ঢাকা, শনিবার, ২৪ কার্তিক ১৪৩১, ০৯ নভেম্বর ২০২৪, ০৭ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

আদালত

৭ খুন: আসামিদের আত্মপক্ষ সমর্থন শেষ, যুক্তিতর্ক ২১ নভেম্বর

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬৪৯ ঘণ্টা, অক্টোবর ৩১, ২০১৬
৭ খুন: আসামিদের আত্মপক্ষ সমর্থন শেষ, যুক্তিতর্ক ২১ নভেম্বর

নারায়ণগঞ্জ: নারায়ণগঞ্জের আলোচিত সেভেন মার্ডার মামলায় ৩৪২ ধারায় আসামিদের আত্মপক্ষ সমর্থন শেষ হয়েছে। আগামী ২১ নভেম্বর মামলার সর্বশেষ ধাপ উভয়পক্ষের যুক্তিতর্ক (আর্গুমেন্ট) উপস্থাপন শুরুর দিন ধার্য করেছেন আদালত।

 

সোমবার (৩১ অক্টোবর) সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত নারায়ণগঞ্জের জেলা ও দায়রা জজ সৈয়দ এনায়েত হোসেনের আদালতে আত্মপক্ষ সমর্থন করেন ১৯ আসামি। এর আগে গত ২৪ অক্টোবর আত্মপক্ষ সমর্থন করেন আরও ৪ আসামি। এ নিয়ে ৩৫ আসামির মধ্যে গ্রেফতারকৃত ২৩ জনেরই আত্মপক্ষ সমর্থন শেষ হলো। বাকি ১২ জন পলাতক থাকায় তারা এ সুযোগ পাবেন না।

সোমবার প্রথমে ১৯ আসামিকে অন্যান্য আসামির জবানবন্দি ও সাক্ষীদের সাক্ষ্য-প্রমাণের ভিত্তিতে তাদের বিরুদ্ধে উত্থাপিত অভিযোগ পড়ে শোনান রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী পিপি অ্যাডভোকেট ওয়াজেদ আলী খোকন।

তারা হলেন- র‌্যাবের সদস্য এসআই পূর্ণেন্দু বালা, এএসআই বজলুর রহমান ও আবুল কালাম আজাদ, হাবিলদার এমদাদুল হক ও নাসির উদ্দিন, কনস্টেবল শিহাব উদ্দিন ও বাবুল হাসান, আরওজি-১ আরিফ হোসেন, ল্যান্সনায়েক হীরা মিয়া, বেলাল হোসেন, ল্যান্স কর্পোরাল রুহুল আমিন, সিপাহী আবু তৈয়্যব, নুরুজ্জামান ও আসাদুজ্জামান নূর এবং নূর হোসেনের সহযোগী মোর্তুজা জামান চার্চিল, আলী মোহাম্মদ, মিজানুর রহমান দীপু, রহম আলী ও আবুল বাশার।

তাদের প্রত্যেকের বিরুদ্ধে পূর্ব পরিকল্পিতভাবে, পরস্পরের যোগসাজশে ও অর্থের বিনিময়ে অন্যান্য র‌্যাব সদস্যদের সহায়তায় ৭ জনকে অপহরণ, হত্যা ও মরদেহ গুমের অভিযোগ আনা হয়।

আসামিদের মধ্যে প্রথম ৯ জন নিজেদের নির্দোষ দাবি করেন এবং কোনো সাফাই সাক্ষী দেবেন না জানান। তবে নূর হোসেনের ৫ সহযোগী দাবি করেন, তাদের ক্রসফায়ারের ভয় ও নির্যাতনের ভয় দেখিয়ে সাক্ষ্য আদায় করা হয়েছে। তারা নূর হোসেনের চাকরি করেন না।

আর ৫ আসামি সিপাহী আবু তৈয়্যব, কনস্টেবল শিহাব উদ্দিন, হাবিলদার এমদাদুল হক, সৈনিক আসাদুজ্জামান নূর ও এএসআই বজলুর রহমান তাদের আইনজীবীদের মাধ্যমে আদালতে লিখিত বক্তব্য উপস্থাপন করেন।
 
এরপর পিপি ওয়াজেদ আলী খোকন আদালতকে বলেন, যেহেতু ১২ আসামি পলাতক, তাই তাদের বিরুদ্ধে উত্থাপিত অভিযোগ পড়ে শোনানো গেল না। আদালত আইনের বিধান অনুসারে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবেন।
 
আসামিপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট খোকন সাহা আদালতের দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলেন, ‘জেরার সময় আমি তদন্তকারী কর্মকতার কাছে প্রশ্ন করেছিলাম, ট্রলারে মরদেহ ওঠানোর স্থান ল্যান্ডিং স্টেশন শীতলক্ষ্যা নদীর কোন পাড়ে? জবাবে তদন্ত কর্মকর্তা বলেছেন, ল্যান্ডিং স্টেশন শীতলক্ষ্যা নদীর উত্তর পাড়ে। মামলার স্বার্থে ল্যান্ডিং স্টেশন শীতলক্ষ্যা নদীর কোন পাড়ে তা নির্ণয়ের জন্য আদালতের কাছে কমিশন নিয়োগের আবেদন জানাচ্ছি’।

আদালত তার এ আবেদন নামঞ্জুর করেন।
 
গত ২৪ অক্টোবর প্রধান ৪ আসামি নূর হোসেন, র‌্যাব-১১’র সাবেক অধিনায়ক লে. কর্নেল (অব.) তারেক সাঈদ মুহাম্মদ, মেজর (অব.) আরিফ হোসেন ও লে. কমান্ডার (অব.) মাসুদ রানা দণ্ডবিধির ৩৪২ ধারায় আত্মপক্ষ সমর্থন করেন।
 
সাত খুনের দু’টি মামলার চার্জশিটে অভিন্ন ৩৫ জন করে আসামি। তাদের মধ্যে ২৩ জন গ্রেফতার ও ১২ জন পলাতক আছেন।

এর আগে আসামিদের বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দিয়েছেন রাষ্ট্রপক্ষের সাক্ষীরা।

সাত খুনের ঘটনায় দু’টি মামলার বিচারিক কার্যক্রমই একসঙ্গে চলছে। একটি মামলার বাদী নিহত আইনজীবী চন্দন সরকারের জামাতা বিজয় কুমার পাল ও অপরটির বাদী নিহত নজরুল ইসলামের স্ত্রী সেলিনা ইসলাম বিউটি।

দু’টি মামলারই অভিন্ন সাক্ষী ১২৭ জন করে। তাদের মধ্যে তদন্ত কর্মকর্তাসহ ১০৬ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ ও জেরা সম্পন্ন হয়েছে।

** না’গঞ্জে ৭ খুন মামলায় পরবর্তী আত্মপক্ষ সমর্থন ৩১ অক্টোবর

বাংলাদেশ সময়: ১৬৪৩ ঘণ্টা, অক্টোবর ৩১, ২০১৬
এএসআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।