বগুড়া: তখন সকাল আনুমানিক সাড়ে ৯টা। শেরপুরের ঢগঢগীয়া বিলে হাজির দুই পাখি শিকারী।
কিন্তু বিধি বাম! স্থানীয় জনগণের সহযোগিতায় পরিবেশবাদীরা হাতেনাতে ধরে ফেলে তাদের। মুচলেকা দিয়ে রক্ষা পান তারা। অবশ্য এর আগেই তাদের বক ধরার ফাঁদ পুড়িয়ে দেয় জনগণ।
বক শিকারীদের একজন রাশেদুল ইসলাম মোল্লা (২৫), পিতার নাম বাবার নাম আব্দুল হাকিম। আরেক জন হলেন হাফিজুর মোল্লা (২২) তার পিতার নাম মোকছেদ মোল্লা।
উভয়ই সিরাজগঞ্জের তাড়াশ উপজেলার বিনশারা আংগাইল গ্রামের বাসিন্দা। নানান প্রজাতির পাখি শিকার করাই তাদের পেশা। যেখানে যখন যে মৌসুমের পাখির দেখা মেলে সেখানেই পোষা বক ও বক ধরার ফাঁদ নিয়ে তারা হাজির। কিন্তু এই দুই বাছাধন এর আগে কখনও কোথায় বাধার মুখোমুখি না হলেও শেষ পর্যন্ত ধরা খায় ঢগঢগীয়ার বিলে।
কয়েকজন পরিবেশকর্মী এলাকাবাসীর সহযোগিতায় পাখি শিকাররত অবস্থায় তাদের হাতেনাতে ধরে ফেলেন। পরে উৎসুক জনতার উপস্থিতিতে ধরা পড়া বকগুলোকে অবমুক্ত করা হয়। পাশাপাশি তাদের পাখি ধরার ফাঁদ ও খাচা আগুনে পুড়ে ধ্বংস করে ফেলা হয়।
সোমবার (১২ অক্টোবর) দুপুরের পর ঘটনাটি ঘটে বগুড়ার শেরপুর উপজেলার সীমান্তবর্তী সীমাবাড়ী ইউনিয়নের লাঙ্গলমোড়া গ্রামে।
পরিবেশকর্মী আব্দুর রাজ্জাক নাছিম, প্রভাষক আব্দুল কাইয়ুম, শিক্ষক ফরিদুল ইসলাম, গোলাম ফারুক, রুহুল আমিন, গোপাল, বুলবুল, সেতু, জয়নাল বাংলানিউজকে জানান, এ উপজেলাসহ আশেপাশের এলাকার নদী-নালা, খাল-বিলে স্থানীয় প্রজাতির অসংখ্য পাখি বসবাস করে। এছাড়া শীত মৌসুমের শুরুতে এসব স্থানে শীতকালীন নানান প্রজাতির অতিথি পাখি আসতে শুরু করেছে। এ কারণে শিকারীদের আনাগোনাও বেশ বেড়ে গেছে।
এরই ধারাবাহিকতায় সোমবার (১২অক্টোবর) ঢগঢগীয়া বিলে পাখি শিকার করতে আসেন এই দুই শিকারী। অভিনব কৌশল ব্যবহার করে মাত্র আধা ঘণ্টার মধ্যে ত্রিশটি বক শিকার করেন তারা।
খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে ছুটে যান পরিবেশকর্মীরা। স্থানীয় এলাকাবাসীর সহায়তায় দুই শিকারীকে হাতেনাতে ধরে ফেলেন তারা। পরে সীমাবাড়ী ইউনিয়ন পরিষদ এলাকায় পাখিগুলোকে অবমুক্ত করা হয়।
তবে পাখি শিকারীরা এ সংক্রান্ত আইন জানেন না দাবি করে উপস্থিত জনতার সামনে ক্ষমা চান। পরে তাদের মুচলেকা নিয়ে পাখি ধরা ফাঁদ ও খাঁচা পুড়িয়ে দেওয়া হয়।
বাংলাদেশ সময়: ১৫৩০ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৩, ২০১৫
এমবিএইচ/আরআই