লক্ষ্মীপুর: ভয়াবহ ভাঙন। তীব্র জোয়ার।
এমনই কঠিন অবস্থা লক্ষ্মীপুরের কমলনগরের উপকূলে বসবাসরত মেঘনার ভাঙন কবলিত বাসিন্দাদের।
উপজেলার চর ফলকন, পাটারিরহাট, চর কালকিনি ও সাহেবেরহাট ইউনিয়নের দুই হাজার পরিবারের প্রায় ১০ হাজার মানুষ এখন ভাঙন ও জোয়ারের কাছে অসহায়। তারা ঈদের দিনেও রয়েছে চরম দুর্ভোগে। একদিকে, জোয়ার হলে তলিয়ে যায় বাড়ি-ঘর। অন্যদিকে, ভাটায় হয় ভাঙনের শিকার।
দীর্ঘ চার দশকেরও বেশি সময় ধরে কমলনগর মেঘনা নদী অব্যাহতভাবে ভাঙছে। এ উপকূলে ভয়াবহ ভাঙনে প্রায় ৩৬ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ নদী গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। মেঘনা উপকূলের গ্রামগুলো এখন অরক্ষিত। জোয়ারে বসতঘরে পানি ঢোকে। চাঁদরাতেও ভাঙন ও জোয়ার মেঘনাপাড়ের বাসিন্দাদের তাড়া করেছে। কেড়ে নিয়েছে চোখের ঘুম।
খবর নিয়ে জানা গেছে, বিগত কয়েক দিনের টানা বর্ষণ ও জোয়ারে এ উপজেলার নিম্মাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। মাঠে কাজ নেই। ঘরে চাল-ডাল, নুন নেই। এমন দশায় ভাঙনের শিকার অনেক অসহায় পরিবারে ঈদ আনন্দ বলে কিছু নেই।
ভাঙন ও জোয়ার আতঙ্কে এ জনপদের হাজার হাজার মানুষ আজ অসহায়। প্রকৃতির সঙ্গে প্রতিনিয়ত যুদ্ধ করতে হয় তাদের। তাই ঈদের দিন তাদের কাছে সাধারণ অন্যান্য দিনের মতোই। এদিনে তাদের বিশেষ আয়োজন নেই।
গেলো ঈদে তাদের অনেকেই পরিবার, আত্মীয়-স্বজন ও প্রতিবেশীদের নিয়ে ঈদ আনন্দ করেছে। কিন্তু এ বছর সব হারিয়ে আজ নিঃস্ব তারা।
স্থানীয়রা জানায়, সাত/আট বছর ধরে মেঘনা নদীর ভাঙন ভয়াবহ রূপ ধারণ করেছে। ভাঙনে রাস্তা-ঘাট, হাট-বাজার, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, ঘূর্ণিঝড় আশ্রয়কেন্দ্রসহ বহু স্থাপনা বিলীন হয়ে গেছে। কমলনগর নদী ভাঙন কবলিত উপজেলা। এখানে মেঘনা নদীর ভাঙন ভায়াবহ। একাধিকবার ভাঙনের শিকার হয়ে বর্তমানে বহু পরিবার মানবেতর জীবন যাপন করছে। উপায় না থাকায় অনেকেই বেড়িবাঁধ ও রাস্তার পাশে ঝুঁপড়ি ঘরে আশ্রয় নিয়েছে। এসব প্রতিকূল পরিস্থিতিতে মেঘনাপাড়ে ঈদ আসে। তবে এ ঈদ তাদের জন্য আনন্দের নয়; কেবলই বেদনার।
উপজেলার সাহেবেরহাট ইউনিয়নের বাসিন্দা রফিক উল্যা বলেন, একাধিকবার মেঘনা নদীর ভাঙনের শিকার হয়েছি। ভাঙনে পারিবারিক ও সামাজিক বন্ধন ছিন্ন হয়ে গেছে। এখন আর ঈদে আনন্দ খুঁজে পাই না।
সাহেবেরহাট ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবুল খায়ের বলেন, ভাঙনের কারণে মেঘনাপাড়ের মানুষ অসহায়। ঈদ আনন্দ তাদের কাছে অধরাই থেকে যায়।
বাংলাদেশ সময়: ১৬১৬ ঘণ্টা, জুলাই ০৭, ২০১৬
এসআই
** কলোনিতে উঠবে না ঈদের চাঁদ