ঢাকা, শুক্রবার, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

উপকূল থেকে উপকূল

সেতুর অপেক্ষায় ১০ বছর...

শফিকুল ইসলাম জয়, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৯৪৫ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ৫, ২০১৫
সেতুর অপেক্ষায় ১০ বছর... ছবি: বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

পিরোজপুর: দুই গ্রামের যোগাযোগের একমাত্র মাধ্যম ছিল লোহার সেতুটি। ১০ বছর আগেই তা ভেঙে খালে পড়ে গেছে।



এরপর এ গাঁও-ও গাঁওয়ের মানুষ আজ, কাল, পরশু করে দিন গুণেছেন সেতুটি সংস্কারের জন্য। কিন্তু সেতুটি আর সংস্কার হয়নি।

এদিকে, ভাঙা সেতু সংস্কার কিংবা নতুন করে দুই গ্রামের মেলবন্ধনের মাধ্যম সেতুটি আর নির্মাণ না হওয়ায় একসময় ত্যক্ত-বিরক্ত গ্রামবাসী নিজেরাই গড়ে তুলেছেন বিকল্প ব্যবস্থা।

ভেঙে পড়া সেতুর পাশেই তৈরি বাঁশ ও সুপারি গাছের সাঁকোই এখন রক্ষা করছে যোগাযোগ। এই সাঁকো দিয়ে দিনরাত গ্রামের মানুষ, বিশেষ করে স্কুলগামী শিশুরা পারাপারকালে নিচে ভেঙে পড়া সেতুর ধ্বংসাবশেষ দেখে পরস্পর আলোচনা করে।

পিরোজপুরের সদর উপজেলার কদমতলা ইউনিয়নের নিমার খালের এপারের জুজখোলা আর ওপারের খানাকুনিয়ারি গ্রামের মানুষেরা এখনো তবু সেতুর জন্য দিন গণনা করেন।

বৃহস্পতিবার (৩ ডিসেম্বর) সরেজমিনে নিমার খালের দুই পাড়ে ঘুরে ও স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, খালের ওপর নির্মিত সেতুটি ভেঙে যায় প্রায় ১০ বছর আগে। এরপর গ্রামের মানুষ সেতুটি সংস্কার বা পুনর্নিমাণের জন্য চেষ্টা-তদবির করলেও তা কাজে আসেনি। ফলে বাধ্য হয়ে একসময় তারা খালের ওপর সেতু বরাবর তৈরি করে নেন বাঁশ ও সুপারি গাছের সাঁকো।

বছর-বছর বদলানো হয় সাঁকোর বাঁশ ও কাঠামো। প্রতিনিয়ত ওই সাঁকো দিয়েই চলাচল করেও দুই গ্রামসহ আশপাশের প্রায় কয়েক হাজার মানুষ। পার হয় এলাকার স্কুল-কলেজ-মাদ্রাসাগামী কয়েকশ শিক্ষার্থী।

স্থানীয়রা জানায়, সাঁকোটি পারাপারে মানুষ অভ্যস্থ হয়ে গেলেও শিশু ও বৃদ্ধদের বেশ কষ্ট হয়।

খানাকুনিয়ারি গ্রামের ষাটোর্ধ্ব আব্দুল হক আকন বাংলানিউজকে জানান, ১০ বছর আগে সেতুটি ভেঙে গেলেও নতুন করে তা আর হয়নি। তাই বাঁশ ও সুপারি গাছ দিয়ে সাঁকো তৈরি করে নিয়েছেন স্থানীয়রা। তবে এটি চলাচলের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ।

খানাকুনিয়ারি পিইআর সিনিয়র ডিগ্রি মাদ্রাসার অধ্যক্ষ এমএ গণি মাহমুদ বাংলানিউজকে জানান, তাদের মাদ্রাসায় শিশু থেকে ডিগ্রি পর্যন্ত প্রায় পাঁচশ শিক্ষার্থী রয়েছে। এদের মধ্যে অন্তত দুইশ শিক্ষার্থী মাদ্রাসায় আসা-যাওয়ার জন্য ওই সাঁকোটি ব্যবহার করে।
 
ওই মাদ্রাসার শিক্ষক লুৎফুর কবির জানান, প্রাথমিক পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের সাঁকো পারাপারের সময় প্রায়ই পড়ে গিয়ে বই-খাতা নষ্ট হয়ে যায়।

ওই মাদ্রাসার দ্বিতীয় শ্রেণির ছাত্র জুবায়ের জানায়, সাঁকোটি পারাপারের সময় তার বুক ধড়ফর করে। মনে হয় খালের মধ্যে পড়ে যাচ্ছে সে।

এ বিষয়ে পিরোজপুর সদর উপজেলা প্রকৌশলী চন্দন কুমার চক্রবর্তী বাংলানিউজকে জানান, সাঁকোর ব্যাপারে তিনি অবগত নন। খবর নিয়ে পরবর্তী ব্যবস্থা নেবেন।

তবে এলাকাবাসী উপজেলা চেয়ারম্যানের কাছে আবেদন করলে প্রয়োজনীয়তা ও সম্ভাব্যতা যাচাই করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও তিনি জানান।

বাংলাদেশ সময়: ০৯৫৫ঘণ্টা, ডিসেম্বর ০৫, ২০১৫
এসআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।