ঢাকা, শুক্রবার, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

বিএনপি

মন্ত্রীরা কি কুম্ভকর্ণের মতো ঘুমিয়ে থাকেন, প্রশ্ন রিজভীর

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪৪৯ ঘণ্টা, জুন ২৩, ২০২০
মন্ত্রীরা কি কুম্ভকর্ণের মতো ঘুমিয়ে থাকেন, প্রশ্ন রিজভীর

ঢাকা: বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, যখনই আমরা জড়িতদের গ্রেফতার ও শাস্তি দাবি করি তখন কাদের সাহেব তথ্য-প্রমাণ চান। এ ধরনের সন্ত্রাসী ঘটনার সময় কি সরকারের মন্ত্রীরা কুম্ভকর্ণের মতো ঘুমিয়ে থাকেন? 

দেশের বিভিন্নস্থানে বিএনপির ত্রাণ বিতরণের সময় হামলা-মামলা-গ্রেফতারের ঘটনা ঘটছে দাবি করে মঙ্গলবার (২৩ জুন) দুপুরে নয়াপল্টনের দলীয় কার্যালয় থেকে ভিডিও কনফারেন্সে এসব কথা বলেন রিজভী।

বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব বলেন, দুর্যোগকালীন সময়ে দেশে যখন দুর্ভিক্ষ ধেয়ে আসছে তখন ক্ষুধার্ত ও নিরন্ন মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছে বিএনপি।

কিন্তু আমাদের ত্রাণ বিতরণে বাধা দেওয়া হচ্ছে। হামলা করছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা। মামলা- গ্রেফতারও করা হচ্ছে।

তিনি বলেন, সাতক্ষীরা জেলায় ঘূর্ণিঝড় আম্ফানের তাণ্ডবে ক্ষতিগ্রস্ত শ্যামনগর উপজেলার অসহায়, গরীব ও ছিন্নমূল মানুষদের মাঝে ২১ জুন বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের উদ্যোগে ত্রাণ সামগ্রী বিতরণের সময় আকস্মিকভাবে আওয়ামী লীগের স্থানীয় সংসদ সদস্য জগলুল হায়দারের নির্দেশে তার সন্ত্রাসী পুত্র উপজেলা যুবলীগের যুগ্ম-আহ্বায়ক রাজিব হায়দারের নেতৃত্বে ছাত্রলীগ-যুবলীগের ক্যাডাররা দফায় দফায় বর্বরোচিত হামলা চালায়।  

অভিযোগ করে তিনি বলেন, ছাত্রলীগ-যুবলীগের সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা একটি মাইক্রোবাসসহ কমপক্ষে ১৫-২০টি মোটর সাইকেল ভাংচুর এবং বেদম পিটিয়ে বহু নেতাকর্মীকে আহত করে। এমপি পুত্রের নেতৃত্বে ন্যক্কারজনক এই সহিংস হামলার ঘটনাটি সকল পত্র-পত্রিকা, টেলিভিশন, অনলাইন নিউজ পোর্টাল, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপকভাবে প্রচারিত হয়। প্রতিটি মানুষ ক্ষোভ ও ধিক্কার জানায়।  

রিজভী বলেন, হামলাকারী ছাত্রলীগ-যুবলীগের সশস্ত্র সন্ত্রাসীদের ছবিও প্রকাশিত হয়েছে। অথচ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের সোমবার (২২ জুন) বলেছেন, কোথায় কে বাধা দিয়েছে আপনারা স্পষ্ট করুন, তথ্য-প্রমাণ দিন। অভিযোগ সত্য হলে আমরা অবশ্যই ব্যবস্থা নেব। মানবিক কাজে বাধা প্রদান আওয়ামী লীগের নীতি নয়।

বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব বলেন, দেশের প্রতিটি মানুষ গণমাধ্যমে ও টেলিভিশনের ফুটেজে দেখেছেন ছাত্রলীগ-যুবলীগের সশস্ত্র সন্ত্রাসী গ্রুপ কিভাবে ত্রাণ বিতরণের বহরে তাণ্ডব চালিয়েছে। তথ্য প্রমাণ প্রতিটি মিডিয়ায় আছে। কিন্তু কে বাধা দিয়েছে তা কাদের সাহেবরা জানেনও না, দেখেনও নি। সন্ত্রাসী লেলিয়ে দিয়ে দিবানিদ্রা গেলে জানবেন কিভাবে, দেখবেন কিভাবে!

রুহুল কবির রিজভী বলেন, তথ্য-প্রমাণ জানার জন্য সরকারের গোয়েন্দা সংস্থা আছে। বিভিন্ন এজেন্সি আছে। স্থানীয় প্রশাসন আছে। জনগণের টাকায় তারা বেতন পাচ্ছেন। কাজেই উক্ত অপকর্মগুলোর তথ্য তো কাদের সাহেবদেরই সর্বপ্রথম জানার কথা। কিন্তু সরকারি বাসভবনে বসে ভিডিও বার্তায় তথ্য-প্রমাণ চাওয়াটা হাস্যকর। আজকে দিনের সূর্য পূর্ব দিকে উঠেছে, এটার প্রমাণ দরকার আছে?

তিনি বলেন, এর আগে নারায়ণগঞ্জের মহিলা কাউন্সিলর ও মহিলা দল নেত্রী আয়শা আক্তার দীনা এবং ফেনীতে কৃষক দল নেতা আলমগীর চৌধুরী এবং ইউনিয়ন বিএনপি নেতা মুক্তিযোদ্ধা আবুল হোসেন কমান্ডার নেতাকর্মীদের সঙ্গে নিয়ে দলের পক্ষ থেকে দুস্থদের মাঝে ত্রাণ বিতরণ করতে গেলে স্থানীয় আওয়ামী সন্ত্রাসীরা তাদের ওপর হামলা চালায়। একইসঙ্গে ত্রাণ সামগ্রী লুট করে নিয়ে যায়।

বিএনপির এই নেতা বলেন, এর আগে রাজশাহীর তানোর ছাত্রদল নেতা আবদুল মালেককে ত্রাণ বিতরণের সময় গ্রেফতার করে ৬ মাসের কারাদণ্ড দেওয়া হয়। এই ভয়াবহ দুর্দিনে সরকার যখন বেছে বেছে আওয়ামী লীগের লোকদেরকে ত্রাণ দিচ্ছে তখন বিএনপি প্রকৃত সাধারণ দুস্থ ও অসহায় মানুষের কাছে পৌঁছে দিচ্ছে ত্রাণ সামগ্রী। আর তাতে হামলা ও লুটপাট চালাচ্ছে ক্ষমতাসীন দলের সন্ত্রাসীরা।

বাংলাদেশ সময়: ১৪৫০ জুন ২৩, ২০২০
এমএইচ/জেআইএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।