এমনিভাবেই এক বছর আগে স্বজনদের কাছ থেকে বিদায় নিয়েছিলেন এক গ্রামের আটজন জেলে। স্বজনরা এখনো অপেক্ষায় প্রহর গুনছেন...
স্বজনদের কাছ থেকে প্রতিদিনের মতো বিদায় নিয়ে গেলে শেষবারের মতো বিদায় হবে এটি হয়তো তারা জানতেন না।
প্রথমেই ঢুকে পড়লাম সাগরে ঝড়ের কবলে পড়ে নিখোঁজ হওয়া মো. বাবুলের বাড়িতে। বাড়ির ভেতর ঢোকা মাত্রই দৌড়ে দরজা খুলে দেন বাবুলে স্ত্রী ফাতিমা বেগম। তিনি সংবাদকর্মীদের দেখা মাত্রই ভেবেছিলেন হয়তো তার স্বামী ও ভাগ্নি জামাতার খবর নিয়ে এসেছে। ঘরের খাটে শুয়ে আছে দৃষ্টিপ্রতিবন্ধি ছোট ছেলে রাহাত। আর বড় ছেলে রুবেল পাশের বাড়িতে নারিকেলের বিনিময় গাছ নিরানোর কাজ করে। সাংবাদিকদের খবর শুনে রুবেল নিজেই আশপাশের নিখোঁজ আট জেলের পরিবারকে ডেকে নিয়ে আসে। প্রত্যেক পরিবারের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, তাদের স্বজন হারানোর আর্তনাদ আর সংসারের অভাব-অনটনের গল্প। কেবল ফাতিমা বেগমই নয়, আট পরিবারের সদস্যরাই বাড়ির দরজার দিকে তাকিয়ে থাকে যদি কোনো খবর আসে। বাবুলের স্ত্রী ফাতিমা বেগম বাংলানিউজকে বলেন, প্রায় এক বছর হতে চলছে স্বামী নিখোঁজ। আজও তার অপেক্ষায় আছি। এ বুঝি স্বামী আইলো। দুইডা সন্তান নিয়া অতি কষ্টে দিন কাটাইতেছি। অন্যের বাড়িতে কাম কইর্যা খাই। আইজও পাশের বাড়ির ঘর লিইপ্যা দুইডা নারিকেল পাইছি। দুই মাস আগে বাবুলের শোকে মারা যায় বাবা মো. কাঞ্চন মিয়া।
বাবুলের মা শাহেদা বেগম বলেন, মোর পোলায় তো গ্যাছেই, পোলার শোকে ওর বাবাও মারা গ্যাছে। মুই বিধবাত হইছি আর পোলার বউডাও বিধবা হইছে।
বরগুনা জেলা মৎস্যজীবী ট্রলার মালিক সমিতির সভাপতি গোলাম মোস্তফা চৌধুরী বলেন, ট্রলার ডুবির তিনদিন পর কয়েকজন জেলে উদ্ধার করা গেলেও বাকিদের উপজেলা প্রশাসনের সহযোগিতায় অনেক অনুসন্ধান করা হলেও পাওয়া যায়নি। তবে উদ্ধার হওয়া জেলেদের তথ্য মতে, বাকিরা ডুবে মারা গেছেন।
বাংলাদেশ সময়: ১২০৩ ঘণ্টা, মে ৩০, ২০১৯
এসএইচ