ফলে নির্বাচনী বছরে একলাখ ৭৩ হাজার কোটি টাকার নতুন বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি (এডিপি) অনুমোদন দিতে যাচ্ছে সরকার। মোট বরাদ্দের মধ্যে আগামী ২০১৮-১৯ অর্থবছরের এডিপিতে অগ্রাধিকার পাবে এসব মেগা প্রকল্প।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ১০টি মেগা প্রকল্পে অগ্রাধিকার দিতে গিয়ে স্থানীয় সরকার, বিদ্যুৎ বিভাগ, পরিবহন, বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি, রেল, সেতু, স্বাস্থ্য, প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষা, পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ে একলাখ ২৮ হাজার ১০০ কোটি টাকা বরাদ্দ থাকবে। যা মোট এডিপির ৭৪ দশমিক শূন্য ৫ শতাংশ।
বৃহস্পতিবার (১০ মে) জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের (এনইসি) বৈঠকে নতুন এই এডিপির অনুমোদন দেওয়া হবে। এতে সভাপতিত্ব করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
সূত্র জানায়, নতুন এডিপির এ আকার প্রস্তাব করেছে অর্থ ও পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়, যা অনুমোদন করতে যাচ্ছে সরকার। এর মধ্যে বৈদেশিক সহায়তা থেকে সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৬০ হাজার কোটি টাকা। বাকি এক লাখ ১৩ হাজার কোটি টাকা জোগান দেওয়া হবে সরকারের (জিওবি) নিজস্ব সম্পদ থেকে।
এ বিষয়ে পরিকল্পনা কমিশনের প্রধান (অতিরিক্ত সচিব) প্রশান্ত কুমার চক্রবর্ত্তী বাংলানিউজকে বলেন, ঐতিহাসিক ৭ মার্চ থেকে নতুন এডিপি ইস্যু জারি হয়। বলা চলে এখান থেকেই এডিপি প্রণয়নের কাজ শুরু। ধীরে ধীরে সবাই মিলে নতুন এডিপির কাজ শেষ পর্যায়ে নিয়ে এসেছি।
‘বৃহস্পতিবার নতুন এডিপি চূড়ান্ত করবেন প্রধানমন্ত্রী। নতুন এডিপির আকার হবে একলাখ ৭৩ হাজার কোটি টাকার। এর মধ্যে ৬০ হাজার কোটি টাকা বৈদেশিক সহায়তা, বাকি অর্থ জিওবি খাত থেকে মেটানো হবে। মেগা প্রকল্পে অগ্রাধিকার দিয়েই নতুন এডিপি চূড়ান্ত হতে যাচ্ছে। ’
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, নির্বাচনী বছরে সংসদ সদস্যদের (এমপি) বিভিন্ন চাহিদা থাকবে। কারণ ভোটের আগে স্থানীয় ভোটারদের বিভিন্ন প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন এমপিরা। ফলে বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগ প্রায় দুই হাজার বরাদ্দবিহীন প্রকল্পের প্রস্তাব করেছে। এসবের মধ্যে এক হাজার বরাদ্দবিহীন প্রকল্পের নাম তালিকার একটা খসড়াও করেছে পরিকল্পনা কমিশন।
খসড়ায় দেখা গেছে, ১০ প্রকল্পেই প্রধান ফোকাস। এগুলো হল—পদ্মা বহুমুখী সেতু নির্মাণ প্রকল্প, পদ্মা রেল সেতু সংযোগ প্রকল্প, চট্টগ্রামের দোহাজারী থেকে রামু হয়ে কক্সবাজার এবং রামু থেকে ঘুমধুম পর্যন্ত রেলপথ নির্মাণ প্রকল্প, ঢাকা মাস র্যাপিড ট্রানজিট ডেভেলপমেন্ট প্রকল্প (এমআরটি), পায়রা বন্দর নির্মাণ প্রকল্প, গভীর সমুদ্র বন্দর নির্মাণ প্রকল্প, মাতারবাড়ী আল্ট্রা সুপার ক্রিটিক্যাল কোল ফায়ার্ড পাওয়ার প্রকল্প, মৈত্রী সুপার থার্মাল পাওয়ার প্রকল্প বা রামপাল বিদ্যুৎ প্রকল্প, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপন প্রকল্প এবং এলএনজি টার্মিনাল নির্মাণ প্রকল্প।
অর্থ ও পরিকল্পনা মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা যায়, পদ্মাসেতুর বাস্তবায়নকে অগ্রাধিকার দিয়ে এবার সেতু বিভাগে ৯ হাজার ১১২ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হবে। অন্যদিকে মেট্রোরেলকে আরও দৃশ্যমান করতে সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগে নতুন এডিপিতে থাকছে ২০ হাজার ৮১৭ কোটি টাকার বরাদ্দ।
স্বপ্নের মেগা প্রকল্প পদ্মাসেতুর রেল সংযোগ। এরই মধ্যে এ বিষয়ে চীনের সঙ্গে চুক্তি হয়েছে। এতে ব্যয় হবে বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ২১ হাজার ৩৬ কোটি টাকা। এ জন্য নতুন এডিপিতে রেলপথ মন্ত্রণালয়ের জন্য বরাদ্দ থাকছে ১১ হাজার ১৫৪ কোটি টাকা।
এদিকে কক্সবাজারের মহেশখালীতে ভাসমান তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) টার্মিনাল নির্মাণের জন্য ২২ হাজার ৮৮৯ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে বিদ্যুৎ বিভাগের জন্য।
নতুন এডিপিতে মোট প্রকল্প সংখ্যা হবে ১ হাজার ৪৫১টি। এর মধ্যে বিনিয়োগ প্রকল্প এক হাজার ২২৭টি।
বাংলাদেশ সময়: ১৪০৮ ঘণ্টা, মে ০৮, ২০১৮
এমআইএস/এমএ