ব্যাংকিং খাত অত্যন্ত নাজুক। লালবাতি জ্বলার উপক্রম হয়েছে। সে ব্যাংক লুটের টাকাই সুইস ব্যাংকে পাচার হয়েছে বলে সবাই বিশ্বাস করে। টাকা পাচারের পেছনে ক্ষমতাসীন দলের শীর্ষ পর্যায়ের লোকেরা জড়িত। তা না হলে অর্থমন্ত্রী তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে অসহায়ের ভূমিকায় অবতীর্ণ হতেন না।  

রিজভীর অভিযোগ, সরকার জোর করে ক্ষমতাসীন হওয়ার পর দেশকে দুর্নীতির স্বর্গরাজ্যে পরিণত করেছে। লুটপাটের মাধ্যমে তারা বাংলাদেশ ব্যাংকসহ সমস্ত আর্থিকখাত ধ্বংস করে দিয়েছে। বেসিক ব্যাংক কেলেঙ্কারি, হলমার্ক কেলেঙ্কারি, শেয়ারবাজার কেলেঙ্কারি, সোনালী ব্যাংক কেলেঙ্কারি, অগ্রণী ব্যাংক কেলেঙ্কারি, রুপালী ব্যাংক কেলেঙ্কারির মত বড় বড় ঘটনা ঘটেছে। অথচ একটিরও বিচার হয়নি বা সুষ্ঠু তদন্ত হয়নি।  

‘এর পেছনে কারা জড়িত তা সরকার ভাল করেই জানে। জনগণও জানে। কারা সুইস ব্যাংকে টাকা পাচার করছে, কারা কানাডায় বেগম পল্লী গড়ে তুলেছে, কারা মালয়েশিয়ায় সেকেন্ড হোম বানাচ্ছে তার জবাব জনগন একদিন দেবে। আর সেজন্যই তাদের জনগণকে এত ভয়। ’ 

ভোটছাড়া আরেকটি ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে ক্ষমতা আঁকড়ে রাখার পৈশাচিক ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছে অভিযোগ করে রিজভী হুঁশিয়ারি দেন, কোনো ষড়যন্ত্রই সফল হবে না  ভোটারবিহীন সরকারকে জনগণের জবাব দেয়ার সময় হয়ে গেছে। জনগণের হাত পালানো আর সহজ হবে না।

বিএনপির এ নেতা দলের পক্ষ থেকে ঘোষণা দেন, দেশ থেকে লাখ লাখ কোটি টাকা সুইস ব্যাংকসহ বিদেশে পাচারের জন্য দায়ীদের সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে বিচারের মুখোমুখি করা হবে।  

সংবাদ সম্মেলনে রিজভী মহাসড়কে ভোগান্তি ও অব্যবস্থাপনার কারণে দুর্ঘটনার অভিযোগও তোলেন। সেজন্য সমালোচনা করেন সড়ক পরিবহনমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরসহ সরকারের।

বাংলাদেশ সময়: ১২৩১ ঘণ্টা, জুন ৩০, ২০১৭
এইচএ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।