মঙ্গলবার (৭ জুলাই) দুপুরে খুলনা জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হেলাল হোসেনের কাছে স্মারকলিপি দেওয়ার মধ্যদিয়ে এ সুপারিশ পেশ করেছে বিএনপি।
এতে বলা হয়েছে-করোনা ভাইরাস পরিস্থিতিতে দেশব্যাপী লকডাউন ঘোষণার পর খুলনা শহরে ২৫ হাজার নিম্নআয়ের মানুষকে খাদ্যসামগ্রী সহায়তা দিয়েছে খুলনা মহানগর বিএনপি।
খুলনা শহরে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ায় এবং চিকিৎসা সেবা অপ্রতুল হওয়ায় খুলনা মহানগর বিএনপির ‘কল সেন্টার’ প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে মানবিক চিকিৎসা সহায়তা কার্যক্রম শুরু করেছে। করোনা আক্রান্ত রোগী ও তার পরিবারকে ডাক্তারি পরামর্শ, বিনামূল্যে অক্সিজেন সেবা, প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রী ও ওষুধ সরবরাহ, অ্যাম্বুলেন্স সহায়তা দেওয়া এ কর্মসূচির মধ্যেই থাকছে। একইসঙ্গে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মৃতের দাফন ও সৎকারের ব্যাপারে প্রস্তুতির প্রক্রিয়া চলছে।
আরও বলা হয়েছে- খুলনা শহরে দ্রুত সংক্রমণের মাধ্যমে আক্রান্ত রোগীর চিকিৎসাসেবা খুবই ভঙ্গুর। পিসিআর ল্যাবে পরীক্ষায় ঘোষিত রোগীর সংখ্যা আড়াই হাজার। উপসর্গ নিয়ে ল্যাবে পরীক্ষার অপেক্ষায় হাজার হাজার মানুষের চিকিৎসার জন্য হাসপাতাল একটি, বেড ৮৫টি, ৯৫ শতাংশ রোগী বাড়িতে অবস্থান করে নিজেদের মতো করে চিকিৎসা নিচ্ছেন। জটিল রোগীর জন্য মাত্র ১০ টি আইসিইউ। হাসপাতালে কার্যকর চিকিৎসা হচ্ছে না। পিসিআর ল্যাবে পরীক্ষা রিপোর্ট পেতে ৭ থেকে ১০ দিন সময় লাগছে। কিটের অভাবে পরীক্ষা কার্যক্রম বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। পরীক্ষার অপেক্ষায় ১৫ থেকে ১৬শ’ রোগী। ফলোআপ টেস্ট বন্ধ হওয়ায় পরিস্থিতি আরও জটিল হচ্ছে। করোনা হাসপাতালের (খুলনা ডায়াবেটিকস হাসপাতাল) অভ্যন্তরীণ ব্যবস্থাপনা খুবই খারাপ।
এসব বিবেচনায় করোনা রোগীর চিকিৎসায় দ্রুত কার্যকারী পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য সরকারের কাছে জোর দাবি জানিয়েছে খুলনা মহানগর বিএনপি। এ জন্য সরকারকে ১০টি প্রস্তাব দিয়েছে দলটি।
প্রস্তাবনার মধ্যে রয়েছে- অল্পসময়ে অধিক পরীক্ষার জন্য আরও কমপক্ষে দু’টি পিসিআর মেশিন ও ল্যাব স্থাপন একইসঙ্গে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের ল্যাব চালু, আরও একাধিক হাসপাতাল ও আইসোলেশন সেন্টার প্রতিষ্ঠা, পিসিআর এ পরীক্ষার জন্য পর্যাপ্ত কিট সরবরাহ, হাসপাতালগুলোতে প্রয়োজনীয় অক্সিজেন সরবরাহ ব্যবস্থা নিশ্চিতকরণ, পিসিআর ল্যাবে পরীক্ষার রির্পোট দ্রুত দেওয়ার ব্যবস্থা করা, ফলোআপ টেস্ট পুনরায় চালু করা, পর্যাপ্ত আইসিইউ স্থাপন করা, করোনা হাসপাতালে অব্যবস্থাপনা দূর করা, জেলা করোনা ম্যানেজমেন্ট কমিটি সমন্বয়হীনতা দূর করা, গরিব মানুষের জন্য বিনামূল্যে করোনা টেস্টের ব্যবস্থা করা।
স্মারকলিপিতে সই করেন মহানগর বিএনপির সভাপতি সাবেক সংসদ সদস্য নজরুল ইসলাম মঞ্জু ও সাধারণ সম্পাদক সাবেক মেয়র মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান মনি।
স্বাস্থ্যবিধি মেনে স্মারকলিপি দেওয়ার সময় উপস্থিত ছিলেন- বিএনপি নেতা জাফরউল্লাহ খান সাচ্চু, স ম আব্দুর রহমান, অধ্যক্ষ তারিকুল ইসলাম, সিরাজুল হক নান্নু, আসাদুজ্জামান মুরাদ, মেহেদী হাসান দিপু, অ্যাডভোকেট গোলাম মওলা প্রমুখ। স্মারকলিপির একটি অনুলিপি জেলা সিভিল সার্জন ডা. মো. সুজাত আহমেদকেও দেওয়া হয়।
বাংলাদেশ সময়: ১৭০০ ঘণ্টা, জুলাই ৭, ২০২০
এমআরএম/ওএইচ/