দীর্ঘদিন কর্মহীন অবস্থায় থাকার পর এ নিষেধাজ্ঞা উঠে যাওয়ায় জেলেপাড়ায় আবারও প্রাণচাঞ্চল্য ফিরে এসেছে। দীর্ঘদিন বঙ্গোপসাগর থেকে মাছ আহরণ বন্ধ থাকায় এবার বেশি মাছ পাবেন বলে আশাবাদী জেলেরা।
প্রান্তিক জনপদ বিষখালী নদী সংলগ্ন জেলে পল্লীতে জেলেদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ইতোমধ্যেই সাগরে যাওয়ার সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছেন তারা (জেলে)। ৬৫ দিনের নিষেধাজ্ঞা কাটিয়ে জেলে শ্রমিকসহ আড়তদার, পাইকার ও ট্রলার মালিকদের মুখে এখন হাসি। তাছাড়া স্থানীয় মুদি-মনোহরী ব্যবসায়ীদের মধ্যেও আনন্দ বিরাজ করছে।
জেলেরা বলছেন, সাগরে মাছ আহরণ নিষেধাজ্ঞার কারণে তারা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। যে কারণে দু’মাস ধরে তারা আর্থিক অভাব-অনটনের মধ্য দিয়ে পার করেছেন। আবার অনেকে ঋণগ্রস্তও হয়ে পড়েছেন।
কথা হয় জিনতলা গ্রামের জেলে বাবুল মিয়া, বেলায়েত হোসেন ও ইসমাইলের সঙ্গে। তারা বাংলানিউজকে বলেন, দীর্ঘ ৬৫ দিনের নিষেধাজ্ঞা শেষ, এহন (এখন) আবার সাগরে যাওয়ার পালা। তবে বরাবরের মতো নিষেধাজ্ঞা শেষে বেশি ইলিশ মাছ পাবেন বলে তারা আশাবাদি।
পাথরঘাটা বিএফডিসির মেসার্স পদ্মা ফিস ট্রেডার্সের স্বত্বাধিকারী সতিন্দ্র নাথ বালা বাংলানিউজকে বলেন, প্রতিবছর ট্রলার মালিক এবং শ্রমিকদের লাখ লাখ টাকা দাদন দেই। তারা দাদন নিয়ে সাগরে যেতে না পারায় ৬৫ দিনের নিষেধাজ্ঞায় আর্থিকভাবে খুবই অসহায় হয়ে পড়েছি। পাথরঘাটার সব আড়তদাররা একই ক্ষতির সম্মুখীন।
বরগুনা জেলা মৎস্যজীবী ট্রলার মালিক সমিতির সভাপতি গোলাম মোস্তফা চৌধুরী বাংলানিউজকে বলেন, ৬৫ দিনের নিষেধাজ্ঞার কারণে আমরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে পড়েছি। ইলিশ প্রজনন মৌসুমে ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা মেনে চলছি, কিন্তু ৬৫ দিনের নিষেধাজ্ঞা চলতে থাকলে উপকূলের জেলেরা নিঃস্ব হয়ে পড়বে। আর তাই আমরা এ আইনের বিরোধীতা করছি।
জানা গেছে, বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউট পরিচালিত গবেষণা মতে, মে মাসের শেষের দিক থেকে জুলাই পর্যন্ত বঙ্গোপসাগরে বিচরণরত মাছসহ বিভিন্ন সামুদ্রিক প্রাণীর প্রজননকাল। এ কারণেই সাগরের মাছসহ বিভিন্ন মূল্যবান প্রাণিজসম্পদ রক্ষার পাশাপাশি ভাণ্ডার বাড়াতে দীর্ঘসময় মাছ আহরণের ওপর নিষেধাজ্ঞারোপের সিদ্ধান্ত নেয় সরকার। এরই পরিপ্রক্ষিতে ২০ মে থেকে ২৩ জুলাই পর্যন্ত ৬৫ দিন বঙ্গোপসাগরে মাছ ধরা নিষিদ্ধ করা হয়।
বাংলাদেশ সময়: ১১১০, জুলাই ২৩, ২০১৯
এসআরএস