ঢাকা: বিশ্বের মতো মূল্যস্ফীতি নিয়ে সরকারও শঙ্কিত বলে জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। তিনি বলেন, সারা বিশ্বে মূল্যস্ফীতি হচ্ছে।
শুক্রবার (২ জুন) বিকেলে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে ২০২৩-২৪ অর্থবছরের বাজেটোত্তর সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন, কৃষিমন্ত্রী আব্দুর রাজ্জাক, শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি, পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান, স্থানীয় সরকারমন্ত্রী তাজুল ইসলাম, শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন, বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি, মন্ত্রিপরিষদ সচিব মো. মাহবুব হোসেন, প্রধানমন্ত্রীর অর্থ উপদেষ্টা ড. মশিউর রহমান, এনবিআর চেয়ারম্যান রহমাতুল মুনিম, অর্থসচিব ফাতিমা ইয়াসমিন, বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আবদুর রউফ তালুকদার প্রমুখ।
মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে কী ব্যবস্থা নিয়েছেন, জানতে চাইলে অর্থমন্ত্রী বলেন, মূল্যস্ফীতি নিয়ে আমরা নিজেরাও শঙ্কিত। সারা বিশ্বই এখন মূল্যস্ফীতিতে আছে। আমরা খাবার তো বন্ধ করতে পারব না। মানুষকে খাবার না দিয়ে রাখা যাবে না। আমরা একটা ফ্লেক্সিবল ওয়েতে এগিয়ে যাচ্ছি। যেসব কারণে এটি হয়, সেগুলো নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করছি, প্রয়োজন অনুযায়ী আমরা ছাড় দিচ্ছি।
তিনি বলেন, মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে যে সমস্ত কারণে হয় সেগুলো নিয়ন্ত্রণ করব। আমরা যদি ট্যাক্স না নিই বা কোনো কিছুতে যদি ছাড় দিতে হয়, তাহলে সরকার ছাড় দিচ্ছে এবং দিয়ে যাবে। এ ছাড়া সামাজিক নিরাপত্তা খাতে সরকার সহায়তা দিয়ে যাচ্ছে। ফলে খাদ্যের ঘাটতি হবে না। পাশাপাশি যেসব পণ্য নিত্যপ্রয়োজনীয়, সেখানে নিজেরা নিয়ন্ত্রণ করে সরকারকে সাহায্য করছি। এ ভাবে আমরা মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ করছি।
মন্ত্রী বলেন, আমরা যখন ক্ষমতায় আসি তখন ১২ শতাংশ মূল্যস্ফীতি ছিল। পরবর্তী ১০ বছরে সেটি ৬ শতাংশে নেমে আসে। সারা বিশ্বে মূল্যস্ফীতি হচ্ছে। সে তুলনায় আমরা ভালো আছি। এই সময় খুবই খারাপ। আমরা তা মোকাবেলা করছি। আশপাশের দেশগুলো থেকে আমরা অনেক ভালো অবস্থানে আছি। যে রকম লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছি, আশা করছি তা পূরণ করতে পারব।
ঘাটতি পূরণে টাকা ছাপানো হবে কি না, আর যদি হয়, তাহলে বাজেট প্রস্তাবে স্ববিরোধিতা দেখা দেবে কি না- এমন প্রশ্নের জবাবে গভর্নর বলেন, বাজেটের ঘাটতি পূরণে টাকা ছাপানোর যে প্রশ্নটি এসেছে। সেখানে বলতে চাই কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে প্রায় ২০ বিলিয়ন ডলার বাজারে ছাড়া হয়েছে। এ টাকাটা আবার ব্যাংকে ঢুকে গেছে। যদি টাকাটা বাজারে থাকতো তাহলে সরকারের বাজার থেকে এক লাখ টাকার লোন নেওয়া কোনো বিষয় ছিল না। যেহেতু বাজারে তারল্য সংকট হয়েছে। সেজন্য এই লোন যেকোনো বন্ড থেকে নিতে হচ্ছে। সরকার যে লোন নিচ্ছে তারচেয়ে অনেক বেশি টাকা বাজার থেকে উঠে আসছে। সুতরাং সরকার লোন নিলে সেখান থেকে মূল্যস্ফীতি হওয়ার কোনো সম্ভাবনা নেই।
২০২৩-২৪ অর্থবছরের জন্য বাজেটের আকার চূড়ান্ত করা হয়েছে ৭ লাখ ৬১ হাজার ৭৮৫ কোটি টাকা। বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি ধরা হয়েছে ২ লাখ ৭৭ হাজার ৫৮২ কোটি টাকা।
নতুন বাজেটে সামগ্রিক ঘাটতি (অনুদান ব্যতীত) ধরা হচ্ছে ২ লাখ ৬১ হাজার ৭৮৫ কোটি টাকা। আর চলতি অর্থবছরের সংশোধিত বাজেটে সামগ্রিক ঘাটতি ধরা হয় ২ লাখ ২৭ হাজার ৫০৭ টাকা।
মোট রাজস্ব আয়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৫ লাখ কোটি টাকা, যা গত অর্থবছর ছিল ৪ লাখ ৩৩ হাজার কোটি টাকা। বাজেটে জিডিপির প্রবৃদ্ধি ধরা হয়েছে ৭ দশমিক ৫ শতাংশ। মূল্যস্ফীতি ধরা হয়েছে ৬ শতাংশ।
প্রস্তাবিত বাজেট ২৬ জুন অনুমোদন হবে। আর ১ জুলাই থেকে নতুন অর্থবছর শুরু হবে।
বাংলাদেশ সময়: ২০২৬ ঘণ্টা, জুন ২, ২০২৩
জিসিজি/আরএইচ