ঢাকা, বুধবার, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ২৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ক্রিকেট

জিম্বাবুয়ের নাটকীয় জয়ে সিরিজে সমতা

স্পোর্টস ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০৫৯ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৫, ২০১৫
জিম্বাবুয়ের নাটকীয় জয়ে সিরিজে সমতা ছবি: বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

শেষ ওভারের নাটকীয়তায় টাইগারদের হতাশ করে জয় ছিনিয়ে নিয়েছে জিম্বাবুয়ে। ম্যাচে জিততে হলে শেষ ওভারে জিম্বাবুয়ের প্রয়োজন ছিল ১৮ রান।

বোলিংয়ে এলেন নাসির হোসেন। ওভারের প্রথম বলে সমর্থকদের উন্মত্ত করে তুলে নিলেন বিধ্বংসী ওয়ালারের উইকেট। আকাঙ্ক্ষিত জয়ের প্রত্যাশায় তখনই গ্যালারি জুড়ে টাইগার সমর্থকরা জয়ের উল্লাসে মেতে ওঠেছেন!

কিন্তু না, নাটকীয়তার বাকি ছিল তখনও। ওভারের দ্বিতীয় বলে নাসির হোসেনের বলটিকে কভার অঞ্চলের উপর দিয়ে তুলে মেরে বিশাল ছক্কা হাঁকান নেভিল মাদজিভা। এর পরের দুটি বল থেকে একটি বাউন্ডারি ও ডাবল নিয়ে স্ট্রাইকে থেকে যান তিনি।

শেষ দুই বলে জিম্বাবুয়ের প্রয়োজন ৬ রান। ওভারের পঞ্চম বলটিকে সজোরে তুলে মারলেন ডানহাতি জিম্বাবুইয়ান ব্যাটসম্যান। গ্যালারিতে তখন ক্যাচ ক্যাচ মাতম। মিরপুরের আকাশ ছুঁয়ে এসে বলটি পড়ল সীমানার বাইরে।

বিশাল ওই ছক্কার মাধ্যমে বাংলাদেশের বিপক্ষে আড়াই বছরের জয় পেলো জিম্বাবুয়ে। শেষ ওভারে নায়কোচিত ব্যাট করে জিম্বাবুয়েকে ৩ উইকেটের জয় এনে দেওয়ায় ম্যাচসেরা হন নেভিল মাদজিভা।

জিম্বাবুয়ের ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারেই জোড়া আঘাত হানেন বাংলাদেশকে শুভ সূচনা এনে দেন পেসার আল আমিন। নিজের প্রথম ওভারের প্রথম বলে সিকান্দার রাজাকে সাজঘরে ফেরানোর পরের বলেই বোল্ড আউট করে দেন শন উইলিয়ামসকে।

আল আমিনের জোড়া আঘাত সামলে ওঠার আগেই ইনিংসের প্রঞ্চম ওভারে বল করতে এসে নিজের দ্বিতীয় বলেই উইকেট শিকার করেন মুস্তাফিজ। তাকে তুলে মারতে গিয়ে সাব্বির রহমানের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন রেগিস চাকাভা।

মাত্র ১৫ রানে ৩ উইকেট হারানো জিম্বাবুয়ের ইনিংসটিকে মেরামতের চেষ্টা করেন ক্রেইগ এরভিন ও লুক জঙ্‌গুয়ে। ইনিংসের ৭ম ওভারে আরাফাত সানির বলে স্ট্যাম্পিংয়ের হাত থেকে এরভিন বেঁচে গেলেও ৮ম ওভারে তিনি রানআউট হয়ে সাজঘরে ফেরেন।

নবম ওভারে বোলিংয়ে এসে জিম্বাবুয়ের অধিনায়ক এলটন চিগুম্বুরাকে মাহমুদুল্লাহর ক্যাচে পরিণত করেন আরাফাত সানি। রানের খাতা না খুলেই সাজঘরে ফেরেন চিগুম্বুরা।

৩৯ রানে ৫ উইকেট হারানো জিম্বাবুয়েকে টেনে তোলার চেষ্টা করেন ম্যালকম ওয়ালার ও লুক জঙ্‌গুয়ে জুটি। ক্রমাগত বিপদজনক হয়ে ওঠা ৫৫ রানের এই জুটি ভাঙেন আল আমিন হোসেন। ১৬তম ওভারের তৃতীয় বলে ৩৪ রান করা জঙ্‌গুয়েকে সাজঘরে ফেরিয়ে দলকে গুরুত্বপূর্ণ ব্রেক-থ্রু এনে দেন তিনি।

অপরপ্রান্তে বিধ্বংসী ব্যাট করে জিম্বাবুয়েকে জয়ের কাছাকাছি নিয়ে যান গত ম্যাচের নায়ক ম্যালকম ওয়ালার। তবে ম্যাচের শেষ ওভারের প্রথম বলে নাসিরকে তুলে মারতে গিয়ে আউট হন তিনি। আউট হওয়ার আগে ২৪ বল মোকাবেলায় ৪০ রান করেন তিনি।

অন্যদিকে বাংলাদেশি সমর্থকদের কাঁদিয়ে শেষ ওভারে ১৮ রান তুলে জিম্বাবুয়েকে নাটকীয় জয় এনে দেন নেভিল মাদজিভা। তার ব্যাট থেকে আসে গুরুত্বপূর্ণ ২৮টি রান।

