ঢাকা, বুধবার, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ২৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ক্রিকেট

গ্যাংনামের ঘোড়া থামাবে কি সিংহরা?

মাজেদুল নয়ন, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬১৮ ঘণ্টা, এপ্রিল ৩, ২০১৪
গ্যাংনামের ঘোড়া থামাবে কি সিংহরা? মালিঙ্গা ও গেইল

ঢাকা: অজিদের বধ করে মিরপুরের মাঠে যে গ্যাংনামের ঘোড়া নেচেছিল, সেই ঘোড়াকে কি আজ থামাতে পারবে সিংহ কেশের ল্যাসিথ মালিঙ্গা? শক্ত প্রতিপক্ষকে বধ করে জটা চুলের দীর্ঘদেহী গেইল যদি আজো গ্যাংনাম নৃত্যে মেতে ওঠেন সেটা মেনে নেওয়া কষ্টকর হবে লঙ্কান ক্রিকেটার আর ভক্তদের।
 
এবারের বিশ্বকাপে এখনো স্বরূপে দেখা যায়নি গেইলকে।

৪ ম্যাচে মোট রান ১৪০। হাফ সেঞ্চুরি একটি থাকলেও ১১ টি চার আর ছয়টি ছক্কার পরিসংখ্যান বেমানান গেইলের নামের সঙ্গে। তবে ক্যাঙ্গারুদের দেশে ফেরত পাঠাতে কিন্তু ভুল করেননি গ্যাংনামের এই ঘোড়া। সেদিন ঠিকই ৫৩ রানের জ্বলমলে ইনিংস খেলে ফিঞ্চের মুখে চুনকালি লেপেছিলেন গেইল।
 
শ্রীলংকান সিংহ মালিঙ্গা কিন্তু এবারে অনুজ্জ্বল। তাকে মলিন করে দিয়েছেন স্পিনাররা। এক ম্যাচের সাড়ে ৩ ওভার বোলিংয়ে ৫ উইকেট নিয়ে নিউজিল্যান্ডকে ঘরে ফিরিয়েছে হেরাথ-এর স্পিন। আর কুলাসেকারাও ৪ ম্যাচে ৬ উইকেট নিয়েছেন।
 
তবে সেমিফাইনালে ওয়েস্ট ইন্ডিজ ইনিংসের প্রথম ওভারে হয়তো সিংহকেশী মালিঙ্গাই চুল ঝাকিয়ে বোলিং আক্রমনে নামবেন। কে বলতে পারে, এই দিনে তেতে উঠবেন না মালিঙ্গা! গ্যাংনামের ঘোড়াকে বধ করার কৃতিত্ব ঝোলায় পুরে নিতে পারলে বীর বনে যাবেন মালিঙ্গা। জ্বলে উঠলে ক্যারিবীয়দের দেশে ফেরাতে একাই যথেষ্ট মালিঙ্গা।
 
খেলাটা হবে স্পিনে:
বাংলাদেশ-অস্ট্রেলিয়ার ম্যাচ বাদে শেষ তিনটি ম্যাচে কিন্তু বোঝা গেছে খেলাটা এখন স্পিনারদের হাতে। মালিঙ্গা আর বদ্রিরা যদি সফল না হন তবে ব্যাটসম্যানদের চাপে রাখার দায়িত্ব পড়বে হেরাথ আর নারাইণের ওপর।
 
টি-টোয়েন্টিতে যে নারাইণ-বিস্ময় ইতিমধ্যেই দর্শক দেখেছে। ৪ ম্যাচে ৭২ রান দিয়ে ৬ উইকেট তুলে নেওয়া এই নারাইণকে খেলা যে কষ্টসাধ্য সেটা হাড়ে হাড়ে টের পেয়েছেন আফ্রিদিরা। আর হেরাথের সাড়ে তিন ওভারতো দুঃসহ স্মৃতি নিউজিল্যান্ডের কাছে।
 
