রোববার (০৬ মে) দুপুরে রাজধানীর সেগুনবাগিচায় জাতীয় রাজস্ব বোর্ডে (এনবিআর) প্রাক-বাজেট আলোচনায় এ প্রস্তাব করেছে।
এনবিআরের চেয়ারম্যান মো. মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়ার সভাপতিত্বে সভায় প্রস্তাব তুলে ধরেন সংগঠনটির প্রতিনিধি মোস্তফা কামাল মহিউদ্দিন।
সংগঠনটির পক্ষ থেকে বলা হয়, দেশীয় কাগজ শিল্পে ৭০ হাজার কোটি টাকার বিনিয়োগ রয়েছে। এতে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে প্রায় ১৫ লাখ লোকের কর্মসংস্থান রয়েছে। যার উপর নির্ভর করে ৬০ লাখ মানুষের জীবিকা। সরকারের ইতিবাচক পদক্ষেপের ফলে দেশীয় চাহিদা মিটিয়ে চীন, ইউরোপসহ বিশ্বের ১৫টি দেশে পেপার রফতানি করছি। কিন্তু কতিপয় অসাধু ব্যবসায়ী বন্ড সুবিধার অপব্যবহার কারণে দেশীয় কাগজ শিল্প শোচনীয় অবস্থায় পরিণত হচ্ছে। তারা প্যাকেজিং পেপারের নামে সাদা কাগজ আমদানি করছে। ডুপ্লেক্স বোর্ড ও মিডিয়া পেপার, হার্ড টিস্যু আমদানি করছে। চোরাচালানের মাধ্যমে শুল্ক ফাঁকি দিচ্ছে। এই অবস্থা থেকে উত্তরণে আসছে বাজেটে কাগজ শিল্পের জন্য প্রয়োজনীয় মৌলিক কেমিক্যালস আমদানি পর্যায়ে শুল্ক কমানো, মূল্য সংযোজন কর মওকুফের পাশাপাশি আমদানিকৃত ফিনিশড পণ্যের ওপর উচ্চহারে শুল্ক আরোপের ৩৬টি প্রস্তাব করছি।
সংগঠনের লিখিত প্রস্তাবনায় বলা হয়, আসছে বাজেটে নিউজপ্রিন্ট কাগজ আমদানির ক্ষেত্রে সকল পর্যায়ে সম্পূরক শুল্ক ২৫ শতাংশ নির্ধারণ করার প্রস্তাব করছি। যা বর্তমানে প্রকাশনা শিল্পের জন্য ৫ শতাংশ এবং অন্যান্য বাণিজ্যিক আমদানির ক্ষেত্রে ২৫ শতাংশ সম্পূরক শুল্ক দিতে হচ্ছে। যুক্তি হিসেবে বলা হয়, দেশে বছরে নিউজপ্রিন্টের চাহিদা রয়েছে ৭০ হাজার মেট্রিক টন। অথচ স্থানীয়ভাবে উৎপাদন হয় ৩ লাখ মেট্রিক টন। অর্থাৎ চাহিদার তুলনার উৎপাদন বেশি রয়েছে। পণ্যগুলো আন্তর্জাতিক মানের। সুতরাং দেশীয় শিল্পের স্বার্থে নিউজপ্রিন্ট কাগজ আমদানির ক্ষেত্রে ২৫ শতাংশ সম্পূরক শুল্ক নির্ধারণের প্রস্তাব করছি।
পাশাপাশি সাদা ছাপা লেখার কাগজ ও কোটেড পেপারের কেমিক্যালস আমদানির ওপর আরোপিত ১৫ শতাংশ ভ্যাট প্রত্যাহার ও সম্পূরক শুল্ক ৫ শতাংশের পরিবর্তে ৩ শতাংশ করাসহ ৩৬টি প্রস্তাব দেওয়া হয়।
বিএলডিপি’র প্রস্তাবনায় বলা হয়, বর্তমানে ১৪ শতাংশ হারে প্লট বা ফ্ল্যাটের রেজিস্ট্রেশন ফি দিতে হয়। ফলে ফ্ল্যাট কিনতে ক্রেতারা নিরুৎসাহিত হন। তাই আসছে বাজেটে রেজিস্টেশন ফি ও কর কমিয়ে ৭ শতাংশ নির্ধারণ করার প্রস্তাব দিয়েছে সংগঠনটি।
এছাড়াও জমি ও ফ্ল্যাট কেনার সময় অপ্রদর্শতি আয় (অর্থাৎ কালো টাকা) বিনিয়োগের সুযোগ রাখার পাশাপাশি কেউ বিনিয়োগ করলে তাকে যেন কোনো প্রশ্ন না করা হয় সেই নিশ্চয়তা দেওয়াসহ মোট ৬টি প্রস্তাব করা হয়। তা না হলে প্রতিবছর মালয়েশিয়া, সিঙ্গাপুরসহ বিভিন্ন দেশে বাংলাদেশের টাকা হবে। এই টাকা পাচার রোধ হবে না।
দুটি সংগঠনের প্রস্তাবের জবাবে এনবিআরের চেয়ারম্যান বলেন, আপনারা (বিপিএমএ) মানসম্মত পণ্য উৎপাদন করেন। আমরা আপনাদের সহযোগিতা করবো। দেশীয় শিল্পকে প্রাধান্য দেবো। বন্ডের অপব্যবহার রোধে আমাদের টিম কাজ করছে। তিনি বলেন, এনবিআর সব সময় দেশীয় শিল্পের স্বার্থে আছে, থাকবে।
বিএলডিপি’র প্রস্তাবনার পরিপ্রেক্ষিতে বলেন, অনান্য বিষয়গুলো দেখে বিবেচনা করা হবে। তবে রেজিস্ট্রেশন ফি কমানো হবে। অপ্রদর্শিত অর্থ জরিমানা দিয়ে জমি কিংবা প্লট কিনতে পারবে। এই সুযোগ আগেও ছিলো। আসছে বাজেটেও থাকবে।
বাংলাদেশ সময়: ২১৪৬ ঘণ্টা, মে ০৬, ২০১৮
এমএফআই/এসএইচ