ঢাকা, বুধবার, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ২৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

বিএনপি

সোজা রাস্তায় আসুন, সরকারকে ফখরুল

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮৪৫ ঘণ্টা, অক্টোবর ২০, ২০১৮
সোজা রাস্তায় আসুন, সরকারকে ফখরুল সমাবেশে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। ছবি: শাকিল আহমেদ

ঢাকা: সরকারকে সোজা রাস্তায় আসার আহ্বান জানিয়ে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, দেশনেত্রী খালেদা জিয়াকে মুক্তি দিন। তার সঙ্গে আলাপ করুন। বিরোধী দলের সঙ্গে আলাপ করুন। সুষ্ঠু নির্বাচন কিভাবে হবে, সেটার পথ বের করুন। এছাড়া অন্য কোনো বিকল্প পথ নেই। দেশের মানুষের কল্যাণ আর শান্তিতে সমৃদ্ধ গণতান্ত্রিক বাংলাদেশের জন্যে আলোচনায় বসে সমস্যার সমাধান করুন। অন্যথায় এর সব দায়দায়িত্ব আপনাদের বহন করতে হবে।

শনিবার (২০ অক্টোবর) দুপুরে সেগুনবাগিচায় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি (ডিআরইউ) ভবনের স্বাধীনতা হলে জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টি (জাগপা) আয়োজিত সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের দাবিগুলো উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল বলেন, আমরা পরিষ্কার বলেছি, খালেদা জিয়াকে মুক্তি দিতে হবে।

সকল নেতাকর্মীকে মুক্তি দিতে হবে। সকল মামলা প্রত্যাহার করতে হবে। নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন দিতে হবে। সংসদ থাকলে নির্বাচন সুষ্ঠু হবে না। সেজন্য সংসদ বাতিল করতে হবে।

তিনি বলেন, এখন সবচেয়ে বড় বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠন করা। এই কমিশন নিজেরাই বিভক্ত হয়ে পড়েছে। কমিশনের যে সংকট সৃষ্টি হয়েছে, এটা রাষ্ট্রেরও সংকট। তাদের দিয়ে আইন কানুন তৈরি করে ২০১৪ সালের মতো নির্বাচন করে নেওয়া এবং ক্ষমতায় চলে যাওয়া, এটা কখনও হতে পারে না।

‘নির্বাচন কমিশনও সেই দায়িত্ব পালন করতে পারে না। তারা যদি সেটা করে তাহলে তারা সংবিধানের বিরুদ্ধে কাজ করবে। জনগণের কাছে যাওয়ার যে শপথ তারা নিয়েছে, সেই শপথের বাইরে চলে যাবে। সেটা নিঃসন্দেহে একটা রাষ্ট্রদ্রোহী অপরাধ হবে। আমরা প্রথম থেকেই বলে আসছি, এই নির্বাচন কমিশন যোগ্য নয়। এরা নির্বাচন করতে পারবে না। ’
  
ফখরুল বলেন, এদেশের মানুষকে বোকা ভাববেন না। মানুষকে সব সময় নিরব ভাববেন না। তাদের যে রাজনীতিতে অনিহা, সেটাও ভাববেন না। এদেশের মানুষ বার বার তাদের নিজেদের প্রয়োজনে রাস্তায় নেমে এসেছে এবং স্বৈরাচারকে পরাজিত করেছে।

তারা যথেষ্ট সহনশীলতার পরিচয় দিয়েছেন দাবি করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, একটি মাত্র কারণ, আমরা গণতন্ত্রে বিশ্বাস করি। আমরা বিশ্বাস করি যে একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের মধ্য দিয়ে ক্ষমতার পরিবর্তন হোক। মানুষ পরিবর্তন চায়। গণতন্ত্রের মাকে জেলে আটকে রেখে নির্বাচন করবেন, সেটা হবে এক তরফা। সেটা জনগণ মেনে নেবে না।

কাউকে বিভ্রান্তির মধ্যে না যাওয়ার আহ্বান জানিয়ে মহাসচিব বলেন, গোটা দেশের মানুষ আজকে ঐক্যবদ্ধ, তারা এই সরকারের পরিবর্তন চায়। সেটা নিঃসন্দেহে একটা নির্বাচনের মাধ্যমেই চায়। সেই নির্বাচনটা অবশ্যই সকলের কাছে গ্রহণযোগ্য, অংশগ্রহণমূলক এবং নিরপেক্ষ হতে হবে।

তিনি আরও বলেন, জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট ২৩ তারিখে সিলেটে জনসভা করতে চেয়েছিল। কিন্তু তারা বলছে, নাশকতা হতে পারে। সুতরাং অনুমতি দেওয়া যাবে না। আবার দেখা যাচ্ছে, সেখানে চরমোনাইর পীর সাহেব জনসভা করছেন। আজকে হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ সাহেব রাস্তাঘাট বন্ধ করে সরকারি টাকায় গাড়িঘোড়া নিয়ে এসে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সভা করছেন। এখানে কোনো নাশকতা হচ্ছে না। আমরা করলেই নাশকতার গন্ধ পায়।

‘ডা. জাফরুল্লাহর মতো মানুষ না-কি রাষ্ট্রদ্রোহীতা করছেন। তার বিরুদ্ধে জমির মামলা হয়ে গেছে। কারণ একটাই তিনি সরকারের বিরুদ্ধে কথা বলছেন । এ বিষয়গুলো মানুষ বোঝে। মানুষকে বোকা ভাবার কোনো কারণ নেই। ’

জাগপার সহ সভাপতি ব্যারিস্টার তাসমিয়া প্রধানের সভাপতিত্বে সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আমান উল্লাহ আমান, এনপিপির চেয়ারম্যান ড. ফরিদুজ্জামান ফরহাদ, জাগপার সহ সভাপতি মাস্টার এমএ মান্নান, জাগপার মহাসচিব খন্দকার লুৎফর রহমান, যুগ্ম মহাসচিব আসাদুজ্জামান আসাদ প্রমুখ।
 
বাংলাদেশ সময়: ১৪৪০ ঘণ্টা, অক্টোবর ২০, ২০১৮
এমএইচ/টিএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।