ঢাকা, বুধবার, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ২৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ক্রিকেট

বিশ্বকাপে ক্যারিবীয় ও আইরিশরা

ওয়ার্ল্ডকাপ ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৪০৫ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৬, ২০১৫
বিশ্বকাপে ক্যারিবীয় ও আইরিশরা ছবি: সংগৃহীত

ঢাকা: ওয়েস্ট ইন্ডিজ ইতিহাসের দল। ইতিহাসে তাদের নাম।

ক্রিকেট বিশ্বকাপ আসর প্রথম বসে ১৯৭৫ সালে। ইতিহাস গড়ে ক্রিকেট বিশ্বকাপের শিরোপাটা ঘরে নিয়ে যায় ক্যারিবীয় দেশটি। এর পরের আসর ১৯৭৯ সালে। সেবারও যেন চ্যাম্পিয়ন হতেই এসেছিল তারা। যেই কথা সেই কাজের মতো, আবরও বিশ্বকাপটা তাদেরই।  
 
২০১৫ আইসিসি ক্রিকেট বিশ্বকাপ, ১১তম আসর। এ আসরে নিজেদের প্রথম ম্যাচে আইসিসির সহযোগী দেশ আয়ারল্যান্ডের সঙ্গে সোমবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) ভোর ৪টায় মাঠে নেমেছে ক্যারিবীয়রা। তবে কপালে চিন্তার ভাজ নিয়ে। ডুয়ানে ব্রাভো ও কিয়েরন পোলার্ডের মতো গুরুত্বপূর্ণ দুইজন খেলোয়াড়কে দল থেকে বাদ দিয়ে নতুন বিতর্ক সঙ্গে নিয়েই যে প্রথম ম্যাচে নামতে হলো।
 
এদিকে এবারের বিশ্বকাপের সবচেয়ে সমস্যাবহুল দল হিসেবে বলা হচ্ছে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে। বিতর্কের ঝড়ো হাওয়ায় টালমাটাল দলটির মাঠের পারফরম্যান্সও যাচ্ছেতাই। বিশ্বকাপের প্রথম দুই আসরের চ্যাম্পিয়নরা এবার ফেভারিটের কাতারেই নেই। উল্টো শঙ্কা গ্রুপ পর্ব নিয়েই।
 
২০১৪ সালে বেতন-ভাতা নিয়ে বোর্ডের সঙ্গে দ্বন্দ্বের রেশে মাঝপথে ভারত সফর বাতিল করে টিম ওয়েস্ট ইন্ডিজ। তার জের ধরে আবার ডুয়ানে ব্রাভো ও কিয়েরন পোলার্ডের মতো গুরুত্বপূর্ণ দু’জন খেলোয়াড়কে বিশ্বকাপ দল থেকে বাদ দিয়ে নতুন বিতর্কের জন্ম দেয় ক্যারিবীয় ক্রিকেট বোর্ড। ব্রাভো বাদ পড়ায় অধিনায়ক করা হয়েছে ২৩ বছর বয়সী তরুণ পেসার জেসন হোল্ডারকে। অন্যদিকে প্রশ্নবিদ্ধ বোলিং অ্যাকশনের দোহাই দিয়ে সবাইকে অবাক করে বিশ্বকাপ দল থেকে নিজের নাম প্রত্যাহার করে নেন বিশ্বসেরা স্পিনার সুনীল নারিন। এতে ওয়েস্ট ইন্ডিজের সংকট আরও ঘনীভূত হয়েছে।
 
বিশ্বকাপ রেকর্ড
১৯৭৫: বিশ্বকাপ জয়, চ্যাম্পিয়ন,
১৯৭৯: বিশ্বকাপ জয়, চ্যাম্পিয়ন,
১৯৮৩: রানার্স আপ,
১৯৮৭: গ্রুপ পর্ব,
১৯৯২: গ্রুপ পর্ব,
১৯৯৬: সেমিফাইনাল,
১৯৯৯: গ্রুপ পর্ব,
২০০৩: গ্রুপ পর্ব,
২০০৭: সুপার এইট,
২০১১: কোয়ার্টার ফাইনাল।
 
তবে এবার বিশ্বকাপ দলে একঝাঁক তরুণ মারকুটে ব্যাটসম্যান আছে ওয়েস্ট ইন্ডিজের। নিজেদের দিনে যে কোনো দলকে যারা গুড়িয়ে দিতে পারেন। ডুয়ানে ব্রাভো ও পোলার্ডের অনুপস্থিতিতে এবার বাড়তি দায়িত্ব নিয়ে খেলতে হবে ক্রিস গেইল, মারলন স্যামুয়েলস ও ড্যারেন সামিকে। গত বছর খুব বেশি ম্যাচ না খেললেও গেইল ও সামির সামর্থ্য নিয়ে প্রশ্ন তোলার জো নেই। অন্যদিকে দুর্দান্ত ফর্মে থাকা স্যামুয়েলস গত বছর ১০১ গড়ে করেছেন ৩০৩ রান।
 
