ফরিদপুর: ফরিদপুরে কয়েকদিনের শীতের দাপটে বিপাকে পড়েছেন জেলাটির দরিদ্র, ছিন্নমূল, দিনমজুর ও খেটে খাওয়া স্বল্প আয়ের মানুষ। একই সঙ্গে বিপাকে রয়েছেন শিশু ও বৃদ্ধরাও।
মঙ্গলবার (১৬ জানুয়ারি) ফরিদপুর আবহাওয়া অফিস সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করেছেন ১২ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
এদিকে, কুয়াশায় হেডলাইট জ্বালিয়ে চলছে যানবাহন। তাছাড়া দিন দিন ফরিদপুর জেনারেল হাসপাতালসহ জেলার অন্যান্য উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে শীতজনিত রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। তবে বয়স্ক ও শিশুরা শীতজনিত রোগে বেশি আক্রান্ত হচ্ছেন বলে জানিয়েছেন একাধিক চিকিৎসক।
সন্ধ্যা থেকে সকাল পর্যন্ত কুয়াশার সঙ্গে উত্তরের হিমেল হাওয়া বইছে। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে হালকা সূর্যের মলিন হাসির দেখা মিললেও নেই উত্তাপ। ফলে মেঘাচ্ছন্ন ও কুয়াশায় আচ্ছন্ন হয়ে থাকে চারপাশ।
কনকনে শীতে সবচেয়ে বেশি বিপাকে পড়ছেন খেটে খাওয়া দিনমজুর ও স্বল্প আয়ের মানুষ। শীত ও ঘন কুয়াশার কারণে তারা সময় মতো কাজে যেতে পারছেন না। ফলে অনেককেই বেকার সময় পার করতে দেখা গেছে। একই সঙ্গে শিশু ও বৃদ্ধ-বৃদ্ধারাও বিভিন্ন শীতজনিত রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন। ডায়রিয়ার প্রকোপও কিছুটা বেড়েছে বলে কয়েকটি হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে।
রাস্তাঘাটে তেমন মানুষ নেই। খুব জরুরি কাজকর্ম ছাড়া কেউ ঘর থেকে বের হচ্ছেন না, বেশি দূরত্বে যাচ্ছেন না। এর মধ্যে রিকশা নিয়ে বেরিয়েছেন জমির খাঁ।
তিনি বলেন, ‘খুব শীত আর ঠাণ্ডা বাতাসের সঙ্গে মনে অয় বরফ মিশাইছে। মানুষজন তো ঘরতেই বাইর অয়না। তয় কী করব! পেট কি আর শীত মানে!’।
জেলার সালথায় বোরো ধানের চারা রোপণ করতে গিয়েছিলেন দিনমজুর সোবহান মাতুব্বর। সকাল সকাল বীজতলা থেকে চারা তোলা শুরু করেন সোবহান। কিন্তু তীব্র ঠাণ্ডায় বেশিক্ষণ টিকতে না পেরে একটু পর বাড়ির পথে হাঁটা ধরেন। তার সঙ্গে আলাপকালে তিনি বলেন, ‘এমুন শীত! কামই করতে পারতাছি না। ঠাণ্ডায় আত-পাও (হাত-পা) অবশ অইয়া আইতাছে। ’
ফরিদপুর আবহাওয়া অফিসের আবহাওয়াবিদ জাহাঙ্গীর আলম বাংলানিউজকে বলেন, ফরিদপুরে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ১২ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। গত কয়েকদিন ধরে হিম বায়ু প্রবাহিত হওয়ার কারণে জেলায় তাপমাত্রা ওঠা-নামা করছে।
ফরিদপুর জেলা প্রশাসক (ডিসি) মো. কামরুল আহসান তালুকদার বাংলানিউজকে বলেন, কিছুদিন আগে থেকেই গরীব, অসহায় ও শীতার্ত মানুষদের মধ্যে জেলা প্রশাসন ও উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে শীতবস্ত্র বিতরণ করা হচ্ছে। বিতরণের পর আমাদের সংগ্রহে শীতবস্ত্র কিছুটা কম থাকায় বেসরকারি উদ্যোগেও কিছু শীতবস্ত্র সংগ্রহের চেষ্টা চলছে। নিজেও এক হাজারের মতো শীতবস্ত্র ব্যক্তিগতভাবে বিতরণ করেছি।
বাংলাদেশ সময়: ১৮৩৫ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৬, ২০২৪
এসআরএস