শ্রীমঙ্গল (মৌলভীবাজার) : মাঠে-ময়দানে এদের বেশি দেখা যায়। দেখা যায় বৈদ্যুতিক তারে প্রায় সময় বসে থাকতে।
অপূর্ব এ পাখিটির নাম নাম নীলকণ্ঠ। ‘নীলকণ্ঠ’ নাম হলেও কণ্ঠ কিন্তু নীল নয়। তবে নীলের আধিক্য বেশি ওদের শরীরে। নীলকণ্ঠের উড়া দেখে বরাবরই বিমুগ্ধ হই।
কারণ, ও যখন উড়ার উদ্দেশ্যে আকাশে ডানা মেলে তখন ওর শরীর থেকে নীল রঙ যেন ছড়িয়ে পড়ে! এ এক দারুণ ভালো লাগা! নীলকণ্ঠ আমাদের দেশের সুলভ আবাসিক পাখি। ইংরেজিতে একে Indian Rollar বলা হয়। এর বৈজ্ঞানিক নাম Coracias benghalensis। এদের নীলকান্ত নামেও বলা হয়।
স্বনামধন্য পাখি বিষয়ক লেখক শরীফ খান এ পাখি সম্পর্কে বলেন, ‘নীলকণ্ঠ পাখি চিৎকার-চেঁচামেচিতে পটু। আমাদের দেশে চিৎকার-চেঁচামেচিতে পটু এমন যতগুলো পাখি আছে তার মধ্যে এরা অন্যতম। এরা মূলত খুবই চঞ্চল এবং খোলা শুকনো মাঠের পাখি। অতিশয় ধুরন্ধর, প্রখর দৃষ্টিসম্পন্ন এই পাখিটি অনেক উঁচুতে বসেও মাটি বা ঘাসবন অথবা ধানক্ষেতের ছোট পতঙ্গের নড়াচড়াটুকুও দেখতে পায়।
পাখিটি দৈহিক গঠন সম্পর্কে তিনি বলেন, নামটির মতো পাখিটিও দেখতে সুন্দর। ওদের দৈর্ঘ্য ৩৩ সেমি ও ওজন ১৬৫ গ্রাম। মাথার তালু আসমানি নীল। ডানার উপরিভাগের বেশিটাই আসমানি নীল, উপরের দিক গাঢ় নীল। ডানার প্রাপ্তরেখা কাঁচের স্বচ্ছ নীল। বুকে হলুদ আভা। গলায় খাড়া খাড়া নীলচে রেখার মতো সুতার মতো রেখা টানা। ঘাড় এবং কালচে বাদামি।
তিনি আরো বলেন, এদের খাদ্য তালিকায় আছে গুবরে পোকা, ঘাসফড়িংসহ বিভিন্ন জাতের পতঙ্গ। তাল, খেজুর, নারিকেল বা অন্য গাছের কোটরে বাসা করে এরা।
এপ্রিল-মে এদের প্রজনন মৌসুম। গ্রামাঞ্চলের দুষ্ট বালকেরা এই পাখিকে ফাঁদে আটকায়। ২০০২ সালে শ্রীমঙ্গলে এক আদিবাসী বালক আঠার ফাঁদে একটি পাখি আটকেছিল। ওটার কয়েকটি পালক আমার সংগ্রহে রয়েছে আজও।
আলোকচিত্রী রেজাউল হাফিজ রাহী বলেন, আমি বেশিরভাগ সময় ইন্ডিয়ান রোলারদের কারেন্টের তারেই বশে থাকতে দেখেছি। এ ছবিগুলো ঠাকুরগাঁও থেকে তোলা।
বাংলাদেশ সময়: ১১১২ ঘণ্টা; নভেম্বর ২৩, ২০১৫
বিবিবি/আরআই