ঢাকা, মঙ্গলবার, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

বিএনপি

সমস্যা বিএনপির নয়, জাতির: মির্জা ফখরুল

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯০০ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২, ২০১৯
সমস্যা বিএনপির নয়, জাতির: মির্জা ফখরুল সহিংসতা ও নারী: বর্তমান প্রেক্ষাপট শীর্ষক আলোচনা সভায় মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর | ছবি: শাকিল আহমেদ

ঢাকা: দেশ ও জাতিকে বাঁচানোর আহ্বান জানিয়ে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, সমস্যা আজকে জাতির, সমস্যা বিএনপির নয়। আজকে দেশ ধংস হয়ে যাচ্ছে, জাতি ধংস হয়ে যাচ্ছে। সমস্ত অধিকার ধংস হয়ে যাচ্ছে, আর আপনারা বলছেন—বিএনপির সমস্যা। বিএনপির কোনো সমস্যা নাই।

শনিবার (২ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবের তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলরুমে ‘আওয়াজ’ নামে এক সংগঠন আয়োজিত ‘সহিংসতা ও নারী: বর্তমান প্রেক্ষাপট’ শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন ফখরুল।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, যে দেশে জনগণের কোনো নিরাপত্তা নেই, যে দেশে সংবিধানসম্মত একটি নির্বাচন করতে গিয়ে রাষ্ট্রযন্ত্রকে ব্যবহার করে দখল করে নেওয়া হয়, সেখানে নারী নির্যাতনের মতো বিষয়গুলোর বিচার পাওয়া যাবে এটা মনে করার কোনো কারণ নেই।

তিনি বলেন, আমরা সবাই জানি গত দশ বছর ধরে বাংলাদেশে একটি দলের শাসন চলছে। তারা ছলে বলে কৌশলে ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য রাষ্ট্রকে পুরোপুরিভাবে ধংস করে দেওয়ার উপক্রম করেছে। গত নির্বাচনে দেখলাম অত্যন্ত সচেতনভাবে তাদের ক্ষমতায় নেওয়ার জন্য রাষ্ট্রের সকল প্রতিষ্ঠানকে ব্যবহার করেছে। এর চেয়ে ভয়ঙ্কর ব্যাপার আর কিছু হতে পারে না।

মির্জা ফখরুল বলেন, আজকে সংসদ চলছে, এই সংসদ কার কথা বলবে? এই সংসদ কি নারীদের ওপর যে নির্যাতন হচ্ছে সে বিষয়ে কথা বলবে? বলবে না, কারণ হচ্ছে তাদের লোকেরাই এই কাজগুলো করছে। তাদের এই সংসদ বসানোর নৈতিক কোনো বৈধতা নেই। কারণ তারা নির্বাচিত নয়। নির্বাচনের নামে গোটা জাতির প্রতি একটি নিষ্ঠুর প্রহসন হয়েছে।

তিনি বলেন, আজকে পত্র-পত্রিকা, টেলিভিশনের টকশোগুলোতে তথাকথিত বুদ্ধিজীবীরা বিএনপি আর ঐক্যফ্রন্টের দোষত্রুটি খুঁজে বেড়ান। অথচ আওয়ামী লীগ যে ইচ্ছাকৃতভাবে রাষ্ট্রকে ধংস করে দিলো, সংবিধানকে লঙ্ঘন করলো সে বিষয়গুলো বলার সাহস তারা পান না।

মির্জা ফখরুল আরো বলেন, একটা ফ্যাসিবাদ যখন চলে তার সর্বপ্রথম কাজ একটা ভয়ের সৃষ্টি করা, ত্রাস সৃষ্টি করা, জনগণের মধ্যে একটা ভীতি ছড়িয়ে দেওয়া। এই ভীতিতে বাস-রেস্টুরেন্টে কেউ কথা বলতে চান না। তাদের সফলতা এই জায়গায়, তারা একটি ভয়ভীতি ছড়িয়ে দিয়েছে। ফলে এখন আর কেউ কথাই বলতে চায় না।

ফখরুল বলেন, আজকে ইকোনোমিস্টের মতো পত্রিকা ক্যাপশন করছে, গণতন্ত্রের মৃত্যু হয়েছে। অর্থাৎ গোটা পৃথিবীর মিডিয়া জানে যে, বাংলাদেশে গণতন্ত্রের মৃত্যু হয়েছে।

খালেদা জিয়াকে একটি নির্জন কারাগারে আটকে রাখা হয়েছে অভিযোগ করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, এটা কি তার প্রাপ্য? তিনি জামিন পেয়েছেন কিন্তু তাকে তা দেওয়া হচ্ছে না। এখন পর্যন্ত আমাদের দলের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে ৯৮ হাজার মামলায় ২৭ লাখ আসামি করা হয়েছে।
 
তিনি বলেন, আজকে সাধারণ মানুষকে সঙ্গে নিয়ে এই অন্যায়ের প্রতিবাদ করতে হবে। ন্যায়কে প্রতিষ্ঠিত করতে হবে। আপনারা ভয় পাবেন না, সারাদেশের মানুষ আপনাদের সঙ্গে আছে। আওয়ামী লীগ জনগণের কাছ থেকে চিরদিনের জন্য চলে গেছে। সুতরাং এখন সাহস নিয়ে লড়াই করতে হবে।

বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান সেলিমা রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য প্রফেসর সাহিদা রফিক। অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, প্রফেসর ড. দিলারা চৌধুরী, প্রফেসর ড. তাজমেরী ইসলাম, বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক বিলকিস জাহান শিরিন, মহিলাদলের সভাপতি আফরোজা আব্বাস, বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য আবু নাসের মোহাম্মদ রহমাতুল্লাহ, বিলকিস ইসলাম প্রমুখ।

বাংলাদেশ সময়: ১৩৫৪ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ০২, ২০১৯
এমএইচ/এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।