বাংলাদেশের পক্ষে দুর্দান্ত বল করে ৪ ওভারে ২০ রান খরচে ৩ উইকেট নেন আল আমিন। বাঁহাতি পেসার মুস্তাফিজ ৪ ওভারে মাত্র ১২ রান খরচ করে নেন ১টি উইকেট।

এর আগে রোববার (১৫ নভেম্বর) বিকেলে মিরপুরের শেরে বাংলা ক্রিকেট স্টেডিয়ামে টসে জিতে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নেন টাইগার অধিনায়ক মাশরাফি বিন মুর্তজা।

ইমরুল কায়েস ও তামিম ইকবালের উদ্বোধনী জুটি ইতিবাচকভাবে ইনিংসের সূচনা করে। ৩৪ রানের এই জুটি ভাঙেন জিম্বাবুয়ের মিডিয়াম-ফাস্ট বোলার নেভিল মাদজিভা। তার বলে উড়িয়ে মারতে গিয়ে চিগুম্বুরার হাতে ধরা পড়েন ২১ রান করা তামিম।

তামিমের বিদায়ের পরে ওভারেই সাজঘরের পথ ধরেন আরেক উদ্বোধনী ব্যাটসম্যান ইমরুল। ইনিংসের পঞ্চম ওভারে টেন্ডাই চিসোরোর বলে অফসাইডে দাঁড়ানো শন উইলিয়ামসের কাছে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন তিনি। লিটন দাশের পরিবর্তে টি-টোয়েন্টি দলে জায়গা পাওয়া ইমরুল করেন ১০ রান।

পাঁচ ওভারে দুই উইকেট হারানো টাইগার শিবিরে এরপর আঘাত হানেন গ্রায়েম ক্রেমার। নবম ওভারে বল করতে এসে নিজের প্রথম বলেই মুশফিককে ফিরিয়ে দেন এই লেগব্রেক বোলার।

এরপর এনামুল হক বিজয় ও সাব্বির রহমানের ব্যাটে ইনিংসটিকে মেরামত করার চেষ্টা করে বাংলাদেশ। সতর্কভাবে ব্যাট করা এই জুটি ভাঙেন ক্রেমার। ১৫তম ওভারের দ্বিতীয় বলে সাব্বিরকে এলবিডব্লিউর ফাঁদে ফেলেন তিনি। আউট হওয়ার আগে সাব্বির ১৮ বল মোকাবেলা করে সংগ্রহ করেন ১৭ রান।  

এরপর ক্রিজে আসা নাসির হোসেনকে সঙ্গে নিয়ে রানের চাকা সচল করার চেষ্টা করেন ক্রিজে থিতু হওয়া ব্যাটসম্যান বিজয়। কিন্তু পানিয়াঙ্গারার বলে ব্যাটের কানায় লেগে বোল্ড হয়ে সাজঘরে ফেরেন নাসির হোসেন।

নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারানো বাংলাদেশ শেষ চার ওভারের প্রতিটিতে হারায় একটি করে উইকেট। ১৭তম ওভারে মাহমুদুল্লাহ, ১৮তম ওভারে মাশরাফি, ১৯তম ওভারে আরাফাত সানি এবং শেষ ওভারে রান আউট হয়ে সাজঘরে ফেরেন দলের পক্ষে সর্বোচ্চ রান করা এনামুল হক বিজয়।

৪৭ রান করা বিজয় ইনিংস শুরু করেন অতি রক্ষণাত্মক ভঙ্গিতে। এরপর ওয়ানডে স্টাইলে ব্যাট চালিয়ে ৫১ বল মোকাবেলা করে তিনি সংগ্রহ করেন ৪৭ রান।

বিজয় ৪৭, তামিম ২১ এবং সাব্বিরের ১৭ রানে ভর করে ২০ ওভার শেষে ৯ উইকেট হারিয়ে বাংলাদেশ স্কোর বোর্ডে জমা করে ১৩৪ রানে স্বল্প পুঁজি।

জিম্বাবুয়ের পক্ষে টিনাশি পানিয়াঙ্গারা ৩ উইকেট এবং নেভিল মাদজিভা নেন ২টি উইকেট। এছাড়া স্পিনার গ্রায়েম ক্রেমার ৪ ওভার বল করে মাত্র ২১ রান খরচে নেন ২টি উইকেট।

বাংলাদেশ সময়: ২১০১ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৫, ২০১৫
এমজেএফ/  

** সমতায় শেষ টি-টোয়েন্টি সিরিজ
** ১৯ ওভারে জিম্বাবুয়ে ১১৮
** আল আমিনের তৃতীয় শিকারে সাজঘরে জঙ্গো
** জিম্বাবুয়ে ১৫ ওভারে ৯৩/৫
** সফরকারীদের পঞ্চম ব্যাটসম্যান সাজঘরে
** ৬ ওভারে জিম্বাবুয়ে ২৫/৩
** মুস্তাফিজের আঘাতে সাজঘরে চাকাভা
** ফিল্ডিংয়ে টাইগাররা
** বাংলাদেশের সংগ্রহ ১৩৫
** স্বাগতিকদের অষ্টম ব্যাটসম্যানের বিদায়
** চতুর্থ উইকেট হয়ে সাব্বিরের বিদায়
** মুশফিকের বিদায়
** তামিমের পর ফিরলেন ইমরুল
** দারুণ শুরুর পর ফিরলেন তামিম
** ব্যাটিংয়ে নেমেছেন তামিম-ইমরুল
** টসে জিতে ব্যাটিংয়ে টাইগাররা
** শেষটাও রাঙিয়ে দিতে মাঠে নামছে টাইগাররা

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।