ঢাকা, সোমবার, ১৮ ভাদ্র ১৪৩১, ০২ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ২৭ সফর ১৪৪৬

বিএনপি

ইসিতে বদলি-পদোন্নতিতে রিজভীর মনে প্রশ্ন

পলিটিক্যাল ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৮২০ ঘণ্টা, জুলাই ১২, ২০১৭
ইসিতে বদলি-পদোন্নতিতে রিজভীর মনে প্রশ্ন

নির্বাচন কমিশনের নিয়োগ-পদোন্নতির বিষয়ে সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত খবর উল্লেখ করে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী আহমেদ বলেছেন, কমিশনের নিয়োগ-পদোন্নতি কমিটির যিনি প্রধান, তিনিই এ বিষয়ে কিছু জানেন না। আসন্ন একাদশ জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে এই চাঞ্চল্যকর ঘটনা দেশবাসীর মধ্যে বিস্ময় সৃষ্টি করেছে।

বুধবার (১২ জুলাই) বেলা সাড়ে ১২টার দিকে রাজধানীর নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে তিনি এ কথা বলেন। সাম্প্রতিক ইস্যুগুলোতে বিএনপির অবস্থান জানাতে এ নিয়মিত সংবাদ সম্মেলন ডাকা হয়।


 
রিজভী বলেন, বদলি-পদোন্নতির বিষয়ে ইসির নিয়োগ, পদোন্নতি, প্রশাসনিক সংস্কার ও পুনর্বিন্যাস এবং দক্ষতা উন্নয়ন কমিটির প্রধান নির্বাচন কমিশনার মাহবুব তালুকদার ইসির সচিবকে নোট দিয়েছেন। এই চাঞ্চল্যকর ঘটনা দেশবাসীর মধ্যে বিস্ময় সৃষ্টি করেছে। এতে স্বয়ং ইসি’র অনেক কর্মকর্তাও ক্ষুব্ধ হয়েছেন। এই ঘটনায় কমিশনের শুধু ভাবমূর্তিই নষ্ট হয়নি, বরং নির্বাচন কমিশনের কর্মকাণ্ড বিশাল প্রশ্নের সম্মুখীন হয়েছে।  

বিএনপির এ নেতা সন্দেহ প্রকাশ করে বলেন, ‘আসন্ন একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন এবং ডিসেম্বর থেকে সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার প্রাক্কালে অশুভ উদ্দেশে এই পরিকল্পিত গণবদলি ও পদোন্নতির ঘটনা ঘটানো হয়েছে কি-না সেটি নিয়ে সবার মনে বড় ধরনের প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। নির্বাচনকে সামনে রেখে মাঠ প্রশাসনের এই ব্যাপক পরিবর্তন একটি সুদূরপ্রসারী নীল নকশারই অংশ। আগামী নির্বাচনগুলোকে প্রভাবিত করার জন্যই একটা চক্রান্তজাল বিস্তারের আলামত কি-না সেটাই দেশের ভোটারদের এখন ভাবিয়ে তুলেছে। ’

রিজভী রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণে সরকার ‘একগুঁয়ে নীতি’ নিয়েছে অভিযোগ করে বলেন, কয়লা পুড়িয়ে রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনের বিরুদ্ধে জাগ্রত দেশবাসী প্রতিবাদমুখর। এই প্রকল্প বাস্তবায়ন হলে মানববসতি অনিবার্য ধ্বংসের মুখে পড়বে। প্রাকৃতিক জীববৈচিত্র্য নির্মূল হয়ে যাবে। রামপাল বিদ্যুৎ প্রকল্পের কারণে সুন্দরবনের বিশ্বঐতিহ্য চরম হুমকির মধ্যে পড়বে।  

মঙ্গলবার নারায়ণগঞ্জে রামপাল প্রকল্পের বিরুদ্ধে আন্দোলনকারীদের ওপর ‘প্রশাসন হামলা’ চালিয়েছে অভিযোগ করে এর নিন্দা ও প্রতিবাদও জানান বিএনপির মুখপাত্র।

তিনি সুইস ব্যাংকে অর্থপাচারের বিষয়ে অর্থমন্ত্রীর বক্তব্য তুলে ধরে বলেন, অর্থমন্ত্রী মঙ্গলবার সংসদে বলেছেন, সুইস ব্যাংকে অর্থপাচার হয়নি, লেনদেন হয়েছে। আবার তিনি এও বলেছেন যে, তবে সামান্য কিছু অর্থপাচার হয়েছে। এর মাত্র কয়েকদিন আগে সিলেটের এক সভায় অর্থমন্ত্রী বলেন, সুইস ব্যাংকসহ বিভিন্ন দেশে অর্থপাচারে আমরাও দায়ী। এ ধরনের স্ববিরোধী বক্তব্য আওয়ামী নেতাদের চিরাচরিত টেকনিক।  

রিজভী মনে করেন, ক্ষমতাসীনদের উচ্চ পর্যায়ের অনেক নেতাই এই লাখ লাখ কোটি টাকা পাচারে জড়িত বলে তাদের চাপেই অর্থমন্ত্রীকে আগের কথা থেকে সরে আসতে বাধ্য করা হয়েছে। এটা সর্বজনবিদিত যে, সরকারি ব্যাংকসহ বিভিন্ন আর্থিক প্রতিষ্ঠান লুটপাটে শূন্য হয়ে গেছে। সরকারের লুটপাট আর দুর্নীতিতে তারা এখন টালমাটাল হয়ে গেছেন। সেদিন আর বেশি দূরে নয়-- লুটপাটের জন্য একদিন জনগণের কাছে জবাবদিহি করতেই হবে।  

গত মাসে উত্থাপিত বাজেটকে ‘জাহাজমার্কা বাজেট’ অভিহিত করে বিএনপির এ নেতা বলেন, দেশের অর্থনীতি যে ফাঁকা-ফাঁপা শূন্যগর্ভ, তা দেশ-বিদেশের কারও অজানা নয়। তাই যতই শাক দিয়ে মাছ ঢাকার চেষ্টা করেন না কেন, তাতে লাভ হবে না।

বাংলাদেশ সময়: ১৪১৪ ঘণ্টা, জুলাই ১২, ২০১৭
এইচএ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।