ঢাকা, শনিবার, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ২৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ক্রিকেট

তামিমের পর অপেক্ষায় ইমরুল

স্পোর্টস করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬১৬ ঘণ্টা, মে ১, ২০১৫
তামিমের পর অপেক্ষায় ইমরুল ছবি: মানজারুল ইসলাম/বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

খুলনা থেকে: চতুর্থ দিন প্রথম সেশনে পাকিস্তানকে গুটিয়ে দিয়ে দ্বিতীয় সেশনে ফেভারিটের মতোই শুরু করে স্বাগতিকরা। দলকে উড়ন্ত সূচনা এনে দিয়ে তামিম আর ইমরুল দলকে এগিয়ে নিয়ে চলেছেন।

তৃতীয় ও শেষ সেশনে ব্যাট করছে টাইগার ওপেনাররা। পাকিস্তানের দেওয়া লিডকে শতরানের নিচে নামিয়ে এনেছে টাইগার ওপেনাররা।

তামিম তার শতক তুলে নিলে এবারে শতকের অপেক্ষায় রয়েছেন আরেক ওপেনার ইমরুল কায়েস। টানা দুই ইনিংসে দুটি অর্ধশতক করে ইমরুল তার টেস্ট ক্যারিয়ারের তৃতীয় অর্ধশতক তুলে নেন।

১১৫ রানে অপরাজিত রয়েছেন তামিম আর ইমরুল ৮৬ রান নিয়ে খেলছেন। এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত বাংলাদেশ কোনো উইকেট না হারিয়ে তুলেছে ২০২ রান।

পাকিস্তানের বিপক্ষে প্রথম ওয়ানডেতে ১৩২ রানের ইনিংস খেলার পর দলের দায়িত্বপ্রাপ্ত অধিনায়ক সাকিব আল হাসান বলেছিলেন, ‘তামিম খেলেছে তামিমের মতোই’। আজও তামিম তার স্বভাবসূলভ ভঙ্গিতে খেলে পাকিস্তানি বোলারদের নাস্তানাবুদ করে তাদের বিপক্ষে প্রথমবারের মতো টেস্টে অর্ধশতক তুলে নেন। ৩৮তম টেস্ট খেলতে নেমে জুলফিকার বাবরকে চার মেরে অর্ধশতক তুলে নিয়ে পরের বলেই বিশাল ছক্কা হাঁকান টাইগার এ বাঁহাতি ওপেনার। ৬৩ বলে ৭টি চারে তামিম অর্ধশতক পূর্ণ করেন।

অর্ধশতককে শতকে পরিণত করতে তামিমকে অপেক্ষা করতে হয়নি। স্বভাবসূলভ ভঙ্গিতে ব্যাট চালিয়ে টেস্ট ক্যারিয়ারের সপ্তম শতক পূর্ণ করেন তামিম। ১২৩ বল খেলে তামিম তিন অঙ্কের ম্যাজিক ফিগারে পৌঁছাতে ১১টি চার আর ৩টি ছক্কা হাঁকান।

এর আগে দিনের প্রথম সেশনের চার ওভার বাকি থাকতে রানের বোঝা মাথায় নিয়ে ব্যাটিংয়ে নামে স্বাগতিকরা। দলের হয়ে ব্যাটিং উদ্বোধন করতে আসেন তামিম ইকবাল এবং ইমরুল কায়েস। জুনায়েদ খানের করা ইনিংসের প্রথম বলেই লাইন মিস করেন তামিম। এলবি’র আবেদন হলে তাতে আম্পায়ার সাড়া দেননি। রিভিউ নিলেও ব্যর্থ হয় পাকিস্তানের আবেদনটি।

এরও আগে বড় লিডের দুঃশ্চিন্তা নিয়ে চতুর্থ দিন ফিল্ডিংয়ে নামে বাংলাদেশ। চেষ্টা ছিল প্রথম সেশনেই পাকিস্তানকে গুটিয়ে দেওয়া। ১৬৮.৪ ওভার বল করে ৬২৮ রানে সফরকারীদের আটকে দেয় স্বাগতিকরা। তাইজুলের ঘূর্ণিজাদুতে দিশেহারা হয়ে চতুর্থ দিনের প্রথম সেশনটি খেলতে পারে নি পাকিস্তান।

অলআউট হওয়ার আগে পাকিস্তান লিড নেয় ২৯৬ রান। তাইজুল একাই ৬টি উইকেট তুলে নেন। এছাড়া দুটি উইকেট পান শুভাগত হোম। আর সাকিব ও শহিদ পান একটি করে উইকেট।

চতুর্থ দিন প্রথম সেশনে দ্রুত উইকেট তুলে নেওয়ার চেষ্টা করে বাংলাদেশ। অভিষিক্ত শহিদের বলে তুলে মারতে গিয়ে লিটন দাশের তালুবন্দি হয়ে সাজঘরে ফেরত যান ৮২ রান করা সরফরাজ আহমেদ। আউট হওয়ার আগে আসাদ শফিকের সঙ্গে ১২৬ রানের জুটি গড়েন সরফরাজ।

এরপর নতুন ব্যাটসম্যান হিসেবে উইকেটে এসে তাইজুলের ঘূর্ণি জাদুতে সম্পূর্ণ পরাস্ত হয়ে সরাসরি বোল্ড হন ওয়াহাব রিয়াজ (০ রান)।