ট্রফির হাতছানি
টানা দ্বিতীয়বারের মতো টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ট্রফি জয়ের স্বপ্নে বিভোর ওয়েস্ট ইন্ডিজ। অন্যদিকে প্রথমবারের মতো টি-টোয়েন্টির ট্রফিতে চুমু খেতে চান জয়বর্ধন আর সাঙ্গাকারারা।
 
ঘটন-অঘটনের মধ্য দিয়ে কোয়ালিফাইং রাউন্ড ও গ্রুপ পর্বের খেলা শেষ হয়েছে গত মঙ্গলবার। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের এবারের আসরের সমাপ্তি ঘটতে আর বাকি দুই পর্ব- সেমিফাইনাল ও ফাইনাল।

গ্রুপ পর্বে নিজেদের যোগ্যতা যাচাই করে ইতোমধ্যে সেমিফাইনাল নিশ্চিত করেছে শ্রীলঙ্কা, ওয়েস্ট ইন্ডিজ, দক্ষিণ আফ্রিকা ও ভারত। এবার লড়াই ফাইনালে ওঠার। অপেক্ষা কোন দুই দল উঠছে ফাইনালে।

এ লড়াই সামনে রেখে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৭টায় ঢাকার শেরেবাংলা জাতীয় ক্রিকেট মাঠে নামছে শ্রীলঙ্কা ও ওয়েস্ট ইন্ডিজ। জয়ী দল পাবে ফাইনালে খেলার টিকিট।

অপর সেমিফাইনালে শুক্রবার মাঠে নামবে ভারত ও দক্ষিণ আফ্রিকা। জয়ী দল ফাইনালে মুখোমুখি হবে প্রথম সেমিফাইনালে জয়ী দলের বিপক্ষে।

গ্রুপ পর্বের চার খেলার তিনটিতে জয়ী হয়ে গ্রুপ-১ থেকে সেমিফাইনালে ওঠে শ্রীলঙ্কা ও দক্ষিণ আফ্রিকা। সমান সংখ্যক পয়েন্ট হওয়ায় নেট রান রেটে এগিয়ে থাকায় গ্রুপ-১ চ্যাম্পিয়ন হয় শ্রীলঙ্কা।

এর ফলে গ্রুপ-২ এর দ্বিতীয় স্থান অর্জনকারী ওয়েস্ট ইন্ডিজের সঙ্গে খেলতে হবে তাদের।

এদিকে, গ্রুপ পর্বের সবগুলো খেলায় জয় পায় ভারত। ফলে গ্রুপ-২ থেকে গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হয়ে সেমিফাইনালে মুখোমুখি হবে গ্রুপ-১ এর দ্বিতীয় স্থান অর্জনকারী দক্ষিণ আফিকার।

তবে লক্ষ্যণীয় বিষয় এই, দু’টি সেমিফাইনালেই রয়েছে একটি করে দক্ষিণ এশিয়ার টিম।

যদি দু’টিতেই এশিয়ার টিম জয়ী হয় তবে এবারের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ থাকছে এশিয়ায়। টি-টোয়েন্টির পঞ্চম এ আসরের আগে প্রথম ও দ্বিতীয় আসরে চ্যাম্পিয়ন হয় বিশ্ব আসরে দুই ক্রিকেট পরাশক্তি ভারত ও পাকিস্তান।

তৃতীয়বার তা নিজেদের দখলে নেয় ইংল্যান্ড। আর সর্বশেষ ২০১২ সালে টি-টোয়েন্টি চ্যাম্পিয়ন হওয়ার গৌরব অর্জন করে ওয়েস্ট ইন্ডিজ।

এখন পর্যন্ত এবারের টি-টোয়েন্টিতে দুইবার টি-টোয়েন্টি চ্যাম্পিয়ন হওয়া সুযোগ রয়েছে ভারত ও ওয়েস্ট ইন্ডিজের।   আর প্রথম বারের মতো এ সুযোগ তৈরি হয়েছে শ্রীলঙ্কা ও ‘চোকার’ হিসেবে পরিচিত দক্ষিণ আফ্রিকার।

বাংলাদেশ সময়: ১৬২০ ঘণ্টা, এপ্রিল ৩, ২০১৪

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।