ঢাকা, মঙ্গলবার, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

আদালত

এসিড মামলার আসামিকে পাঁচ লাখ টাকা জরিমানা

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭২৮ ঘণ্টা, মার্চ ১৬, ২০১৭
এসিড মামলার আসামিকে পাঁচ লাখ টাকা জরিমানা

ঢাকা: এসিড নিক্ষেপের মামলায় মৃত্যুদণ্ড রহিত (রিজেক্টেড) করে এক আসামিকে পাঁচ লাখ টাকা জরিমানা করেছেন হাইকোর্ট।

একই সঙ্গে ওই টাকা ভিকটিমদের দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি আসমির ছয় বছরের কারাবাসকে দণ্ড হিসেবে ধরা হয়েছে।

তবে হাইকোর্টের এ রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করার কথা জানিয়েছেন রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলি।

বৃহস্পতিবার (১৬ মার্চ) রায়টি ঘোষণা করেন বিচারপতি আবু বকর সিদ্দিকী ও বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলামের বেঞ্চ।

আদালতে আসামিপক্ষে ছিলেন ব্যারিস্টার এ বি এম আলতাফ হোসেন। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মনিরুজ্জামান রুবেল।

পরে আলতাফ হোসেন বলেন, ‘বিচারিক আদালত এসিড অপরাধ দমন আইন, ২০০২ এর ৫ (ক) ধারায় আমার মক্কেলকে (আসামি) মৃত্যুদণ্ড দিয়েছিলেন। আইনের এ ধারাটিতে উল্লেখ আছে, যদি কোনো ব্যক্তি কোনো এসিড দ্বারা অন্য কোনো ব্যক্তিকে এমনভাবে আহত করেন যার ফলে ভিকটিমের দৃষ্টিশক্তি বা শ্রবণশক্তি সম্পূর্ণ বা আংশিকভাবে নষ্ট হয় বা মুখমণ্ডল, স্তন বা যৌনাঙ্গ বিকৃত বা নষ্ট হয় তা হলে আসামি মৃত্যুদণ্ডে বা যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ডে দণ্ডনীয় হবেন এবং তার অতিরিক্ত অনূর্ধ্ব এক লক্ষ টাকার অর্থদণ্ডে দণ্ডিত হবেন। ’ কিন্তু ভিকটিম দু’জনের এর কোনোটিই হয়নি।

ফলে হাইকোর্ট মৃত্যুদণ্ড রহিত করে একই আইনের ৫ (খ) ধারা অনুযায়ী জরিমানা করেছেন। একইসঙ্গে তার ছয় বছরের কারাবাসকে সাজা হিসেবে গণ্য করেছেন।

মনিরুজ্জামান রুবেল বলেন, এ মামলার আসামির ডেথ রেফারেন্স (মৃত্যুদণ্ডদেশ অনুমোদন) বাতিল করেছেন হাইকোর্টে। একইসঙ্গে আসামির আপিল ও জেল আপিল পরিমার্জন (মডিফিকেশন) করে তা খারিজ করে দিয়েছেন। এখন এ রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করবো।

হাইকোর্ট সুত্র জানায়, কুড়িগ্রামের ভূরুঙ্গামারী থানার আন্ধারীঝাড় গ্রামের আব্দুর রাজ্জাককে তার তৃতীয় স্ত্রী হালিমা খাতুন তালাক দেন। এতে আব্দুর রাজ্জাক ক্ষিপ্ত হয়ে ২০১০ সালের ১৪ নভেম্বর গভীর রাতে হালিমার বাবার বাড়িতে তার ওপর এসিড নিপেক্ষ করেন। কিন্তু ওইদিন হালিমা ঘরে না থাকায় এসিডে তার মা জরিনা বেওয়া ও ভাগ্নি খুশি খাতুনের শরীরের বিভিন্ন অংশ ঝলসে যায়।

এ ঘটনায় একই বছরের ১৯ নভেম্বর জরিনা বেওয়ার ছেলে বাদী হয়ে ভূরঙ্গামারী থানায় এসিড অপরাধ দমন আইনে মামলা দায়ের করেন। এই মামলায় ২০১১ সালের ২৬ জুন কুড়িগ্রামের এসিড অপরাধ দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো. সাজেদুল করিম আসামি আব্দুর রাজ্জাককে মৃত্যুদণ্ডাদেশ দেন। পাশাপাশি এক লাখ টাকা জরিমানা করেন।

পরে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামির ডেথ রেফারেন্স হাইকোর্টে আসে এবং পাশাপাশি খালাস চেয়ে রাজ্জাক জেল ও ফৌজদারি আপিল করেন।

সেইসব আবেদনের শুনানি শেষে বৃহস্পতিবার (১৬ মার্চ) রায় ঘোষণা করেন হাইকোর্ট। রায়ে ডেথ রেফারেন্স রিজেক্টেড এবং আসামির জেল ও ফৌজদারি আপিল পরিমার্জন করে খারিজ করে দেন এবং ৫ লাখ টাকা জরিমানার আদেশ দেন।

বাংলাদেশ সময়: ২২২৫ ঘণ্টা, মার্চ ১৬, ২০১৭
ইএস/জিপি/জেএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।