বাজেটের বরাদ্দ বাড়তি কতো টাকা কিংবা দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) কতো শতাংশ, এসবে ভ্রুক্ষেপ নেই সাধারণ জনগণের। অদূর বা দূর ভবিষ্যতে এ বাজেট জাতীয় জীবনে কী প্রভাব ফেলবে এসব নিয়েও ভাবছেন না তারা।
রাজধানীর বসুন্ধরা এলাকার দিনমজুর শাহীন রিকশা চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করেন। বাজেটের কথা জিজ্ঞাসা করতেই যেন আকাশ থেকে পড়লেন। তিনি বলেন, বাজেট নিয়া ভাইবা আমার কি হইব? তয় আমি বুঝি, বাজেটের সময় আইলেই জিনিসপত্রের দাম বাড়ে।
খিলগাঁও এলাকার বাসিন্দা সুমন্ত চক্রবর্তী বেসরকারি চাকরি করেন। বাজেটের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এবারও বাজেটে নিত্য প্রয়োজনীয় অনেক দ্রব্যের দাম বাড়ানোর প্রস্তাব করা হয়েছে। মানুষের নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসগুলোর ওপর দাম বাড়ানো মানে সরকার কি বুঝে না? সাধারণ মানুষ খাবে কি? করবে কি? যাবে কই? বাজেট তৈরির আগে মধ্যবিত্ত ও নিম্নবিত্তদের কথা ভাবা উচিত ছিল।
এইচ এম হুমায়ুন কবির নামে মোহাম্মদপুর এলাকার এক বাসিন্দা বলেন, প্রত্যেকবারই বাজেটের সময় বলা হয়, কিছু পণ্যের দাম বাড়বে আর কিছু পণ্যের দাম কমবে। আসলে কোন পণ্যের দামই কমবে না। সব পণ্যের দাম বাড়বে। লোক দেখানোর জন্য সরকার কিছু পণ্যের দাম কমানোর কথা বলে। কাগজে কলমে হয়তো কিছু পণ্যের দাম কম দেখাবে কিন্তু বাস্তবে তার অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়া যাবেনা।
এদিকে, এবারের বাজেটে সবার জন্য পেনশন ব্যবস্থার প্রস্তাব করা হয়েছে। এ বিষয়ে জাহিদুল ইসলাম নামে এক ব্যাংক কর্মকর্তা বলেন, যদি বাস্তবায়ন হয়, তাহলে উদ্যোগটা ভালো।
প্রবাসী বৈধ পথে অর্থ প্রেরণ উৎসাহিত করতে প্রস্তাবিত বাজেটে দুই শতাংশ হারে প্রণোদনা দেওয়ার কথা বলা হয়েছে। এ বিষয়ে লোকমান শরীফ নামে এক প্রবাসী বাংলদেশি বলেন, এই প্রণোদনাটা আরও বাড়ানো যেতো। প্রবাসীরা আয় করে বাংলাদেশেই পাঠাচ্ছেন। আর তাই তাদের টাকা দেশে পাঠালে সরকার কোনো খরচ না রাখলেও পারতো।
এবারের প্রস্তাবিত বাজেটের আকার পাঁচ লাখ ২৩ হাজার ১৯০ কোটি টাকা, যা মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) ১৮ দশমিক ১ শতাংশ। এবারের বাজেটে পরিচালনসহ অন্যান্য খাতে মোট বরাদ্দ রাখা হয়েছে তিন লাখ ২০ হাজার ৪৬৯ কোটি টাকা। বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচিতে বরাদ্দ রাখা হয়েছে দুই লাখ দুই হাজার ৭২১ কোটি টাকা।
বাংলদেশ সময়: ০৪৫০ ঘণ্টা, জুন ১৪, ২০১৯
পিএম/এসআরএস