ঢাকা, শনিবার, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ২৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জলবায়ু ও পরিবেশ

ভাঙনে ছোট হয়ে আসছে ঘিওরের মানচিত্র!

সাজিদুর রহমান রাসেল, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১৪৩ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৩, ২০২২
ভাঙনে ছোট হয়ে আসছে ঘিওরের মানচিত্র!

মানিকগঞ্জ: মানিকগঞ্জের ঘিওর উপজেলার ইছামতী নদীতে দেখা দিয়েছে ভাঙন। এতে করে কয়েকশ’ বছরের ঐতিহ্যবাহী গরুর হাটসহ বসতবাড়ি নদীগর্ভে বিলীনের পথে।

নদী ভাঙনের কারণে উপজেলার মানচিত্র থেকে হারাতে বসেছে বেশ কিছু স্থাপনা। বদলে যাচ্ছে এ উপজেলার মানচিত্র।

গত কয়েক সপ্তাহ ধরে উজান থেকে নেমে আসা ঢলে ইছামতী নদীতে তীব্র ভাঙন দেখা দিয়েছে। এরই মধ্যে অনেকের ঘরবাড়ি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনাসহ হুমকিতে আছে হাট-বাজার, রাস্তাঘাট, কালভার্ট, সেতু, বসতভিটা।

উপজেলার ভাঙন কবলিত এলাকা ঘুরে দেখা যায়, ইছামতী নদীতে পানি বাড়ার পাশাপাশি ঘিওর উৃপজেলার ঘিওর ইউনিয়নের কুস্তা, বেগুন নার্চী ও নার্চী এলাকায় দেখা দিয়েছে ভাঙন। উপজেলার শত বছরের ঐতিহ্যবাহী গরুর হাট ভাঙনের কবলে পড়েছে। নদীর তীরবর্তী এলাকার বসতবাড়ি ও ফসলি জমির অধিকাংশই এখন নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। নদীগর্ভে বিলীন হওয়ার পর খোলা আকাশ বা অন্যের বাড়িতে আশ্রয় নিয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছেন অনেকেই। এ ছাড়া ভাঙনের ঝুঁকিতে আছে ঘিওর-ঠাকুরকান্দি এলাকার যোগাযোগের একমাত্র সেতুটিও। ভাঙন রোধে পানি উন্নয়ন বোর্ড বালু ভর্তি বস্তা নদীতে ফেলেছে।

কুস্তা এলাকার বসতবাড়িহারা মধ্যবয়সী নারী হেনা বলেন, নদীতে যখন ভাঙন শুরু হয়, ঠিক ওই সময়টাতে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের জানিয়েছিলাম। কিন্তু তখন তারা কোনো পদক্ষেপ নেয় নাই। তখন পদক্ষেপ নিলে হয়তো আমাদের আর ঘরবাড়ি ছাড়া হতে হতো না।  

আরেক নারী বলেন, নদীতে বাড়িঘর ভাঙার পর তামাশা করার জন্য আসছে জনপ্রতিনিধিরা, তারা এসে আমাদের সঙ্গে কথা বলছে আর মোবাইল ফোনে ছবি তুলে নিয়ে যাচ্ছে। বাড়ির একটি অংশ নদীতে চলে গেছে, কখন যেন বাকিটুকুও চলে যায়, সেই দুশ্চিন্তায় রাতে ঘুমাতেও পারি না।  

সদর ইউনিয়নের বাসিন্দা আফজাল বলেন, আমাদের বেশ কয়েকটি এলাকায় গত কয়েকদিন ধরে নদী ভাঙনের কবলে পড়ে অনেকে ঘরবাড়ি ছাড়া হয়েছে। আমাদের এ উপজেলার ঐতিহ্যের মধ্যে অন্যতম হিসেবে রয়েছে কয়েকশ' বছরের পুরোনো গরুর হাটটি। এ নদী ভাঙনের কবলে পড়ে হাটটি এখন নদীগর্ভে বিলীন হওয়ার পথে। দ্রুত স্থায়ী ব্যবস্থা না নিলে উপজেলার মানচিত্র থেকে বেশ কিছু স্থাপনা হারিয়ে যাবে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) হামিদুর রহমান বলেন, ইছামতী নদীতে ভাঙনের কবলে পড়ে যারা বাড়ি ঘর হারিয়েছেন, আমরা তাদের পাশে দাঁড়িয়েছি। ঐতিহ্যবাহী ঘিওর গরুর হাটের অভ্যন্তরীণ পথ থেকে নদী শাসন করার জন্য আড়াই কোটি টাকার কাজ হাতে নেওয়াহয়েছে।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মাঈন উদ্দিন বলেন, ইছামতী নদীর ভাঙন রোধে বালুর বস্তা ফেলা  শুরু হয়েছে।

বাংলাদেশ সময়: ২১৩৯ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৩, ২০২২
এসআই


 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।