শ্রীমঙ্গল (মৌলভীবাজার) : দেখতে অনেকটা অজগরের মতো। কিন্তু অজগর নয়।
বিষধর এ সাপটির নাম চন্দ্রবোড়া। অনেকে উলুবোড়া নামেও চেনেন। ইংরেজি নাম Russell's viper, বৈজ্ঞানিক নাম Daboia russeli। এরা দৈর্ঘ্যে এক মিটার থেকে দেড়মিটার পর্যন্ত লম্বা হয়।
কিছু দিন আগে উত্তরবঙ্গে এর কামড়ে একাধিক মানুষ মারা যাওয়ার খবর গণমাধ্যমে প্রকাশিত হলে সাপটি আলোচনায় আসে। মিডিয়ায় প্রচার করা হয়, সাপটি পঁচিশ বছর পর ফিরে এসেছে।
এ তথ্যের সত্যতা বিষয়ে সরীসৃপ বিশেষজ্ঞ শাহরীয়ার সিজার রহমান বাংলানিউজকে বলেন, ২৫ বছর পর সাপটির আবির্ভাব- এমন চাঞ্চল্যকর তথ্য সঠিক নয়। সাপটি আসলে আগে থেকেই ছিলো। হয়তো আমরা তাকে খুঁজে পাইনি। তখন বন-জঙ্গল, ঝোপ-ঝাড় বেশি ছিলো। অনেক কিছুই থেকে থাকে। লোকজন হয়তো ওই এলাকায় আগে কাজ করতেন না, তাই হয়তো সাপটির উপস্থিতি জানতে পারেননি।
তাছাড়া আরও একটি কারণ হলো, আগে এতো সব প্রিন্ট-ইলেকট্রনিক-অনলাইন মিডিয়াসহ বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যমের ছড়াছড়ি ছিলো না।
গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশ সম্পর্কে তিনি বলেন, সাপের কিছু কিছু নিউজ অতিরঞ্জিতভাবে প্রকাশ করা হয়। ফলে ওই সংবাদটি পড়লেই আমাদের সাপ সম্পর্কে প্রচণ্ড ভয়-ভীতির উদ্রেক হতে বাধ্য। এগুলো আসলে অতিরঞ্জিত।
একবার আমি একটি নিউজ পড়েছিলাম, কেরানীগঞ্জে এক সাপের কামড়ে ৭০ জন মানুষ আহত। একটা সাপ সত্তরজনকে কী করে কামড় দিতে পারে? এটা অসম্ভব ব্যাপার।
দু’একটি ব্যতীত যে কোনো পশু-পাখিই কিন্তু মানুষকে ভয় পায়। মানুষের উপস্থিতি টের পেলে সাপ নিজে থেকেই সাধারণত পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। কিন্তু কোনো কারণে যদি মানুষের পা তার শরীরের উপর পড়ে কিংবা মানুষ তাকে মারবে ভেবে নিজ থেকে ভয় পায়– তখনই সে মানুষের উপর আত্মরক্ষার্থে আক্রমণ চালায়। মন্তব্য করেন এই সরীসৃপ বিশেষজ্ঞ।
সাপটি সম্পর্কে তিনি বলেন, রাসেল ভাইপার সাপটি যে পাওয়া যাচ্ছে- এখন এটাই ভালো খবর। কারণ এর বিষ রফতানি করে বৈদেশিক মুদ্রা আয়ের যথেষ্ট সুযোগ রয়েছে আমাদের। এরা নিশাচর প্রাণী। তার খাদ্য তালিকায় রয়েছে ইঁদুর, ব্যাঙ, ছোট পাখি। এর নাকের ছিদ্র অন্য সাপ থেকে অপেক্ষাকৃত বড়। আমাদের দেশে এ সাপটি বিপন্ন। তবে পৃথিবীর অন্য দেশে এটি বিপন্ন নয়।
বাংলাদেশ সময়: ১০৩৯ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১০, ২০১৫
বিবিবি/আরআই