ঘূর্ণিঝড়টি পর্যবেক্ষণ করে তা মোকাবিলায় ছুটির দিনেও সচিবালয়ে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী ডা. মো. এনামুর রহমান ও মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মো. শাহ্ কামাল এবং সংশ্লিষ্ট বিভাগ ও দপ্তরের কর্মকর্তারা দুর্যোগ প্রস্তুতি সভা করছেন। এছাড়াও জেলা-উপজেলায় দুর্যোগ প্রস্তুতি সভা করছেন সংশ্লিষ্ট জেলা প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তারা।
দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মো. শাহ্ কামাল বুধবার (১ মে) বিকেল সাড়ে তিনটার দিকে বাংলানিউজকে বলেন, ঘূর্ণিঝড় মোকাবিলায় আমাদের অফিস সব খোলা রয়েছে। মাঠ পর্যায়ে সিপিপি, স্কাউট ভলান্টিয়ার, আনসার-ভিডিপি, রেড ক্রিসেন্টসহ সব ভলান্টিয়ার রেডি আছে। জেলায় জেলায় ডিসিরা সভা করেছে।
সচিব বলেন, আমরা শুকনো খাবার ও প্রয়োজনীয় ত্রাণসামগ্রী পাঠিয়ে দিয়েছি। ইতোমধ্যে সব জেলায় তা পৌঁছে গেছে। এখন আমরা পর্যবেক্ষণ করছি।
এছাড়া ২ মে বিকেল ৫টায় ডাকা হয়েছে আন্তমন্ত্রণালয় বৈঠক। জেলা প্রশাসকদের বরাবর প্রাথমিকভাবে নগদ ৫ লাখ টাকা, ২০০ মে. টন চাল দেওয়া হয়েছে।
‘আমাদের পূর্বপ্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। সাইক্লোন সেল্টারগুলো ঠিক করে রেখেছি। পরিস্থিতির উপর নির্ভর করবে পরবর্তীতে কী করণীয়। ’
৪ নম্বর সিগন্যাল দিলেই দুর্যোগ প্রস্তুতির সভা চলতে থাকে জানিয়ে সচিব শাহ কামাল বাংলানিউজকে বলেন, আমরা কনটিনিয়াস মিটিংয়ে রয়েছি। এ সভা এখন সচিবালয়ে চলছে। সভায় প্রতিমন্ত্রী ও সচিব এবং কর্মকর্তারা রয়েছেন। এছাড়াও সভায় ফায়ার সার্ভিস, আর্মড ফোর্স ডিভিশনসহ সবাই আছে। উপকূলীয় ১৯টি জেলাকে অ্যালার্ট করেছি।
আরও পড়ুন>>>ঘূর্ণিঝড় ‘ফণী’: বন্দরগুলোতে ৪ নম্বর সংকেত
আবহাওয়া অফিস সবশেষ বুলেটিনে জানিয়েছে, ঘূর্ণিঝড়টি দুপুর ১২টায় চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ১ হাজার ২৩৫ কি. মি. দক্ষিণ-পশ্চিমে, কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে ১ হাজার ১৯০ কি. মি. দক্ষিণ-পশ্চিমে, মোংলা সমুদ্রবন্দর থেকে ১ হাজার ৯৫ কি. মি. দক্ষিণ-পশ্চিমে এবং পায়রা সমুদ্রবন্দর থেকে ১ হাজার ১০০ কি. মি. দক্ষিণ-পশ্চিমে অবস্থান করছিল। এটি আরও ঘণীভূত হয়ে উত্তর/উত্তরপশ্চিম দিকে অগ্রসর হতে পারে।
‘ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের ৭৪ কি. মি. এর মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ১৬০ কি. মি.। যা দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়ার আকারে ১৮০ কি. মি. পর্যন্ত বাড়ছে। ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের কাছে সাগর খুবই বিক্ষুব্ধ রয়েছে। ’
দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব বলেন, ঘূর্ণিঝড়টির ট্রাক পরিবর্তন হচ্ছে প্রতিদিন। গত ২৪ এপ্রিল থেকে এখন প্রায় এক হাজার কিলোমিটার দূরে রয়েছে। কিন্তু প্রথমে তামিলনাড়ুর দিকে আঘাত করার সম্ভাবনা থাকলেও পরে ডান দিকে মোড় নিয়ে ওড়িশার দিকে আঘাতের আশঙ্কা দেখা যাচ্ছে। আরো ডান দিকে এলে পশ্চিমবঙ্গের আঘাতের সম্ভাবনা থাকে। তবে আরো ডান দিকে মোড় নিলে সাতক্ষীরা অঞ্চলে আঘাত হানতে পারে। এভাবে আরো ডানদিকে মোড় নিলে কক্সবাজারের দিকে আঘাত হানার আশঙ্কা রয়েছে। ঘূর্ণিঝড়টি প্রতিনিয়ত মুভ করছে। আমরা পুরো উপকূলীয় এলাকাকে সতর্কে রেখেছি।
ঘূর্ণিঝড়ের কারণে চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মোংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরকে ৪ নম্বর স্থানীয় হুঁশিয়ারি সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে। উত্তর বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত সব মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত উপকূলের কাছাকাছি থেকে সাবধানে চলাচল করতে বলা হয়েছে। সেই সঙ্গে তাদের গভীর সাগরে বিচরণ না করতে বলেছে আবহাওয়া অফিস।
বাংলাদেশ সময়: ১৬০৯ ঘণ্টা, মে ০১, ২০১৯
এমআইএইচ/এএ