ঢাকা, সোমবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জলবায়ু ও পরিবেশ

বন্যপ্রাণী রক্ষায় আন্তরিকভাবে কাজ করছে সরকার: বনমন্ত্রী

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬৪৩ ঘণ্টা, মার্চ ৩, ২০২১
বন্যপ্রাণী রক্ষায় আন্তরিকভাবে কাজ করছে সরকার: বনমন্ত্রী ‘বিশ্ব বন্যপ্রাণী দিবস-২০২১’ উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভা

ঢাকা: বন্যপ্রাণী রক্ষায় সরকার আন্তরিকভাবে কাজ করছে বলে জানিয়েছেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রী মো. শাহাব উদ্দিন।

তিনি বলেন, ‘বাঘ, হাতি, হরিণ-সহ অন্য বন্যপ্রাণী রক্ষায়, সংরক্ষিত ও প্রাকৃতিক বনাঞ্চল থেকে গাছ কাটা বন্ধ করা এবং আইন ও বিধিমালা যুগোপযোগীকরণসহ বিভিন্ন কার্যকরী উদ্যোগ বাস্তবায়ন করা হচ্ছে।

বুধবার (৩ মার্চ) দুপুরে রাজধনীর আগারগাঁও বনভবন হৈমন্তী মিলনায়তনে ‘বিশ্ব বন্যপ্রাণী দিবস-২০২১’ উপলক্ষে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন মন্ত্রী। এবারের প্রতিপাদ্য বিষয় ‘মানুষ ও পৃথিবী বাঁচাতে: বন ও জীবিকা’।

এ সময় সুন্দরবনে বন ও বন্যপ্রাণী রক্ষায় পর্যবেক্ষণ কার্যক্রম পরিচালনার জন্য প্রধান বন সংরক্ষকের হাতে ড্রোন তুলে দেন বনমন্ত্রী মো. শাহাব উদ্দিন।

তিনি বলেন, ‘হাতি নিধন রোধ ও সুন্দরবন অঞ্চলে বিষ (কীটনাশক) দিয়ে মাছ শিকার বন্ধে কার্যকরী ব্যবস্থা নিতে হবে বন সংরক্ষকদের। ’

বাংলাদেশ ও ভারতের বিভিন্ন যৌথ উদ্যোগের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘উভয় সুন্দরবনের বাঘ সংরক্ষণ, বাঘ ও শিকারি প্রাণী পাচার বন্ধ, দক্ষতা বাড়ানো, মনিটরিং ইত্যাদি কার্যক্রম বাস্তবায়নের জন্য একটি প্রটোকল ও একটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর করা হয়েছে। হাতি ও অন্য বন্যপ্রাণীর আবাসস্থল সংরক্ষণ ও করিডোরের মাধ্যমে বন্য হাতির নিরাপদ চলাচল নিশ্চিত করার লক্ষ্যে একটি সম্ভাব্যতা যাচাই প্রকল্প নেওয়া হয়েছে। আন্তঃদেশীয় হাতি সংরক্ষণ কার্যক্রম জোরদার করার লক্ষ্যে ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যকার একটি প্রোটোকল স্বাক্ষরিত হয়েছে। বাঘ, হাতি ও কুমিরের আক্রমণে নিহত বা আহত মানুষের ক্ষতিপূরণ হিসেবে নিহত ব্যক্তির পরিবারকে এক লাখ ও আহত ব্যক্তির পরিবারকে ৫০ হাজার টাকা করে দেওয়া হচ্ছে। ২০১০ সাল থেকে এ পর্যন্ত ক্ষতিগ্রস্ত ৯৬১ জনকে প্রায় ৩ কোটি ৭১ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়া হয়েছে। ’

বনমন্ত্রী বলেন, ‘বন্যপ্রাণী অপরাধ নিয়ন্ত্রণের লক্ষ্যে অভিযান পরিচালনার মাধ্যমে ২০২০ সালে ২৯৫১কটি বিভিন্ন প্রজাতির বন্যপ্রাণী উদ্ধার করে প্রাকৃতিক পরিবেশে অবমুক্ত করা হয়েছে। এছাড়া, ৪৬ জন অপরাধীকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড ও অর্থদণ্ড দেওয়া হয়েছে। বন্যপ্রাণী শিকার ও পাচার বন্ধের লক্ষ্যে এ সংক্রান্ত অপরাধ দমনে সমন্বিতভাবে কাজ করে যাচ্ছে। বাংলাদেশের বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনাকে অধিকতর গুরুত্ব দিয়ে সরকার ৪৯টি এলাকাকে ‘রক্ষিত এলাকা ঘোষণা করেছে। বন্যপ্রাণীর বংশবিস্তার ও সংরক্ষণের লক্ষ্যে কক্সবাজার ও গাজীপুরে দু’টি সাফারি পার্ক স্থাপন করা হয়েছে। এছাড়া, মৌলভীবাজার জেলার জুড়ি উপজেলায় নতুন একটি সাফারি পার্ক স্থাপনের কার্যক্রম নেওয়া হয়েছে। ’

তিনি আরও বলেন, ‘বন্যপ্রাণী ও জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণকে জাতীয়ভাবে উৎসাহিত করার লক্ষ্যে ‘বঙ্গবন্ধু অ্যাওয়ার্ড ফর ওয়াইল্ডলাইফ কনজারভেশন’ প্রবর্তন করা হয়েছে। বন্যপ্রাণী বিষয়ক অপরাধ নিরসনের লক্ষ্যে ‘অপরাধ উদঘাটনে তথ্য প্রদানকারীকে পুরস্কার প্রদান বিধিমালা, ২০২০’ জারি করা হয়েছে। অতি সম্প্রতি সরকার ‘মহাবিপন্ন’ শকুন রক্ষায় ‘কিটোপ্রোফেন’ জাতীয় ব্যথানাশক ওষুধের উৎপাদন বন্ধ করে ‘ম্যালোক্সিক্যাম’ নামে একটি ওষুধ ব্যবহারের পরামর্শ দিয়েছে। ’

অনুষ্ঠানে বন অধিদপ্তরের প্রধান বন সংরক্ষক মো. আমীর হোসাইন চৌধুরীর সভাপতিত্বে উপস্থিত ছিলেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় উপমন্ত্রী হাবিবুন নাহার, পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় সচিব (এবডিসি) জিয়াউল হাসান, অতিরিক্ত সচিব মাহমুদ হাসান, প্রকৃতি ও জীবন ফাউন্ডেশন চেয়ারম্যান মুকিত মজুমদার বাবু, আইইউসিএন বাংলাদেশ কান্ট্রি রিপ্রেজেন্টেটিভ রাকিবুল আমীন প্রমুখ।

বাংলাদেশ সময়: ১৬৪৩ ঘণ্টা, মার্চ ০৩, ২০২১
এমএমআই/এফএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।