ঢাকা, বুধবার, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ২৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ক্রিকেট

বিসিবি একাদশকে হারিয়েই দিল জিম্বাবুয়ে

স্পোর্টস করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬৫৬ ঘণ্টা, নভেম্বর ৫, ২০১৫
বিসিবি একাদশকে হারিয়েই দিল জিম্বাবুয়ে ছবি : শোয়েব মিথুন/বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

ফতুল্লা থেকে: ব্যাটিংয়ে ভালো করলেও বোলিংয়ে তেমন কিছু করে দেখাতে না পারায় প্রস্তুতি ম্যাচে মাশুল দিতে হলো মাশরাফির নেতৃত্বে খেলতে নামা বিসিবি একাদশকে। ২০ বল হাতে রেখেই স্বাগতিকদের ৭ উইকেটে হারিয়ে দিয়েছে সফরকারীরা।



বিসিবি একাদশের করা ৮ উইকেটের বিনিময়ে ২৭৭ রানকে ৪৬.৪ ওভার খেলে মাত্র ৩ উইকেট হারিয়ে জয়ের বন্দরে পৌঁছে যায় জিম্বাবুইয়ানসরা। আফগানিস্তানের বিপক্ষে ঘরের মাঠে সিরিজ হেরে এসে টাইগারদের বিপক্ষে ভালোই লড়াই চালিয়ে ম্যাচটি জিতে নেয় তারা।

প্রস্তুতিমূলক ম্যাচে ব্যাটিং অনুশীলনটা ভালোভাবেই সেরে নেয় জাতীয় দলের ক্রিকেটাররা। ইমরুল কায়েস, এনামুল হক বিজয় আর মুশফিকুর রহিমের দারুণ ব্যাটিংয়ে নির্ধারিত ৫০ ওভার শেষে বিসিবি একাদশ ৮ উইকেট হারিয়ে তোলে ২৭৭ রান। তিন ব্যাটসম্যানই অর্ধশতক করেন।

সকাল ৯টায় জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে একমাত্র প্রস্তুতি ম্যাচে মাঠে নামে মাশরাফি বিন মর্তুজার বিসিবি একাদশ। ফতুল্লার খান সাহেব ওসমান আলী স্টেডিয়ামে টাইগারদের মুখোমুখি হয় এলটন চিগুম্বুরার দল। টস জিতে আগে ফিল্ডিং করার সিদ্ধান্ত নেয় সফরকারীরা। বাংলাদেশের হয়ে ব্যাটিং উদ্বোধন করতে নামেন ইমরুল কায়েস এবং এনামুল হক বিজয়। জাতীয় দলের ওয়ানডে স্কোয়াড থেকে প্রায় ছিটকে পড়া এই দুই ওপেনার উদ্বোধনী জুটি থেকেই তুলে নেন ১০৫ রান।

নিজে থেকেই প্রস্তুতি ম্যাচে খেলতে চেয়েছিলেন মুশফিকুর রহিম। আর যে কারণে প্রস্তুতি ম্যাচে মাঠে নামা, সেই ব্যাটিং অনুশীলনের প্রায় ষোলো আনাই সেরে নেন তিনি। ইনিংস সর্বোচ্চ রান করতে মুশফিক ৮৪ বলে ৫টি চার আর ২টি ছক্কায় করেন অপরাজিত ৮১ রান।

জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে নিজের অর্ধশতক তুলে নিয়ে বিদায় নেন ইমরুল কায়েস। তার বিদায়ে নামেন লিটন দাস। আরেক ওপেনার এনামুল হক অর্ধশতক হাঁকিয়ে সাজঘরে ফেরেন। এরপর ব্যাটিং ক্রিজে নামেন মুশফিকুর রহিম।

ইমরুল ৬৪ বল মোকাবেলা করে ৫টি চারের পাশাপাশি দুটি ছক্কা হাঁকিয়ে করেন ৫৬ রান। ক্রেমারের বলে বদলি ফিল্ডার ওয়ালারের তালুবন্দি হন তিনি। শুরুর দিকে কিছু সময় নিলেও বিজয় ৬১ বলে ৭টি চার আর একটি ছক্কায় ৫২ রান করে ক্রেমারের বলে স্ট্যাম্পিংয়ের ফাঁদে পড়েন।

দলীয় ১৪৪ রানে লিটন কুমার দাশের উইকেট হারায় বিসিবি একাদশ। ব্যক্তিগত ২৫ রানে ক্রেমারের তৃতীয় শিকার হন এ ডানহাতি ব্যাটসম্যান। ২৩ বলে একটি চার ও দুটি ছক্কায় লিটন তার ইনিংসটি সাজান। লিটনের পর ব্যাটিংয়ে নামেন সাব্বির রহমান। মাত্র ৩ রান করে লুক জঙ্গোর বলে বিদায় নেন তিনি।

দলীয় ১৪৯ রানের মাথায় টপঅর্ডারের চার ব্যাটসম্যানকে হারিয়েও দারুণভাবে এগিয়ে চলে স্বাগতিক বিসিবি একাদশ।

