মোদ্দাকথা, আশপাশের এলাকার সব বয়সের মানুষই চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন আপেল সিরামিক্সের এহেন হঠকারী আচরণের কারণে। বিপর্যয়কর অবস্থার শিকার এলাকাবাসী প্রতিকার চেয়ে সরকারের বিভিন্ন দপ্তরে একাধিকবার অভিযোগ করেও কোনো ফল পাননি।
প্রসঙ্গত,বদরগঞ্জ পৌরশহরের শাহাপুর মহল্লায় আপেল সিরামিক্স নামের শিল্প প্রতিষ্ঠানটি অবস্থিত। দীর্ঘদিন ধরে এ প্রতিষ্ঠানটি টায়ার পুড়িয়ে তেল উৎপাদন করে নিজস্ব জেনারেটর চালিয়ে আসছে। এর ফলে আশপাশের পরিবেশ ও বাতাস বিষিয়ে ওঠে । এ নিয়ে এলাকাবাসীর অভিযোগ ও ক্ষোভের অন্ত নেই।
এলাকাবাসীর অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে গতকাল মঙ্গলবার(১২ ডিসেম্বর)সকালে আপেল সিরামিক্সে গিয়ে দেখা যায়, পোড়ানোর জন্য এক পাশে স্তুপ করে রাখা আছে টায়ার।
কথা হয় শাহাপুর মহল্লার হায়দার আলির সাথে। তিনি জানান, টায়ার পোড়ানোর বিষাক্ত ধোঁয়ায় বাড়িতে টেকা দায় হয়ে পড়েছে। এছাড়াও ছোট শিশু ও বৃদ্ধরা শ্বাসকষ্টসহ ফুসফুসের নানা রকম রোগে আক্রান্ত হচ্ছে।
সাংবাদিক পরিচয় পেয়ে এগিয়ে আসেন গৃহিনী মাহফুজা মোস্তারি। তিনি বলেন, সিরামিক্স কোম্পানির টায়ার পোড়ার বিষাক্ত গন্ধ ও ধোঁয়ায় আমার স্কুলপড়ুয়া দুই মেয়ে অসুস্থ হয়ে পড়েছে। তাই বাধ্য হয়ে আমি অন্য এলাকায় বাড়ি ভাড়া নেব বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছি।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে আপেল সিরামিক্স লিঃ-এর সহকারি ম্যানেজার আলমগীর হোসেন অপু টায়ার পোড়ানোর সত্যতা স্বীকার করেন। তবে টায়ার পোড়ানোর পক্ষে পরোক্ষ সাফাই গেয়ে তিনি বলেন, পরিবেশের বিপর্যয়ের কথাটি মাথায় রেখে আমরা দিনের বেলা টায়ার পোড়াই না। যা পোড়ানোর তা রাতেই পোড়াই।
পরিবেশ অধিদপ্তর (রংপুর) উপ-পরিচালক মেজবাহুল আলম দাবি করেন, বিষয়টি আমার জানা নেই। আমি সরকারি সফরে দেশের বাহিরে ছিলাম। দেরিতে হলেও এখন যেহেতু বিষয়টি জানতে পারলাম, দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।
বদরগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা অফিসার ডাঃ আঃ হাই রুবেল বলেন, ব্যাপক আকারে টায়ার পোড়ালে পরিবেশ বিপর্যয়ের আশংকা রয়েছে। এছাড়াও টায়ার পোড়ানো বাড়লে অ্যাজমা ও শ্বাসকষ্টজনিত বিভিন্ন রোগ ব্যাপক আকারে ছড়িয়ে পড়তে পারে।
বদরগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রাশেদুল হক অভিযোগপ্রাপ্তির কথা স্বীকার করে বলেন, তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।
বাংলাদেশ সময়: ১৫৪৫ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১২, ২০১৭
জেএম