শুক্রবার (১৪ জুন) বিকেলে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে ২০১৯-২০ অর্থবছরের বাজেট ঘোষণা পরবর্তী সংবাদ সম্মেলনে এক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী এ কথা জানান।
অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল অসুস্থ থাকা এবার প্রথমবারের মতো কোনো প্রধানমন্ত্রী হিসেবে বাজেটোত্তর সংবাদ সম্মেলন করেন শেখ হাসিনা।
এর আগে বৃহস্পতিবার (১৩ জুন) জাতীয় সংসদে অর্থমন্ত্রীর হয়ে বাজেটের বক্তৃতার একাংশ পড়ে দেন প্রধানমন্ত্রী।
সংবাদ সম্মেলনে কৃষিমন্ত্রী ড. আবদুর রাজ্জাক, পরিকল্পনান্ত্রী এমএ মান্নান, বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি, শিল্পমন্ত্রী নুরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন, অর্থ সচিব আবদুর রউফ তালুকদার, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান মোশারফ হোসেন ভূঁইয়া প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
প্রধানমন্ত্রীর পাশে বসে ছিলেন সাবেক অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতও। শুরুতে প্রধানমন্ত্রী বাজেটের বিভিন্ন দিক এবং সরকারের পরিকল্পনার কথা সাংবাদিকদের সামনে তুলে ধরেন। পরে বাজেট নিয়ে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন তিনি।
শেখ হাসিনা বলেন, দেশের শিল্প ও ব্যবসা খাতকে প্রতিযোগিতা সক্ষম করার লক্ষ্যে অামরা ব্যাংক ঋণের উপর সুদের হার এক অংকের উপর দেখতে চাই না।
‘হোল্ডিং কোম্পানি এবং সাবসিডিয়ারি কোম্পানিসমূহের কার্যক্রম যুগোপযোগী করার লক্ষ্যে ব্যাংক কোম্পানি আইনে প্রয়োজনীয় সংশোধন আনা হবে। ’
প্রশ্নোত্তর পর্বে একজন সাংবাদিক প্রশ্ন করেন- দেশের সার্বিক উন্নয়ন হচ্ছে। কিন্তু খেলাপি ঋণের বিষয়ে তেমন সফলতা নেই। বাজেটে খেলাপি ঋণের বিষয়ে কোনো উদ্যোগ আছে কী?
এমন প্রশ্নের জবাবে সরকার প্রধান বলেন, প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার কোন মালিক কোন ব্যাংকের কত টাকা ঋণ নিয়ে কত টাকা শোধ দেননি বা খেলাপি হয়েছেন, সেটি বের করলে এ প্রশ্নের উত্তর দেওয়া লাগবে না।
‘পত্রিকা বা ইলেকট্রনিক মিডিয়ার মালিকেরা কত টাকা ঋণ নিয়েছেন, সেটির একটি হিসাব নেওয়া হবে এবং তাদের টাকাটা শোধ দিয়ে পত্রিকায় লেখেন, এটি আমার অনুরোধ থাকবে। ’
শেখ হাসিনা বলেন, যারা এখানে পত্রিকায় কাজ করেন, তাদের একটি কথা জিজ্ঞেস করবো, আপনারা কি একটি খবর নেবেন যে আপনাদের পত্রিকার মালিকেরা কে কোন ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়েছেন এবং শোধ দিয়েছেন কি না? আপনারা দয়া করে সব ব্যাংক থেকে এই তথ্যটি বের করেন, যত মিডিয়া এখানে আছেন, যত পত্রিকা...প্রত্যেকেই বলবেন (মালিকদের) যে এটা আমি অনুরোধ করেছি। ’
খেলাপি ঋণ বৃদ্ধির বিষয়ে তিনি বলেন, ‘যেহেতু আমাদের সুদের হার অনেক বেশি। যেহেতু চক্রবৃদ্ধি হারে সুদ হয়। আরেকটি বিষয় রয়ে গেছে, যখন হিসাব দেওয়া হয় তখন চক্রবৃদ্ধি হারে সেটি ধরে হিসাব দেওয়া হয়। এর ফলে খেলাপি ঋণের পরিমাণ অনেক বড় দেখায়। ’
বিদ্যুতের উন্নয়ন প্রসঙ্গে সরকার প্রধান বলেন, বর্তমানে ২১ হাজার ১৬৯ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন হচ্ছে। ফলে ৯৩ শতাংশ জনগোষ্ঠীকে বিদ্যুৎ সুবিধার অাওতায় অানতে সক্ষম হয়েছি। ২০২১ সালে ২৪, ২০৩০ সালে ৪০ ও ২০৪১ সালে ৬০ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনের লক্ষ্য নেওয়া হয়েছে।
ফাইভজি চালুর প্রস্তুতি চলছে জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মাণ সরকারের অন্যতম প্রধান অঙ্গীকার। ইউনিয়ন পর্যায় পর্যন্ত ব্রডব্যান্ড নেটওয়ার্ক সুবিধা সম্প্রসারণ করা হয়েছে। ইতোমধ্যে জেলা এবং বিভাগে ফোরজি নেটওয়ার্কের আওতায় আনা হয়েছে। সরকার দ্রুত সময়ে ফাইভজি চালুর বিষয়ে প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি গ্রহণ করছে।
বাংলাদেশ সময়: ১৯৪৪ ঘণ্টা, জুন ১৪, ২০১৯
এমআইএস/জিসিজি/এইচএ/এমএ