শাহরিয়ার নাফিস প্রথম শ্রেণির ম্যাচে সর্বশেষ ১৫ ইনিংস ব্যাট করে ৭৭.৭৭ গড়ে রান করেছেন ১০১১। ব্যাট হাতে ধারাবাহিকতার পুরস্কার হিসেবে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে প্রস্তুতি ম্যাচে ডাক পেয়ে সুযোগটা দারুণ কাজে লাগান তিনি। জিম্বাবুয়েকে পেলে শাহরিয়ারের ব্যাট আরও চওড়া হয়ে ওঠে তা প্রমাণ করতে সর্বশেষ ম্যাচে ৩৪২ রান করা নাফিস খেলেছেন ৩৮ রানের ইনিংস। ৩৮ বলে চারটি চার আর একটি ছক্কা হাঁকান তিনি। স্বভাবসূলভ ওপেনিং ছেড়ে ছয় নম্বরে ব্যাটিংয়ে এসে আউট হওয়ার আগে মুশফিকের সঙ্গে ৯০ রানের জুটি গড়েন নাফিস।

এরপর ব্যাটিংয়ে নেমে দলপতি মাশরাফি ১ রান করে রান আউট হন। মাশরাফির পর ব্যাট হাতে নামেন ইরফান শুক্কুর। জঙ্গোর তৃতীয় শিকার হওয়ার আগে তার ব্যাট থেকে আসে ২ রান। সাঞ্জামুলের ব্যাট থেকে আসে ১১ রান।   শেষ ১০ ওভারে রান আসে মাত্র ৬৪।

১৬ জনের এই ম্যাচে জিম্বাবুয়ে বোলার হিসেবে ব্যবহার করেছে ১০ জনকে। দলের হয়ে তিনটি করে উইকেট তুলে নেন জঙ্গো এবং ক্রেমার।

বিসিবি একাদশের হয়ে মাশরাফির সঙ্গে বোলিং উদ্বোধনে আসেন শফিউল ইসলাম। ২৭৮ রানের টার্গেটে নামা জিম্বাবুয়ের ওপেনার মুতুম্বামিকে দলীয় ২৭ রানের মাথায় সাজঘরে ফিরিয়ে দেন শফিউল। সাব্বির রহমানের তালুবন্দি হয়ে ফেরার আগে এ ওপেনার করেন ৪ রান। এরপর আক্রমণে এসেই আরেক ওপেনার চিভাবাকে বিদায় করেন সাঞ্জামুল ইসলাম। শফিউলের তালুবন্দি হয়ে চিভাবা আউট হওয়ার আগে ৩৭ বলে চারটি চার আর একটি ছক্কায় করেন ৩৪ রান। দলীয় ৫১ রানে দুই ওপেনারকে হারায় তারা।

ব্যক্তিগত ৫৪ রান করে রিটায়ার্ড হার্ট হয়ে ফেরেন শেন উইলিয়ামস। ৫৭ বলে ৫টি চার আর একটি ছক্কা হাঁকিয়ে তিনি ইনিংসটি সাজান। ১২৫ রানের জুটি গড়ে প্রতিরোধের চেষ্টা করেন আরভিন আর উইলিয়াসম।

বিসিবি একাদশের গলার কাঁটা হয়ে থাকা ক্রেইগ আরভিনকে অবশেষে ফিরিয়ে দেন সাঞ্জামুল ইসলাম। নিজের দ্বিতীয় শিকার তুলে নিতে আরভিনকে ৪০তম ওভারে সাব্বির রহমানের তালুবন্দি করেন তিনি। আউট হওয়ার আগে ৯৯ বলে ৯টি চার আর একটি ছয়ে আরভিন করেন ৯৫ রান।

সিকান্দার রাজা ১৮ বলে অপরাজিত ২২ রান করেন। আর দলপতি এলটন চিগুম্বুরা ৪৯ বলে ৪টি চার আর ৩টি ছক্কায় করেন অপরাজিত ৬৪ রান।

আগামী ৭, ৯ ও ১১ নভেম্বর  মিরপুর শের-ই-বাংলা স্টেডিয়ামে তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজে মুখোমুখি হবে দু’দল। একই ভেন্যুতে ১৩ ও ১৫ নভেম্বর সিরিজের টি-টোয়েন্টি ম্যাচ দুটি অনুষ্ঠিত হবে।
 
বাংলাদেশ সময়: ১৬৫৬ ঘণ্টা, ০৫ নভেম্বর ২০১৫
এমআর

** আরভিনকে ফেরালেন সাঞ্জামুল
** উইকেটের অপেক্ষায় বিসিবি একাদশ
** ভালোই জবাব দিচ্ছে জিম্বাবুয়ে
** প্রতিরোধের চেষ্টায় সফরকারীরা
** জিম্বাবুয়ের দুই ওপেনার সাজঘরে
** শফিউলের আঘাতে জিম্বাবুয়ের ওপেনার সাজঘরে
** ফিল্ডিংয়ে বিসিবি একাদশ
** মুশফিক-বিজয়-ইমরুলের ব্যাটে বিসিবির সংগ্রহ ২৭৭
** মুশফিকের ব্যাটে এগুচ্ছে বিসিবি একাদশ
** ইমরুল-বিজয়ের পর মুশফিকের অর্ধশতক
** টপঅর্ডারের চার ব্যাটসম্যানের বিদায়
** লিটনের উইকেট হারাল বিসিবি একাদশ
** ইমরুলের পর বিজয়ের বিদায়
** ইমরুলের অর্ধশতক, অপেক্ষায় বিজয়
** ধীর গতিতে শুরু টাইগারদের

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।