ঢাকা: ২০১৪-১৫ অর্থবছরের বাজেটেও ‘ঋণ করে ঘি খাওয়ার’ প্রবণতা বিদ্যমান বলে মন্তব্য করেছে বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি।
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ২০১৪-২০১৫ সালের প্রস্তাবিত বাজেট সম্পর্কে প্রাথমিক প্রতিক্রিয়ায় দলের সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক এ মন্তব্য করেন।
বাংলাদেশের বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক বলেন, এবারের বাজেটেও ’ঋণ করে ঘি খাওয়ার’ প্রবণতা বিদ্যমান। বাজেটের বিপুল অংকের টাকার যোগান দিতে দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতিতে নাকাল সংখ্যাগরিষ্ঠ সাধারণ মানুষ মারাত্মক চাপের মধ্যে পড়বে। মূল্য সংযোজন কর-মুসকের পরিমাণ ও আওতা বৃদ্ধির আসল দায়ভারও বহন করতে হবে সাধারণ মানুষকে।
তিনি বলেন, অর্থমন্ত্রীর প্রস্তাবিত বাজেটে সাধ আর সাধ্যের মধ্যে বিপুল ফারাক। বাজেটের ঘাটতি অর্থের সংস্থান সম্পর্কে অর্থমন্ত্রী বিশ্বাসযোগ্য প্রস্তাবনা হাজির করতে পারেননি। বিশাল অংকের এই বাজেট কিভাবে বাস্তবায়ন হবে বাজেট বক্তৃতায় এই ব্যাপারেও তিনি আস্থা জাগাতে পারেননি। বিশেষ করে বজেটের অর্থ সংকুলানের ব্যাপারে বাজেট প্রস্তাবনায় নানা অস্পষ্টতা ও বিভ্রান্তি বিদ্যমান।
রাজস্ব ব্যয়ের বিশাল বৃদ্ধিকে তিনি ’শ্বেতহস্তী পোষা’ হিসাবে আখ্যায়িত করে সরকার পরিচালনার ব্যয়বৃদ্ধিতে উদ্বেগ প্রকাশ করে এর সমালোচনা করেন।
আড়াই লক্ষ কোটি টাকার বাজেটে ৮৬ হাজার ৩৪৫ কোটি টাকার উন্নয়ন বাজেট বরাদ্দকে তিনি অপ্রতুল হিসাবে আখ্যায়িত করেন এবং ৭.৩% জিডিপির প্রবৃদ্ধির হারকেও উচ্চভিলাষী হিসেবে বর্ণনা করেন।
বাজেট প্রতিক্রিয়ায় তিনি আরও বলেন, নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসের মূল্যবৃদ্ধি রোধ করে সংখ্যাগরিষ্ট জনগণের জীবনযাত্রা সহজ হবে কিনা, জনগণের দুর্ভোগ-দুর্গতি লাঘব হবে কি না- এসব ব্যাপারে বাজেট প্রস্তাবনায় নির্দিষ্টভাবে আশাবাদী হবার কিছু নেই। শিল্প, কৃষিসহ উৎপাদনশীল খাতে বিনিয়োগ বৃদ্ধি, কর্মসংস্থানের সুযোগ সম্প্রসারণ, গণপরিবহনের বিস্তৃতি, বর্ধিত বিনিয়োগের পরিবেশ সৃষ্টি, স্থানীয় সরকারকে শক্তিশালী করা প্রভৃতি বিষয়ে বাজেট প্রস্তাব কার্যকরী কোন আশাবাদ জাগাতে পারেনি।
সাইফুল হক বলেন, ব্যাংকসহ অর্থিক প্রতিষ্ঠানে সীমাহীন দুর্নীতি, বিদেশে টাকা পাচার, কালো টাকা ও অবৈধ সম্পদ উদ্ধারের ব্যাপারে বাজেটে নির্দিষ্ট কোন প্রস্তাব নেই। প্রকৃত উৎপাদক কৃষক যাতে কিনতে না ঠকে, আবার বেচতেও না ঠকে এবং তার জন্যে কৃষি বাজার সংস্কারের ব্যাপারেও বাজেট প্রস্তাবনায় তেমন কিছু নেই। শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও আবাসন খাতে শ্রমজীবী-মেহনতি প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর জন্য উল্লেখযোগ্য প্রয়োজনীয় বরাদ্দ নেই।
বাড়িওয়ালাদেরকে করের আওতায় নিয়ে আসা, আয়করের আওতা বৃদ্ধি, নারী উন্নয়ন, সংস্কৃতি প্রভৃতি খাতে কিছু ইতিবাচক প্রস্তাবনা থাকলেও সামগ্রিকভাবে বাজেটে আয় ও ধনবৈষম্য হ্রাসে কোন প্রস্তাবনা নেই; বরং প্রস্তাবিত বাজেট ধনবৈষম্য আরো প্রকট করে তুলবে।
বাংলাদেশ সময়: ১৯৪০ ঘণ্টা, জুন ০৫, ২০১৪