ঢাকা: ২০১৪-১৫ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে বেসরকারি আবাসন খাতের জন্য কোনো বিশেষ বরাদ্দ রাখা হয়নি। তবে প্রস্তাবিত বাজেটে এক হাজার ৯৫২ কোটি টাকা আবাসন খাতের জন্য বরাদ্দা রাখা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত নতুন অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট পেশ করেন। এটি দেশের ৪৩তম এবং বর্তমান সরকারের চলতি মেয়াদের প্রথম বাজেট। আর অর্থমন্ত্রী হিসেবে আবুল মাল আবদুল মুহিতের অষ্টম বাজেট।
বাজেট বক্তব্যে অর্থমন্ত্রী আবাসন খাতের বিষয়ে বলেন, ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যার প্রেক্ষাপটে পরিকল্পিত নগরায়ণ আমাদের জন্য একটি বড় সমস্যা। বিষয়টির গুরুত্ব অনুধাবন করে গত মেয়াদে ঢাকা, খুলনা ও চট্টগ্রাম মহানগরীর ডিটেইল্ড এরিয়া প্ল্যান (ড্যাপ) এবং সিলেট, চট্টগ্রাম ও বরিশাল বিভাগীয় শহরের স্ট্রাকচারাল প্ল্যান প্রণয়ন করেছিলাম।
এবার ঢাকার ডিটেইল্ড এরিয়া প্ল্যান (ড্যাপ) পরিমার্জন করে আরো বাস্তবসম্মত ও সময়োপযোগী করা হবে। এ লক্ষ্যে ড্যাপ (২০১৬-২০৩৫) প্রণয়নের কাজ শুরু করা হয়েছে।
তিনি বলেন, নগরায়ণ সমস্যা সমাধানের প্রধান উপায় হবে দেশের গ্রামীণ এলাকায় উন্নত বা ঘনবসতিপূর্ণ গ্রাম কেন্দ্র করে পল্লী জনবসতি কেন্দ্র গড়ে তোলা। পাশাপাশি ন্যাশনাল হাইওয়ের সঙ্গে সংযুক্ত করে টাউনশিপ নির্মাণ করা।
মন্ত্রী বাজেট বক্তব্যে আরও বলেন, আমরা সবার জন্য আবাসন নিশ্চিত করতে চাই। এ লক্ষ্যে রাজধানী ঢাকাসহ অন্যান্য বিভাগীয় শহর ও বিভিন্ন জেলা, উপজেলা পর্যায়ে মোট ৪৪ হাজার ৩১৬টি প্লট উন্নয়ন ও ৩২ হাজার ২৫৮টি ফ্ল্যাট নির্মাণের কাজ হাতে নেওয়া হয়েছে।
মুহিত আশা প্রকাশ করে বলেন, অদূর ভবিষ্যতে সারাদেশের জন্য একটি সমন্বিত জাতীয় নগরায়ণ নতিমালা প্রণয়ন করা সম্ভব হবে। পাশাপাশি পরিকল্পিত নগরায়ণ ও নাগরিক সুবিধা বৃদ্ধির জন্য আমরা যানজট নিরসন, নগরের সৌন্দর্য বৃদ্ধি ও উন্নত পয়ঃনিষ্কাশন ব্যবস্থা তৈরি করা হবে।
এদিকে সম্প্রতি ২০১৪-১৫ অর্থবছরের বাজেটে একাধিকবার বিভিন্ন অনুষ্ঠানের মাধ্যমে আবাসন খাতের জন্য বিশেষ বরাদ্দ রাখার দাবি জানান আবাসন ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন রিয়েল এস্টেট অ্যান্ড হাউজিং অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (রিহ্যাব)।
রিহ্যাব নেতারা খাতে অপ্রদর্শিত অর্থ বিনিয়োগের সুযোগ দেওয়াসহ সাধারণ ক্রেতাদের ক্ষেত্রে প্রথম ফ্ল্যাট ক্রয়ে আয়ের উৎস প্রদর্শন না করে ক্রয়ের সুযোগ দেওয়ার দাবি জানান।
চলতি অর্থবছরে (২০১৩-১৪) সরকার আবাসন খাতে অপ্রদর্শিত অর্থ বিনিয়োগের সুযোগ দিয়েছে। তবে এ সময়টি সহিংসতা ও রাজনৈতিক অস্থিরতায় ভরা ছিল। ফলে এ খাতে অপ্রদর্শিত অর্থ বিনিয়োগের সুযোগ দেওয়া হলেও এর কোনো সুফল পাওয়া যায়নি বলে দাবি করেন ব্যবসায়ীরা।
তাদের দাবি, গত বছরের শেষদিকে রাজনৈতিক অস্থিরতায় আবাসন খাত গভীর সঙ্কটে পড়ে। তাই অপ্রদর্শিত অর্থ বিনিয়োগের সুযোগ দিলে এ খাত ঘুরে দাঁড়াবে, অন্যদিকে অর্থপাচার রোধ হবে।
বাংলাদেশ সময়: ১৮১৮ ঘণ্টা, জুন ০৫, ২০১৪