ঢাকা, সোমবার, ২৪ আষাঢ় ১৪৩১, ০৮ জুলাই ২০২৪, ০০ মহররম ১৪৪৬

ক্রিকেট

কোহলির কান্না, রোহিতের ‘গোটা দুনিয়া পেয়ে যাওয়া’- মুম্বাইয়ে উৎসবের রাত 

স্পোর্টস ডেস্ক  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮২৩ ঘণ্টা, জুলাই ৫, ২০২৪
কোহলির কান্না, রোহিতের ‘গোটা দুনিয়া পেয়ে যাওয়া’- মুম্বাইয়ে উৎসবের রাত 

২০০৭ সালে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের অভিষেক আসরেই শিরোপা জিতে ইতিহাস গড়ে ভারতের ফিরেছিল মহেন্দ্র সিং ধোনির দল। সেই দলকে দেওয়া হয়েছিল বীরোচিত সংবর্ধনা।

কিন্তু এরপর ২০ ওভারের ফরম্যাটে ১৭ বছরের খরা; শিরোপাহীন কেটেছে বছরের পর পর।  

অবশেষে সেই খরা কাটিয়েছে টিম ইন্ডিয়া। ১৭ বছর পর রোহিত শর্মা, বিরাট কোহলিদের হাত ধরে এসেছে বিশ্বচ্যাম্পিয়নের মুকুট। সেই কাঙ্ক্ষিত মুকুট নিয়ে গতকাল দেশে ফিরেছে রোহিতবাহিনী। দিল্লিতে একটি হোটেলে একদফা স্বাগত জানানো হয় তাদের। এরপর তারা যায় ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর বাসভবনে। সেখানে প্রধামন্ত্রীর কাছ থেকে সংবর্ধনা পাওয়ার পর তারা আসেন মুম্বাইয়ে। তাদের অপেক্ষায় মুম্বাইয়ের রাস্তায় সমবেত হয়েছিল লাখো মানুষ।  

মুম্বাইয়ের মেরিন ড্রাইভের রাস্তায় জনস্রোত এমন অবস্থায় দাঁড়ায় যে, বিশ্বকাপজয়ীদের বহনকারী বাস ঠিকমতো চলতে পারছিল না। লাখো মানুষের কণ্ঠে তখন নানান স্লোগান, হাতে জাতীয় পতাকা আর ব্যানার। সমর্থকদের এমন আবেগের স্রোতে ঝাঁপ দিয়েছে ছাদখোলা বাসে আসা ভারতীয় দলও। ক্লান্তি ভুলে সমর্থকদের সঙ্গে নেচে-গেয়ে উদযাপন করেছেন তারা।  

মেরিন ড্রাইভে সমর্থকের সঙ্গে উদযাপন শেষে মুম্বাইয়ের ওয়াংখেড়ে স্টেডিয়ামে যায় ভারতীয় দল। এই স্টেডিয়ামে ১৩ বছর আগে ওয়ানডে বিশ্বকাপ জেতার পর সমস্বরে রব উঠেছিল, 'শচীন, শচীন!!' । সেই একই মাঠে নিজ দলের বিশ্বকাপজয়ী সতীর্থদের কাছ থেকে টুপিখোলা অভিবাদন পেলেন রোহিত শর্মা। ভারতকে দ্বিতীয়বার টি-টোয়েন্টি বিশ্বসেরা বানানোর নেপথ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিল তার। সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়ে দাপুটে সব জয় এনে দিয়েছেন এই ডানহাতি ওপেনার। শিরোপা জিতে আবেগে ভেসেছেন তিনিও।  

বিশ্বকাপজয়ী অধিনায়ক রোহিতকে অভিবাদন জানিয়েছেন সমর্থকরা। তার নামে 'মুম্বাইয়ের রাজা' স্লোগান উঠেছে ওয়াংখেড়ে থেকে শুরু করে মুম্বাইয়ের রাস্তায়ও। রোহিতের আবেগ তাই বাঁধ মানলো না। অবশ্য ১৭ বছর আগে আরও একবার বিশ্বকাপজয়ী দলের সদস্য হয়ে ফিরেছিলেন রোহিত। তখন তার বয়স ছিল মাত্র ২০ বছর। কিন্তু তার কাছে এগিয়ে এবারেরটিই। বললেন, '২০০৭ সালে প্রথম বিশ্বকাপ জয়ের কথা ভোলার নয়। তবে এবারেরটি বেশি স্পেশাল। কারণ এবার আমি অধিনায়ক ছিলাম। এটা আমার জন্য গর্বের উপলক্ষ। মানুষের এত আবেগ, উত্তেজনা দেখে বুঝতে পারছেন, এটার আবেদন আমাদের কাছে কত বিশাল। মানুষের জন্য কিছু অর্জন করতে পেরে ভালো লাগছে। মনে হচ্ছে গোটা দুনিয়া পেয়ে গেছি। '

মুম্বাইয়ের রাস্তায় 'ভিক্টরি প্যারেড' শেষে ওয়াংখেড়ে স্টেডিয়ামে যায় ভারতীয় দল। ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড সেখানে গোটা দলকে সংবর্ধনা দেয়। গ্যালারিতেও হাজির ছিলেন হাজারো সমর্থক। যেখানে মাঠ ঘুরতে ঘুরতে সমর্থকদের কাছ থেকে অভিবাদন গ্রহণ করে টিম ইন্ডিয়া। গ্যালারিতে তাদের নামে চলে জয়ধ্বনি। যা দেখে রোহিত বলেন, 'মুম্বাই কখনো হতাশ করে না। ' অবশ্য ২০১১ সালে এই মাঠে যখন ওয়ানডে বিশ্বকাপ জিতেছিল, সেই দলে ছিলেন না রোহিত। দলেই সুযোগ পাননি সেবার। অথচ এবার কী রাজকীয়ভাবেই প্রত্যাবর্তন হলো তার। যে কারণে তাকে নিয়ে সমর্থকরা স্লোগান দিলেন 'মুম্বাইয়ের রাজা' ধ্বনিতে।

সবকিছু দেখে আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন কোহলিও। ১৩ বছর আগে এই মাঠেই ফাইনাল জেতার পর শচীনকে কাঁধে বহন করেছিলেন তিনি। এবার তাকে ঘিরে উৎসবে মাতলো পুরো গ্যালারি। যা দেখে আবেগে কেঁদেই ফেললেন 'কিং' কোহলি। জড়ানো কণ্ঠে বললেন, 'ওয়াংখেড়েতে শিরোপা নিয়ে ফিরতে পারা আমার জন্য বিশেষ অনুভূতি। ' পরে সতীর্থদের সঙ্গে ঢোলের তালেতালে নাচলেন। শেষে শিরোপা হাতে নিয়ে রোহিতের সঙ্গে মাঠ ছাড়লেন কোহলি। দুজনেই বিশ্বকাপে জেতার পর আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি থেকে অবসর নিয়েছেন। দুই কিংবদন্তির ভক্তরা বলছেন, 'দুই রাজার শেষটা এর চেয়ে ভালো হতে পারতো না। ' 

বাংলাদেশ সময়: ১৮২৩ ঘণ্টা, জুলাই ০৫, ২০২৪
এমএইচএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।