এসব বাঁধে বসতি ও গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা চরম হুমকির মুখে পড়েছে। যেকোন মুহূর্তে বাঁধে ধস নামতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন নদী তীরবর্তী এলাকার মানুষ।
প্রয়োজনের তুলনায় অপ্রতুল বরাদ্দের কারণে প্রতিনিয়ত ভাঙনের মুখে পড়ছে জনপদ। টেকসই বাঁধ মেরামত করে মেঘনার ভাঙন বন্ধের দাবি উপকূলবর্তী মানুষের।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো)হিসেবে তজুমদ্দিন উপজেলার চাচড়া ও সোনাপুর পয়েন্টে ৭ কিলোমিটার, লালমোহন উপজেলার ধলীগৌরনগর ইউনিয়নের ৩ কিলোমিটার, চরফ্যাশন উপজেলার চর মোতাহার এলাকার ৪ কিলোমিটার ও মনপুরা উপজেলার মনপুরা ও সাকুচিয়া ইউনিয়নের ১২ কিলোমিটার বাঁধ বর্তমানে ভয়ানক ঝুঁকিতে রয়েছে। বর্ষার মৌসুমে যেকোনো সময় এসব বাঁধ ভেঙে বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হতে পারে।
পাউবো’র নির্বাহী প্রকৌশলী (ডিভিশন-২) কাওছার আলম জানান, বর্তমানে মনপুরা, লালমোহন, তজুমদ্দিন ও চরফ্যাশন উপজেলার ২২ কিলোমিটার বাঁধ অধিক ঝুঁকিপূর্ণ। এখানে বাঁধ সংস্কারে প্রয়োজন ৩০ থেকে ৪০ কোটি টাকা। আর যদি সিসি ব্লক দিয়ে নতুন করে বাঁধ নির্মাণ করা হয় তবে লাগবে ১৮০০ কোটি টাকা। কিন্তু ১২ কিলোমিটার বাঁধ মেরামতে বরাদ্দ পাওয়া গেছে মাত্র দেড় কোটি টাকা। যা প্রয়োজনের তুলনায় খুব অপ্রতুল। বেশি বরাদ্দ না দেয়ায় টেকসই বাঁধ নির্মাণ করা সম্ভব হচ্ছে না। এতে বাঁধের ঝুঁকি থেকেই যাচ্ছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, প্রতি বছরই মেঘনার ভাঙনের মুখে পড়ে বিস্তীর্ণ জনপদ। এতে বসতভিটা হারা হয়ে পড়ে বহু পরিবার। ভিটাহারা নিঃস্ব মানুষের সংখ্যা দিন দিন বেড়েই চলেছে। বসতভিটা, ফসলি জমি ও পুকুর-ঘের হারিয়ে অসহায় হয়ে পড়ছেন উপকূলের বাসিন্দারা।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের এক জরিপে জানা গেছে, প্রতি বছর বর্ষা মৌসুমে নদীতে ভাঙে ১০০/১৫০ মিটার, বাঁধ ভাঙে ১/২ কিলোমিটার এবং লম্বালম্বিভাবে বাঁধের ঢাল ভাঙে ১৫/২০ কালোমিটার। বছরে গৃহহারা হয়ে পড়েন অন্তত ১৫০০ থেকে ২ হাজারের মত পরিবার। সে হিসেবে প্রতি বছর ১০ কিলোমিটারের মত বাঁধ ভাঙনের কবলে পড়ে। এবং বাস্তুহারা হয় ১০ হাজার পরিবার। যারা এক স্থান থেকে অন্যস্থানে বসতি গড়ে তোলেন।
জেলার নদী ভাঙন রোধে টেকসই বাঁধ নির্মাণের মাধ্যমে নদীর তীরবর্তী এলাকার বাসিন্দাদের বসতি এবং গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা রক্ষার দাবি ভাঙন কবলিত এলাকার মানুষের।
বাংলাদেশ সময়: ১৮৩৫ ঘণ্টা, জুলাই ০৩, ২০১৯
আরএ