ঢাকা, সোমবার, ১৮ ভাদ্র ১৪৩১, ০২ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ২৭ সফর ১৪৪৬

বিএনপি

সুচির নোবেল সার্টিফিকেট ছিঁড়ে ফেলা উচিৎ: রিজভী

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৯৩৩ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ৯, ২০১৭
সুচির নোবেল সার্টিফিকেট ছিঁড়ে ফেলা উচিৎ: রিজভী বক্তব্য রাখছেন রুহুল কবির রিজভী। ছবি: শোয়েব মিথুন

ঢাকা: অং সান সুচির নোবেল সাটিফিকেট ছিঁড়ে ফেলা উচিৎ বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল করিব রিজভী।

 ‘মিয়ানমারে রোহিঙ্গা মুসলিমদের নারকীয় হত্যা ও নির্যাতনের প্রতিবাদ এবং পালিয়ে আসা নির্যাতিত রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশে আশ্রয় দেয়ার দাবিতে‘ শনিবার (৯ সেপ্টেম্বর) জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনের রাস্তায় বাংলাদেশ সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদ (বিএসপিপি) আয়োজিত মানববন্ধনে তিনি এ কথা বলেন।
 
রুহুল কবির রিজভী বলেন, রাক্ষসীরা, দানবিরা যখন বিপদে থাকে তখন চুপচাপ থাকে।

কিন্তু যখন তাদের হাতে ক্ষমতা আসে তখন তারা তাদের রূপ বদলায়। আজকে অং সান সুচির রুপ বদলাতে দেখছি। সুচি এখন বলছে, উগ্রপন্থি বাঙালিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
 
রিজভী বলেন, আক্ষেপের বিষয়, শান্তির জন্য, গণতন্ত্রের জন্য যিনি নোবেল পুরস্কার পেলেন, আজকে তার নিরাপত্তাবাহিনী কি নির্মম নৃসংসতা চালাচ্ছে। শিশুকে ফাঁসি দিচ্ছে। নারী শিশুর হাত কেটে, গলা কেটে উৎসব করছে। গ্রামের পর গ্রাম পর্যায়ক্রমে পুড়িয়ে দিচ্ছে। নিরীহ যুবকদের বাঁশের খাঁচার মধ্যে ঢুকিয়ে পুড়িয়ে দিচ্ছে। ক্ষুধার্ত, আহত, গুলিবিদ্ধ রোহিঙ্গারা নাফ নদীর তীরে বাংলাদেশের দিকে তাকিয়ে বাঁচার আকুতি জানাচ্ছে।
 
তিনি বলেন, শান্তিতে নোবেল পুরস্কার পাওয়া সুচির জীবনী লেখকও বিস্মিত হয়েছেন। তিনি বলেছেন, সুচির বক্তব্য আমাকে হতবাক করেছে। তিনি মিয়ানমার সেনাবাহিনীর পকেটে ঢুকে গেছেন, ক্ষমতার লোভে।
 
রিজভী বলেন, আমরা তাকে সাহসী নেতৃত্ব হিসেবে জানি। তিনি গণতন্ত্রের জন্য তার দেশে লড়াই করেছেন। আর এই গণতন্ত্রের নমুনা? শতাব্দীর পর শতাব্দী রোহিঙ্গারা যেখানে বাস করছে, তাদেরকে তিনি নির্যাতন করছেন এবং তার সেনাবাহিনী বলছে ‘বেঙ্গলি উগ্রবাদিদের’ বিরুদ্ধে অভিযান চলছে।
 
মিয়ানমার থেকে চাল আমদানির উদ্যোগের সমলোচনা করে রিজভী বলেন,খাদ্যমন্ত্রী মিয়ানমারে চাল আনতে যাচ্ছেন। কিন্তু থাইল্যান্ডে কি চাল উদ্বৃত্ত নয়? ভিয়েতনামে চাল উদ্বৃত্ত নয়? কম্বোডিয়ায় চাল উদ্বৃত্ত নয়? অপনি যাচ্ছেন মিয়ানমারের কাছে।
 
রিজভী বলেন, ‘ওদের একটি চরিত্র আছে, আওয়ামী লীগার। আর এ চরিত্রটি হলো নিজেরা নিজের দেশের মানুষকে রক্তাক্ত করবেন, ধুকিয়ে ধুকিয়ে মারবেন, খুন করবেন, গুম করবেন, অপহরণ করবেন, গুপ্তহত্যা করবেন। কিন্তু অন্য কেউ যদি তাদের ওপর আঘাত করে, কোন শক্তিশালী দেশ, তাহলে তারা নতজানু’।
 
রোহিঙ্গা ইস্যুতে সরকারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তৎপরতা নেই বলে মন্তব্য করে রিজভী বলেন, পররাষ্ট্রমন্ত্রী কি করছেন? কোন উত্তর নেই। আজকে তুরস্ক, ইন্দোনেশিয়া, মালয়েশিয়া, মালদ্বীপ বাণিজ্য সম্পর্ক ছিন্ন করেছে তাদের (মিয়ানমার) সঙ্গে। আর আপনার দেশে যারা আসছে তাদের আশ্রয়ের কথা নেই। কোন বক্তব্য নেই, বরং কটূক্তি করছেন, ‘আমরা কি তাদের সঙ্গে যুদ্ধ করবো’। পররাষ্ট্রমন্ত্রী তো নিথর, নীরব, না যাচ্ছেন চীনে, না যাচ্ছেন ভারতে। আপনাদের পরমবন্ধু মিয়ানমারে গিয়ে সমর্থন দিয়েছেন। কারণ গুজরাটের ঘটনা আর মিয়ানমারের ঘটনা তো একই ধরনের।
 
পেশাজীবি পরিষদ নেতা ডা. অধ্যাপক এ জেড এম জাহিদ হোসেনের পরিচালনায় মানববন্ধনে আরো বক্তব্য রাখেন, আমার দেশ পত্রিকার ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক এবং বাংলাদেশ সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদের আহবায়ক মাহমুদুর রহমান, বিএনপিপন্থি সাংবাদিক নেতা শওকত মাহমুদ, সৈয়দ আবদাল আহমদ, অধ্যাপক আব্দুল কুদ্দুস প্রমুখ।
 
বাংলাদেশ সময়: ১৫১৫ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ৯, ২০১৭
এমএফআই/জেডএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।