ঢাকা: তামাকজাত আমদানিকৃত অথবা উৎপাদিত পণ্যের ওপর মূল্যভিত্তিক এক শতাংশ হারে স্বাস্থ্য উন্নয়ন সারচার্জ আরোপের প্রস্তাব করেছেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত।
বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদে ২০১৪-১৫ অর্থবছরের বাজেট বক্তৃতায় মন্ত্রী জানান, তামাকের কারণে বাংলাদেশে প্রতিবছর প্রায় ৬০ হাজার মানুষ প্রাণ হারায়, ৪ লাখ মানুষ পঙ্গুত্বের শিকার হয়।
‘তামাকজনিত রোগব্যাধির কারণে চিকিৎসাব্যয়ও বিপুল’ বলে জানান মন্ত্রী। এক শতাংশ হারে স্বাস্থ্য উন্নয়ন সারচার্জ তামাকজনিত রোগ নিরাময়, চিকিৎসা ও পুনর্বাসনখাতে ব্যয় করা যেতে পারে।
বাংলাদেশ বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থার এফসিটিসি স্বাক্ষরকারী দেশ হিসেবে তামাক সেবন কমিয়ে আনার গুরু দায়িত্ব রয়েছে।
অর্থমন্ত্রী জানান, বর্তমানে সিগারেটের ৪টি স্তরে দাম নির্ধারণ হয় এবং এই স্তর অনুযায়ী আমরাও করভার নির্ধারণ করি।
আমি প্রস্তাব করছি, উচ্চমান এবং তার পরবর্তীমানের সিগারেটের ওপর করভার হবে সমান অর্থাৎ ৭৬ শতাংশ। মধ্যম মানের করভার হবে ৭৫ শতাংশ এবং নিম্নমানের করভার হবে ৫৮ শতাংশ। অবশ্য, ১ শতাংশ স্বাস্থ্য উন্নয়ন সারচার্জ এর ওপরে আরোপিত হবে।
১০ শলাকার বিদ্যমান মূল্যস্তরের চারটি স্ল্যাবের করভার ৫৪ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ৫৮ শতাংশ, ৭১ থেকে বাড়িয়ে ৭৫ শতাংশ, ৭৪ থেকে বাড়িয়ে ৭৬ শতাংশ করার প্রস্তাব করেন অর্থমন্ত্রী।
বিড়ির বিষয়ে অর্থমন্ত্রী বলেন, দেশীয় শিল্পের শ্রমিক-স্বার্থ বিবেচনায় নিয়ে বিড়িখাতের শুল্ক হারে বিগত ৫ অর্থবছরে কোনো পরিবর্তন করা হয়নি।
বর্তমানে ফিল্টারিবিহীন ২৫ শলাকার বিড়ির করসহ মূল্য ৫.৩৫৪ টাকা এবং ফিল্টারযুক্ত ২০ শলাকার বিড়ির করসহ মূল্য ৬.০৫২ টাকা।
সহজলভ্যতার কারণে ব্যাপক সংখ্যক ভোক্তা ধূমপানের জন্য বিড়ির ওপর আসক্ত হয়ে স্বাস্থ্যঝুঁকির মধ্যে রয়েছেন। বর্তমানে বিড়ি নিম্নমানের সিগারেটে পরিণত হয়েছে এবং বিড়ির কারখানাও ব্যাপকভাবে কমে গেছে।
বিড়ি সেবন কমাতে এবারের বাজেটে সকল করসহ ফিল্টারবিহীন ২৫ শলাকার প্যাকেটের মূল্য ৬.১৪ টাকা এবং ফিল্টারযুক্ত ২০ শলাকার প্রতি প্যাকেটের মূল্য ৬.৯৪ টাকা নির্ধারণের প্রস্তাব করেন মন্ত্রী। বিড়ির ওপর কর বাড়ানো হয়েছে ২৬.৬৫ ভাগ। অন্যদিকে কমদামি সিগারেটের ওপর কর বৃদ্ধি করা হয়েছে ১৮.১৮ ভাগ।
একই সঙ্গে জর্দা ও গুলের বিদ্যমান সম্পূরক শুল্ক ৩০ শতাংশের স্থলে ৬০ শতাংশে ধার্য করার প্রস্তাব করেন অর্থমন্ত্রী।
বাংলাদেশ সময়: ১৭৪৩ ঘণ্টা, জুন ০৫, ২০১৪