ঢাকা, বুধবার, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ২৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

বিএনপি

খালেদা ছাড়া কোনো নির্বাচন হবে না

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২২০ ঘণ্টা, জুলাই ২০, ২০১৮
খালেদা ছাড়া কোনো নির্বাচন হবে না সমাবেশে বক্তব্য রাখছেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। ছবি: শাকিল আহমেদ

নয়াপল্টন থেকে: বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, খালেদা জিয়ার মুক্তি, সরকারের পদত্যাগ, সংসদ ভেঙে দেওয়া ও সেনাবাহিনী মোতায়েন করে নির্বাচন দিতে হবে। অন্যথায় এদেশের মানুষ কোনো নির্বাচন হতে দেবে না।

শুক্রবার (২০ জুলাই) বিকেলে নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে খালেদা জিয়ার মুক্তি ও সুচিকিৎসার দাবিতে বিএনপি আয়োজিত সমাবেশে তিনি এ কথা বলেন।

মির্জা ফখরুল বলেন, আজকে দেশের অবস্থা অত্যন্ত ভয়াবহ।

অর্থনীতি ধ্বংস হয়ে গেছে। টাকা এমনকি বাংলাদেশ ব্যাংকের সোনা পর্যন্ত লুট করা হয়েছে।

তিনি বলেন, আজ আমাদের সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। সব রাজনৈতিক দল, সংগঠনকে নিজ নিজ অবস্থান থেকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে এ সরকারের বিরুদ্ধে কঠোর আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে। জনগণের দাবি আদায় করতে হবে। অপশাসনকে পরাজিত করতে হবে। জাতিকে মুক্তি দিতে হবে।

আরও বলেন, আমরা বাম মোর্চাকে ধন্যবাদ জানাই। তারা একটি ঐক্য গড়ে তুলেছে। তাদের সবাইকে আহ্বান জানাবো গণতন্ত্রকামী সবাই নিজ নিজ অবস্থান থেকে ঐক্যবদ্ধ হোন। জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠা করুন। দেশকে স্বৈরাচারের হাত থেকে মুক্ত করুন।

ফখরুল বলেন, ২০১৫ এর ৫ জানুয়ারির নির্বাচনের মাধ্যমে দেশের অর্থনীতি, গণতন্ত্র, মানুষের কথা বলার অধিকার ধ্বংস করে দেওয়া হয়েছে। সরকার এ দেশের ব্যাংকগুলো শেষ করে দিয়েছে। এখন বাংলাদেশ ব্যাংকও শেষ। সেখানে রাখা সোনাগুলো না-কি ধাতু হয়ে গেছে।

খালেদা জিয়ার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, যে মানুষটি দেশের মানুষের অধিকার ও গণতন্ত্রের জন্য সংগ্রাম করেছেন তাকে আজ অন্যায়ভাবে কারাগারে আটকে রেখেছে। তিনি এতোটাই অসুস্থ যে তার আত্মীয়রা দেখা করতে গেলে তিনি নিচে আসতে পারেন না। অথচ সরকারের মন্ত্রীরা বলছেন, আমরা খালেদা জিয়ার অসুস্থতা নিয়ে রাজনীতি করছি। রাজনীতিতো করছেন আপনারা। কারণ খালেদা জিয়াকে আপনারা ভয় পান, সেজন্য একটি সম্পূর্ণ মিথ্যা মামলায় তাকে কারাগারে আটকে রেখেছেন। যে মামলায় তার কোনো সম্পৃক্ততা নেই সে মামলায় তাকে অন্যায়ভাবে সাজা দিয়েছেন। কারণ একটাই, রাজনীতি।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, আগে বিএনপি ও বিরোধী নেতাকর্মীদের গুম করা হতো। এখন নতুন নাটক শুরু হয়েছে, মাদকের নামে নিরপরাধ মানুষকে বিনা বিচারে পাখির মতো গুলি করে হত্যা করা হচ্ছে। সরকার আজ দেশে একটা ভয়াবহ ত্রাসের রাজত্ব শুরু করেছে। এ দেশে আজ প্রতিটি মানুষ অনিরাপদ। তাদের কখন কোথায় মৃত্যু হবে কেউ জানে না।

কোটা নিয়ে বিএনপির এ নেতা বলেন, যখন আন্দোলন তুঙ্গে তখন প্রধানমন্ত্রী রেগে সংসদে বললেন, কোনো কোটা থাকবে না। আর এখন কি করছেন, যারা আন্দোলনের সঙ্গে জড়িত তাদের গুম-রিমান্ডে নিয়ে নির্যাতন করা হচ্ছে। ছাত্রলীগের ভূমিকা পাকিস্তান আমলের ইয়াহিয়া খানের ছাত্র সংগঠনের মতো। আজ দেশে কেউ নিরাপদ নয়। কেউ স্বাধীনভাবে কথা বলতে পারে না।

দেশের মানুষ পরিবর্তন চায়। আমাদের এমপি-মন্ত্রী বানানোর জন্য নয়। আমরা আন্দোলন করছি কথা বলার অধিকার ফিরে পেতে, ভোটের অধিকার ফিরে পেতে, জনগণের গণতান্ত্রিক অধিকার ফিরে পেতে। কিন্তু এটি সরকার দেবে না। কারণ তারা জানে যদি সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ ভোট হয় তাহলে আওয়ামী লীগ ২০টি আসনও পাবে না। তাই এ সরকারের হাত থেকে দেশকে রক্ষা করতে হবে। আন্দোলন, আন্দোলন আর আন্দোলনের মাধ্যমে এদের হাত থেকে দেশকে রক্ষা করতে হবে।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, এই সরকার খালেদা জিয়া, তারেক রহমান এমনকি এই দেশের জনগণকে বাইরে রেখে আর একটি প্রহসনের নির্বাচন করতে চায়। সেজন্য একটি মিথ্যা মামলায় কারাবন্দি করে রেখেছে বিএনপি চেয়ারপারসনকে।

তিনি বলেন, খালেদা জিয়া ছাড়া এদেশের জনগণ আর কোনো নির্বাচন হতে দেবে না। জনগণ আর বসে থাকবে না।

মির্জা ফখরুলের সভাপতিত্বে সমাবেশে অন্যদের মধ্যে আরও বক্তব্য দেন ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, মির্জা আব্বাস,  ড. আব্দুল মঈন খান, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, ভাইস চেয়ারম্যান ডা. এজেড এম জাহিদ হোসেন, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আমান উল্লাহ আমান, জয়নুল আবদিন ফারুক, আবুল খায়ের ভূঁইয়া, যুগ্ম মহাসচিব মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, ঢাকা দক্ষিণ বিএনপির সেক্রেটারি কাজী আবুল বাশার প্রমুখ।

বাংলাদেশ সময়: ১৮১৮ ঘণ্টা, জুলাই ২০, ২০১৮
এমএইচ/টিএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।