এছাড়া, ক্রিস গেইল তো দানবই। ব্রায়ান লারার পর ক্যারিবীয় ক্রিকেটের সবচেয়ে বড় তারকা তিনি। টেস্টও খেলেন টি২০ মেজাজে। বিশ্বকাপে ওয়েস্ট ইন্ডিজের সাফল্য অনেকাংশেই নির্ভর করবে গেইলের ওপর। সেজন্য ব্যাট হাতে নিয়মিতই তাকে রুদ্রমূর্তি ধারণ করতে হবে।
 
তবে ওয়েস্ট ইন্ডিজের সবচেয়ে বড় দুর্বলতা অধারাবাহিকতা। তাদের প্রায় সব খেলোয়াড়ই প্রতিভাবান কিন্তু অধারাবাহিক। বিশ্বকাপে ভালো কিছু করতে হলে ডুয়ানে স্মিথ, আন্দ্রে রাসেল, লেন্ডল সিমন্স, ড্যারেন ব্রাভো ও কেমার রোচকে নিয়মিতই জ্বলে উঠতে হবে। তবে বোলিংয়ে নারিনের শূন্যতা পূরণ করা যাবে না।
 
দিনেশ রামদিনকে বলা হচ্ছে এই দলের ডার্ক হর্স। টেস্ট দলের নেতৃত্ব পাওয়ার পর ওয়ানডেতেও তার পারফরম্যান্সের ধার বেড়ে গেছে। সেটা উইকেট কিপার ও ব্যাটসম্যান দু’ভূমিকাতেই। বিশ্বকাপে দলের নির্ভরতার প্রতীক হতে পারেন রামদিন। গত বছর ৫৭ দশমিক ৩৩ গড়ে করেছেন ৫১৬ রান।
 
 বিশ্বকাপে আইরিশরা
আইসিসির সহযোগী দেশগুলোর মধ্যে তর্কাতীতভাবে সবচেয়ে সম্ভাবনাময় দল আয়ারল্যান্ড। ২০০৭ সালে নিজেদের অভিষেক বিশ্বকাপেই পাকিস্তানের মরণঘণ্টা বাজিয়ে সুপার এইটে উঠে আয়ারল্যান্ড। শুধু তাই নয় ২০১১ বিশ্বকাপে ৩২৮ রান তাড়া করে ইংল্যান্ডকে হারিয়ে দেয় আইরিশরা।
 
টেস্ট মর্যাদা পাওয়ার দাবিটা জোরালো করতে এবারের আসরে আরও বড় চমক দেখাতে চায় দেশটি।
 
বিশ্বকাপ রেকর্ড
২০০৭: সুপার এইট,
২০১১: গ্রুপ পর্ব
 
ইংল্যান্ড জাতীয় দল ও বিভিন্ন কাউন্টি দলের কাছে নিজেদের সেরা ব্যাটসম্যানদের হারালেও আয়ারল্যান্ডের বড় শক্তি তাদের ব্যাটিং। অধিনায়ক উইলিয়াম পোর্টারফিল্ডসহ দলের পাঁচজন খেলোয়াড়ের এটি তৃতীয় বিশ্বকাপ। বিশ্বকাপের আগে দুবাইয়ে প্রস্তুতি সিরিজে তারা হারিয়েছে আফগানিস্তান ও স্কটল্যান্ডকে। এছাড়া ২০১৫ বিশ্বকাপ প্রস্তুতি ম্যাচে বাংলাদেশকে তারা ৪ উইকেটে হারিয়েছে।
 
ইংলিশ কাউন্টিতে খেলা দলের সেরা পেসার টিম মারটাগের অনুপস্থিতিতে কিছুটা হলেও ধার হারিয়েছে আইরিশ বোলিং আক্রমণ। পায়ের ইনজুরি বিশ্বকাপে দর্শক বানিয়ে দিয়েছে মারটাগকে। এছাড়া সাম্প্রতিক সময়ে কোনো বড় দলের বিপক্ষে নিজেদের পরখ করে দেখার সুযোগ পায়নি তারা।
 
কেভিন ও’ ব্রায়েন। চার বছর আগে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে বিশ্বকাপ ইতিহাসের দ্রুততম সেঞ্চুরিটি করেছিলেন। এখন তিনি দলের সব চেয়ে পরিণত ও অভিজ্ঞ খেলোয়াড় তিনি। ৮৪ ওয়ানডেতে ২ হাজার ১৭৮ রান করার পাশাপাশি নিয়েছেন ৬৮ উইকেট।
 
এদিকে দলে আছেন ক্রেগ ইয়ং। গত বছর স্কটল্যান্ডের বিপক্ষে অভিষেকেই পাঁচ উইকেট নিয়ে সবার নজর কাড়েন ২৪ বছর বয়সী এই মিডিয়াম পেসার। মাত্র ৬ ওয়ানডেতে ১৬ উইকেট নিয়ে দ্রুতই দলের বোলিং আক্রমণের অন্যতম ভরসা হয়ে উঠেছেন ইয়ং। অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ডের বাউন্সি উইকেটে তার চমক এখন দেখার অপেক্ষা।
 
বাংলাদেশ সময়: ০৪০৬ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৬, ২০১৫

** টস জিতে আয়ারল্যান্ড বোলিংয়ে

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।