ঢাকা, শনিবার, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ২৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জলবায়ু ও পরিবেশ

পরিবেশ ও পর্যটনে নতুন ধারণা ‘ভলান্ট্যুরিজম’

পরিবেশ-জীববৈচিত্র্য ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১১৬ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২২, ২০১৫
পরিবেশ ও পর্যটনে নতুন ধারণা ‘ভলান্ট্যুরিজম’

ঢাকা: সারাবিশ্বে পর্যটন শিল্প এগোচ্ছে, কিন্তু পর্যটনের বিরূপ প্রভাবের চিহ্ন বয়ে বেড়াচ্ছে প্রকৃতি। আমরা এ শিল্প থেকে যতই লাভবান হওয়ার চেষ্টা করছি, পরিবেশ ততই ধ্বংস হচ্ছে।

দায়িত্বশীল পর্যটন (Responsible Tourism) নিয়ে ইদানীং লেখালেখি হলেও আধুনিক বিশ্ব এর চর্চা শেষ করে নতুন ধারণার দিকে এগোচ্ছে। এই ধারণার নাম ভলান্ট্যুরিজম (Voluntourism)।

পর্যটনের এই ধারণা অনুযায়ী, পর্যটক যখন কোথাও ভ্রমণ করেন তখন ওই গন্তব্য স্থানের চাহিদা অনুযায়ী সমাজসেবামূলক কাজ করে আসেন। যা ওই স্থানের সমাজ, প্রকৃতি ও সংস্কৃতির জন্য সহায়ক ভূমিকা রাখে।

ব্রাজিল বিশ্বকাপে আইভরিকোস্টের কাছে হেরে যাওয়ার পরও জাপানের সমর্থকেরা গ্যালারির আবর্জনা পরিষ্কার করে এসেছিলো। প্রিয় দলের হেরে যাওয়ার হতাশাও তাদের সৎকর্মে বাধা হয়ে দাঁড়ায়নি। এ ঘটনাটিই ভলান্টিয়ার ট্যুরিজম বা ভলান্ট্যুরিজমের উদাহরণ।

বাংলাদেশে বিষয়টি নিয়ে কাজ করছে ট্রিইজম ফাউন্ডেশন নামের একটি অলাভজনক স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন।

জেনে নেওয়া যাক কীভাবে কাজ করে সংগঠনটি:

চলতি বছরের প্রথম দিনে ত্রিশজন ছাত্র নিয়ে কাজ শুরু করেন সংগঠনটির উদ্যোক্তা সাইফুল ইসলাম। গাছ লাগানো এবং স্কুলের বাচ্চাদের পরিবেশ বিষয়ক সচেতনতা তৈরি করাই সংগঠনের প্রধান লক্ষ্য। সংগঠনের অনেকগুলো স্লোগানের মধ্যে একটি হচ্ছে ‘ওয়ান ট্যুরিস্ট, ওয়ান ট্রি’।

একজন পর্যটক অথবা ভ্রমণকারী যতই দায়িত্বশীল হোক, পরিবেশের উপর তার কিছুটা হলেও ক্ষতিকর প্রভাব থাকে। পর্যটকের পক্ষে সে প্রভাব কিছুটা কমিয়ে আনা সম্ভব হলেও পুরোপুরি কমিয়ে আনা অসম্ভব। এই ক্ষতিকর প্রভাবের কারণে পরিবেশের উপর পর্যটকের একটি দায় তৈরি হয়। পর্যটন গন্তব্যে একটি গাছ রোপণ তাকে কিছুটা হলেও দায়মুক্ত করে।

এই লক্ষ্যে বছরের প্রথম দিন রাঙামাটির পুরানপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও রাঙামাটি বিদ্যা নিকেতনের বাচ্চাদের নিয়ে প্রায় ৩শ’টি গাছের চারা রোপণ ও বিতরণ করা হয় সংগঠনের পক্ষ থেকে। উদ্দেশ্য ছিলো গাছ রোপণের সঙ্গে স্কুলের বাচ্চাদের পরিবেশ সচেতন করা।

স্কুলের শিক্ষকরাও যোগ দেন এ উৎসবে। রাঙামাটি জেলা প্রশাসনের একজন উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাও এগিয়ে আসেন। পুরো কর্মসূচির প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত পর্যালোচনা করে দেখা গেলো বাংলাদেশে সহজেই এটা সম্ভব।

ভবিষ্যতে যারা রাঙামাটি ভ্রমণে যাবেন তাদের জানা থাকা দরকার, রাঙামাটি প্রেসক্লাবের পাশে পৌর নার্সারি অ্যান্ড টব হাউস নামের নার্সারি থেকে একটি গাছের চারা সংগ্রহ করে আপনি রোপণ করে আসতে পারেন রাঙামাটির যেকোনো স্থানে। চারাটি আপনি বিনামূল্যে পাবেন। চারার দাম সংগঠন পরিশোধ করবে। আপনার কাজ শুধু চারাটি সংগ্রহ করে এমন এক জায়গায় রোপণ করা যেখানে এর পরিচর্যা করার কেউ আছেন। খুব সহজেই এরকম একটি জায়গা পেয়ে যাবেন।

গাছের চারা রোপণ আপনার ভ্রমণে একটি অসাধারণ অভিজ্ঞতা যোগ করবে।

২/১ মাসের মধ্যে বাংলাদেশের সবগুলো পর্যটন কেন্দ্রে এই প্রকল্প শুরুর প্রাথমিক কাজ প্রায় শেষ।

স্বেচ্ছাসেবী ও অলাভজনক এ সংগঠনটির সব কার্যক্রম জানতে চোখ রাখতে পারেন ফেসবুক পেজ https://www.facebook.com/treeismfoundation এ।

বাংলাদেশ সময়: ২১১৬ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২২, ২০১৫

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।