সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ৮ ফেব্রুয়ারি জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় রায় ঘোষণা করা হবে। এ নিয়ে বিএনপির ভিতরে-বাইরে উৎকণ্ঠা বিরাজ করছে।
আর এ বিষয়টি সামনে রেখেই শনিবার (২৮ জানুয়ারি) বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া দলের সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরাম জাতীয় স্থায়ী কমিটির বৈঠক ডেকেছেন।
দলীয় সূত্র বলছে, এই বৈঠকে মামলার রায় পরবর্তী করণীয় নির্ধারণ হতে পারে। সেক্ষেত্রে দলের নেতা-কর্মীদের হাইকমান্ড থেকে শুরু করে তৃণমূল পর্যন্ত কিভাবে শঙ্কা মুক্ত রাখা যায় সেসব বিষয়েও আলোচনা করবেন দলের নীতি-নির্ধারকেরা।
এছাড়া দলের শীর্ষ নেতারা বিচ্ছিন্নভাবে রাজধানীতে বৈঠক করেছেন বলেও জানায় সূত্র।
নয়াপল্টনের কেন্দ্রীয় কার্যালয় সূত্র বলছে, রায়ে যদি কোনো অশুভ কিছু থাকে তাহলে সঙ্গে সঙ্গে বিক্ষোভ কর্মসূচির ডাক দেওয়া হবে। এছাড়া দলীয় অন্যান্য কর্মসূচি এলে তা যথাযথভাবে পালন করা হবে।
আরও পড়ুন>>
** বাগাড়ম্বর চক্রব্যূহে বিএনপি, মামলার ঘেরাটোপে খালেদা
জানা যায়, বিএনপি এই মুহূর্তে আগামী নির্বাচনের জন্য নির্দলীয় সরকারের বিষয়টি নিয়েই ব্যস্ত ছিল। কিন্তু হঠাৎ বিএনপি চেয়ারপারসনের বিরুদ্ধে দুদকের করা মামলার রায়ের দিন ধার্য হওয়ায় সবার নজর ঘুরে গেছে এ দিকে।
এ বিষয়ে সম্প্রতি বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, আমরা ভেবেছিলাম সরকার খালেদা জিয়াকে মামলার মাধ্যমে কিছুটা চাপে রেখে নির্বাচনের কাছাকাছি নিয়ে যাবে। সেই চিন্তা থেকে বিএনপি নেতারা ‘যথাসময়ে নিরপেক্ষ সরকারের রূপরেখা দেওয়া হবে’ বলে আসছিলেন।
‘নিরপেক্ষ বা সহায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন অনুষ্ঠানের দাবি আদায়ে নেতা-কর্মীদের নির্বাচনের পাশাপাশি আন্দোলনের প্রস্তুতি নিতে বলছিলেন তারা। ’
নেতারা বলছেন, এখন সংলাপের বিষয়টি যেন ফিকে হয়ে এসেছে। বিএনপি নেতাকর্মী থেকে শুরু করে সাধারণ জনগণের মাঝেও একটা প্রশ্ন-ই দেখা দিয়েছে, ‘কি হতে চলেছে ৮ ফেব্রুয়ারি?’
এদিকে মামলার যুক্তিতর্ক উপস্থাপনকালে খালেদা জিয়ার আইনজীবীরা বারবার বলেছেন, এটা কোনো মামলা না। এ অভিযোগের কোনো ভিত্তি নেই।
খালেদা জিয়ার আইনজীবী ও বিএনপির শীর্ষ নেতা ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ বাংলানিউজকে বলেন, ক্ষমতাসীনরা রাজনৈতিক প্রতিহিংসা থেকেই এই মিথ্যা, বানোয়াট ও ভিত্তিহীন এবং অন্তঃসারশূন্য মামলাকে এ পর্যন্ত নিয়ে এসেছে।
‘আমরা আশা করবো আদালত সবকিছু বিবেচনা করে প্রভাবিত না হয়ে একটি সঠিক রায় দেবেন এবং আমাদের নেত্রী সসম্মানে খালাস পাবেন। ’
বিএনপির গুলশানে চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয় সূত্র জানায়, আসন্ন নির্বাচনে অংশ নেওয়া ছাড়াও সহায়ক সরকারের দাবি আদায়ে আন্দোলন নিয়ে দলের চেয়ারপারসনও স্থায়ী কমিটির সদস্য, বুদ্ধিজীবী, ভাইস চেয়ারম্যান ও জোটের শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে একাধিক বৈঠক করেছেন। কিন্তু সেই আলোচনার মোড় এখন ঘুরেছে রায়ের দিকে।
বিএনপির শীর্ষ পর্যায়ের কয়েকজন নেতা বাংলানিউজকে বলেন, মামলায় রায়ে কী হচ্ছে তা নিয়ে শঙ্কা রয়েছে। তবে দলে দুই ধরনের প্রস্তুতিও চলছে। এই মামলায় দলীয় প্রধানকে সাজা দেওয়া হলে প্রথমে আইনি পদক্ষেপ নেওয়া হবে। একই সঙ্গে এটি রাজনৈতিকভাবেও মোকাবেলা করবে দলটি।
সেক্ষেত্রে হরতালসহ কঠোর আন্দোলনেও যেতে পারে বিএনপি। তবে দলের সিদ্ধান্তকে প্রাধান্য দেবেন বলেই জানিয়েছেন নেতারা।
বাংলাদেশ সময়: ১৭৫৬ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৮, ২০১৮
এএম/এমএ