দ্বিতীয় ও তৃতীয় দিন উইকেট শুন্য থাকা সাকিব আল হাসান অবশেষে উইকেটের দেখা পান। টাইগারদের গলার কাটা হয়ে থাকা আসাদ শফিককে বোকা বানিয়ে নিজের বলে নিজেই ক্যাচ নিয়ে বিদায় করেন সাকিব। আউট হওয়ার আগে শফিক করেন ৮৩ রান। সাকিবের পর পাকিস্তান দলে আবারো হানা দেন তাইজুল। ক্যারিয়ারের পঞ্চম উইকেট নিতে তাইজুল বিদায় করেন ১৩ রান করা ইয়াসির শাহকে। এরপর জুলফিকার বাবরকে ফিরিয়ে ক্যারিয়ারের ষষ্ঠ উইকেট তুলে নেন তাইজুল।

প্রথম টেস্টের তৃতীয় দিন শেষে স্বাগতিকদের থেকে ২০৫ রান এগিয়ে থেকে চতুর্থ দিন শুরু করে সফরকারীরা। মোহাম্মদ হাফিজের মহাকাব্যিক ডাবল সেঞ্চুরি আর আজহার আলি, মিসবাহ, আসাদ শফিক, সরফরাজ, ইউনিসদের ব্যাটিং দৃঢ়তায় স্বাগতিকদের প্রথম ইনিংসে করা ৩৩২ রানের জবাবে বড় লিড নেয় পাকিস্তান।

তৃতীয় দিনশেষে সফরকারীদের সংগ্রহ ৫ উইকেট হারিয়ে ৫৩৭ রান। আসাদ শফিক ৫১ রান আর সরফরাজ আহমেদ ৫১ রান নিয়ে অপরাজিত থেকে তৃতীয় দিন শেষ করেন। এ দু’জন মিলে আরও ৬৯ রানের জুটি গড়ে তোলেন। চতুর্থ দিন এখান থেকেই শুরু করে সফরকারীরা।

তৃতীয় দিন মাত্র ৪টি উইকেট হারিয়ে দ্বিতীয় দিনের সঙ্গে আরও ৩১০ রান যোগ করে পাকিস্তান। এর আগে ১০৫ রানে পিছিয়ে থেকে মিসবাহ বাহিনী তৃতীয় দিন শুরু করে। স্বাগতিক বোলারদের অপেক্ষায় রেখে এগিয়ে চলে পাকিস্তানের ইনিংস।

তৃতীয় দিন শুভাগতের বলে সরাসরি বোল্ড হয়ে সাজঘরে ফেরেন ৮৩ রান করা আজহার আলি। মোহাম্মদ হাফিজের সঙ্গে তাল মিলিয়ে ২২৭ রানের বড় জুটিও গড়েন আজহার। দু’জন মিলে টাইগার বোলারদের ৬০ ওভার অপেক্ষায় রাখেন।

এরপর তাইজুলের শিকারে সাজঘরে ফেরেন ইউনিস খান। ব্যক্তিগত ৩৩ রান করে তাইজুলের ঘূর্ণিতে পরাস্ত হয়ে সরাসরি বোল্ড হন ইউনিস। ইউনিসকে নিয়ে হাফিজ ৬২ রানের জুটি গড়েন। ডাবল সেঞ্চুরি হাঁকানো মোহাম্মদ হাফিজকে ফেরান স্পিনার শুভাগত হোম। ২২৪ রানের মহাকাব্যিক ইনিংস খেলার পর পাকিস্তানি এ ওপেনার মাহমুদ্দুল্লাহ রিয়াদকে ক্যাচ দিয়ে প্যাভিলিওনে ফেরেন। তিনি ৩৩২ বলে ২৩টি চার আর তিনটি ছক্কায় এ ইনিংসটি সাজান। আউট হওয়ার আগে মিসবাহর সঙ্গে ৬৩ রানের জুটি গড়েন হাফিজ।

পঞ্চম ব্যাটসম্যান হিসেবে বিদায় নেন পাকিস্তান দলপতি মিসবাহ। ব্যক্তিগত ৫৯ রান করে রুবেল হোসেনের তালুবন্দি হন মিসবাহ। মিসবাহ-আসাদ শফিক জুটি থেকে আসে আরও ৬৬ রান।

এর আগে টেস্টের প্রথম দিন চার উইকেট হারিয়ে বাংলাদেশ সংগ্রহ করে ২৩৬ রান। দ্বিতীয় দিন ব্যাটিংয়ে নেমে আগের দিনের সঙ্গে আর মাত্র ৯৬ রান যোগ করতেই অলআউট হয়ে যায় মুশফিক বাহিনী। দলের পক্ষে সর্বোচ্চ ৮০ রান করেন মমিনুল হক। এছাড়া টাইগার ওপেনার ইমরুল কায়েস ৫১, মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ ৪৯, সৌম্য সরকার ৩৩, মুশফিক ৩২, তামিম ২৫ ও সাকিব ২৫ রান করেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৬১৬ ঘণ্টা, ০১ মে ২০১৫
এমআর

** তিন অঙ্কের ম্যাজিক ফিগারে তামিম
** পাকিস্তানের বিপক্ষে তামিমের প্রথম শতক
** দুরন্ত তামিম-ইমরুলের উড়ন্ত সূচনা
** ইমরুলের টানা অর্ধশতক, শতকের অপেক্ষায় তামিম
** তামিমের ঝড়ো ব্যাটিং
** তামিমের দারুণ অর্ধশতক
** ওয়ানডে স্টাইলে তামিমের ব্যাটিং
** উইকেটে তামিম-ইমরুল
** রানের বোঝা নিয়ে ব্যাটিংয়ে স্বাগতিকরা
** তাইজুল ৫, পাকিস্তান ৯
** সাকিবের বলে শফিকের বিদায়
** সাজঘরে সরফরাজ, ওয়াহাব রিয়াজ
** উইকেটের দেখা নেই স্বাগতিকদের
** ম্যাচে ফিরতে নেমেছে স্বাগতিকরা

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।