ঢাকা, শনিবার, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ২৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জলবায়ু ও পরিবেশ

শ্যালা নদীতে ট্যাঙ্কার ডুবি

জাতিসংঘ দলের পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন প্রকাশ

ডিপ্লোম্যাটিক করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯২৫ ঘণ্টা, মার্চ ১, ২০১৫
জাতিসংঘ দলের পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন প্রকাশ ছবি : বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম / ফাইল ফটো

ঢাকা: সুন্দরবনের শ্যালা নদীতে নৌযান চলাচল বন্ধের সুপারিশ করে ট্যাঙ্কার ডুবির ঘটনায় পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে জাতিসংঘের পর্যবেক্ষক দল।

রোববার (০১ মার্চ) বিকেলে রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলনে এ প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়।



এ সময় সেখানে পরিবেশ ও বনমন্ত্রী আনোয়ার হোসেন মঞ্জু, ঢাকায় জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়ক পলিন টেমেসিসসহ আরো অনেকে উপস্থিত ছিলেন।

ট্যাঙ্কার ডুবির ওই ঘটনায় পরিবেশে স্বল্পমেয়াদী প্রভাব দেখা দিলেও এর দীর্ঘমেয়াদী কোনো প্রভাব পড়ছে কিনা সে বিষয়ে মনিটরিংয়ের (পরিবীক্ষণ) সুপারিশ করা হয় পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদনে।

ট্যাঙ্কার ডুবির পর গত ১৫ ডিসেম্বর জাতিসংঘের কাছে সহায়তা চেয়ে একটি চিঠি দেয় সরকার। ওই চিঠির পরিপ্রেক্ষিতে বিশেষজ্ঞ দল পাঠায় জাতিসংঘ। তারা সুন্দরবন এলাকায় ছয়দিন অবস্থান করে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করেন।

এমিলিয়া ওয়ালস্ট্রমের নেতৃত্বাধীন ইউনাইটেড নেশসন ডিজাস্টার অ্যাসেসমেন্ট অ্যান্ড কোঅর্ডিনেশনের (ইউএনডিএসি) প্রতিনিধি দলে ছিলেন সংশ্লিষ্ট সরকারি কর্মকর্তা, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, ইউএনডিপি, ইউএসএআইডি, ইউনিয়ন সিভিল প্রটেকশন মেকানিজম, ফ্রান্স সরকার এবং ওয়ার্ল্ডলাইফ কনজারভেশন সোসাইটির প্রতিনিধি মিলিয়ে ২৫ সদস্য।

পর্যবেক্ষক দলটি দুর্ঘটনাস্থল ও আশপাশের এলাকা পর্যবেক্ষণ করে। এ সময় তারা সাক্ষাৎকার, এরিয়াল ফটোগ্রাফি, নমুনা সংগ্রহ ও পর্যবেক্ষণের অন্যান্য কৌশল ব্যবহার করে পরিস্থিতি মূল্যায়ন করেন।

পর্যবেক্ষণের পর এ নিয়ে ৩১ ডিসেম্বর ঢাকায় সংবাদ সম্মেলন করে পর্যবেক্ষক দলটি জানায়, ট্যাঙ্কার ডুবি হলেও তাৎক্ষণিক তৎপরতার কারণে সুন্দরবনে তেলের প্রভাব সীমিত।
তবে ভবিষ্যতে এ ধরনের দুর্ঘটনা এড়াতে সুন্দরবনের মাঝখান দিয়ে প্রবাহিত নদীতে নৌযান চলাচল বন্ধের সুপারিশ করে পর্যবেক্ষক দল।

বিশেষজ্ঞ দলের পর্যবেক্ষণের ওপর ভিত্তি করে ওই সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, ম্যানগ্রোভ ও জলজ বাস্তুতন্ত্রের ওপর আপাতত তেলের প্রভাব সীমিত। স্থানীয় জনসাধারণের তৎপরতা,  দুর্ঘটনার পর শ্যালা নদীতে ট্যাঙ্কার চলাচল নিষিদ্ধ করা এবং জোয়ার-ভাটার পরিবর্তন পরিস্থিতি অনুকূলে থাকায় ‍বাস্তুব্যবস্থার মধ্যে তেলের অনুপ্রবেশের সুযোগ অনেকটাই কমিয়ে দিয়েছে।

সংবাদ সম্মেলনে আরো বলা হয়, পরিবেশগত দৃষ্টিকোণ থেকে সুন্দরবনের মতো মহামূল্যবান এবং বিশ্বঐতিহ্যের (ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সাইট) মাঝখান দিয়ে নৌচলাচল বন্ধ করা উচিত।

দুর্ঘটনার পর বেশকিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় অনুকূলে থাকায় দুর্ঘটনার তাৎক্ষণিক প্রভাবকে সীমিত রাখতে সাহায্য করেছে।   এরপরও এ রকম একটি সংবেদনশীল জায়গার মধ্য দিয়ে তেলের ট্যাঙ্কার চলাচল সুন্দরবনের পরিবেশ এবং একে ঘিরে বেঁচে থাকা মানুষের জন্য অনেক বড় হুমকি হয়ে যাবে। তাই, এ পথে নৌচলাচল করতে দেওয়ার আগে প্রয়োজনীয় সুরক্ষা এবং নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে।

গত বছরের ৯ ডিসেম্বর সুন্দরবনের চাঁদপাই রেঞ্জের কাছে শ্যালা নদীতে জাহাজের ধাক্কায় তেলবাহী ট্যাঙ্কার ওটি সাউদার্ন স্টার-৭ ডুবে যায়। সে সময় ট্যাঙ্কারটিতে সাড়ে তিন লাখ লিটার ফার্নেস অয়েল ছিল।

বাংলাদেশ সময়: ১৯০৭ ঘণ্টা, মার্চ ০১, ২০১৫

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।