শুক্রবার (১২ জুন) বিকেলে উত্তরার নিজ বাসা থেকে ভার্চ্যুয়াল সংবাদ সম্মেলনে বাজেটের আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়ায় দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এ দাবি করেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, এই বাজেট জনবান্ধব হয়নি।
মির্জা ফখরুল বলেন, উন্নয়ন খাতে বরাদ্দ ধরা হয়েছে দুই লাখ পাঁচ হাজার কোটি টাকা। অথচ করোনা সংকট মোকাবিলায় মাত্র ১০ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ রাখার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। উন্নয়ন খাত থেকে এক লাখ কোটি টাকা করোনা সংকট মোকাবিলায় দেওয়া যেত। কারণ, উন্নয়ন খাতে শুধু লুটপাট হয়। অর্থমন্ত্রী বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে ২৬ হাজার ৭৫৮ কোটি টাকা বরাদ্দের প্রস্তাব করেছেন। বিদ্যুৎ খাতে ৮ হাজার কোটি টাকা ভর্তুকির প্রস্তাব করা হয়েছে।
তিনি বলেন, পানিসম্পদ মন্ত্রণালয় ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা খাতে বরাদ্দ কমিয়ে দেওয়া হয়েছে। অথচ এখনো আম্পানের ধকল চলছে। উপকূলীয় বাঁধগুলো মেরামত হয়নি। লাখ লাখ মানুষ জলাবদ্ধ রয়েছে। কৃষকদের উৎপাদনের উপকরণ যেমন– বীজ, সার ইত্যাদির মূল্য হ্রাসের তেমন কিছুই বলা হয়নি বরঞ্চ রাসায়নিক সারের ক্ষেত্রে গত বছরের মূল্যই বহাল রাখা হয়েছে। কৃষকদের উৎপাদিত পণ্যের ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত করাসহ কৃষিখাতকে যথাযথ গুরুত্বের সঙ্গে মূল্যায়ন করা হয়নি। ক্ষুদ্র মাঝারি ও কুটির শিল্পে প্রায় আড়াই কোটি মানুষ সম্পৃক্ত। এ খাতও যথাযথ গুরুত্ব পায়নি।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, এমনিতেই ব্যাংকে আমানত কমে যাচ্ছে। অর্থমন্ত্রী প্রস্তাব করেছেন, ব্যাংকে ১০ লাখ টাকার উপরে রাখলেই ৩ হাজার টাকা কর দিতে হবে। এক কোটি টাকার উপরে থাকলে ১৫ হাজার টাকা ট্যাক্স দিতে হবে। এতে আমানত ক্ষতিগ্রস্ত হবে। কর্মসংস্থান কারিগরি শিক্ষা খাতে আরও গুরুত্ব দেওয়া দরকার ছিল। শস্য বীমার কথা দীর্ঘদিন থেকে বলা হচ্ছে। এ বাজেটে অন্তত বলা উচিত ছিল তারা এ ব্যাপারে কী করবেন।
তিনি বলেন, হাতে তৈরি খাবার, গুঁড়ো দুধ, অনলাইন কেনাকাটা, মোবাইল ও ইন্টারনেট সেবা খরচ বাড়ানোর প্রস্তাব করা হয়েছে। মোবাইল ফোনের মাধ্যমে কেউ যদি ১০০ টাকার সেবা নিতে চান তাহলে ৭৫ টাকার সেবা নিতে পারবেন। ২৫ টাকা যাবে সরকারের পকেটে। মোবাইল সেবার ওপর কর প্রায় প্রতিবছরই বাড়ছে। করোনা সংকটকালে অবরোধ অবস্থায় আমরা দেখছি এসব সেবা কত প্রয়োজনীয়। এ সময় অনলাইন বেচাকেনা এবং মোবাইল ও ইন্টারনেট সেবার ওপর সম্পূরক শুল্ক আরও ৫ শতাংশ বাড়ানো সঠিক হবে না। আমরা অনলাইন কেনাকাটা ও মোবাইল/ইন্টারনেট সেবার বর্তমান ব্যয় বহাল রাখার আহ্বান জানাচ্ছি।
তিনি আরও বলেন, বাজেটে স্বর্ণ আমদানিতে ভ্যাট অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। এতে স্বর্ণের দাম কমবে। স্বর্ণের দাম হ্রাসের এ প্রস্তাবে জুয়েলারি দোকানের লবি এবং বিত্তবানরাই লাভবান হবে। সাধারণ মানুষ এবং মধ্যবিত্তদের মধ্যে যারা সংকটকালে স্বর্ণালঙ্কার বিক্রি করে দিতে বাধ্য হবেন তারা ক্ষতিগ্রস্ত হবেন।
তিনি বলেন, ৩০ শে জুনের মধ্যে গ্যাস ও বিদ্যুতের বিল পরিশোধ না করলে সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হবে বলে বিজ্ঞপ্তি জারি হয়েছে। এই সংকটকালে এই নিষ্ঠুর সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসার আহ্বান জানাচ্ছি।
বাংলাদেশ সময়: ১৭২০ ঘণ্টা, জুন ১২, ২০২০
এমএইচ/এইচএডি/