ঢাকা: ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়ন শ্রীলঙ্কাকে হারিয়ে ফাইনালের পথে আরও একধাপ এগিয়ে গেলো বাংলাদেশ। এ ম্যাচে জয়ের কোনো বিকল্প ছিল না লাল-সবুজদের।
ফাইনালের দৌড়ে এগিয়ে থাকতে টস জিতে এ ম্যাচে আগে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নেন টাইগারদের দলপতি মাশরাফি। দুই দলের মহাগুরুত্বপূর্ণ এ ম্যাচটি শুরু হয় সন্ধ্যা সাড়ে সাতটায়।
শুরুতে টপঅর্ডারের তিন ব্যাটসম্যানকে হারালেও সাব্বির রুম্মনের ঝোড়ো ব্যাটিংয়ে টাইগারদের সংগ্রহ দাঁড়ায় ১৪৭ রান। নির্ধারিত ২০ ওভারে বাংলাদেশ হারায় ৭টি উইকেট। জবাবে, ৮ উইকেট হারিয়ে ১২৪ রানে থামে লঙ্কানদের ইনিংস।
টস জিতে টাইগারদের হয়ে ব্যাটিং উদ্বোধন করতে নামেন সৌম্য সরকার ও মোহাম্মদ মিঠুন। ইনিংসের প্রথম ওভারের দ্বিতীয় বলেই ম্যাথুজ এলবির ফাঁদে ফেলে ফিরিয়ে দেন মিঠুনকে। প্রথম দুই ওভারে দুই ওপেনারকে হারায় বাংলাদেশ। প্রথম ওভারে মিঠুন ফিরে যাওয়ার পর দ্বিতীয় ওভারে কুলাসেকারার বলে ম্যাথুজের হাতে মিডঅফে ক্যাচ তুলে বিদায় নেন সৌম্য সরকার। দুই ওপেনার ফেরেন শূন্য রানে।
শুরুতে দুই ওপেনারকে হারালেও দারুণ ব্যাট করতে থাকেন সাব্বির রহমান এবং মুশফিকুর রহিম। তবে, ইনিংসের পঞ্চম ওভারে দুই ব্যাটসম্যানের ভুল বোঝাবুঝিতে রান আউটের ফাঁদে পড়েন ৪ রান করা মুশফিক। দলীয় ২৬ রানের মাথায় টপঅর্ডারের তিন উইকেট হারায় স্বাগতিকরা।
এরপর ব্যাটে ঝড় তোলেন সাব্বির রহমান। ৫৪ বলে দশটি চার আর তিনটি ছক্কায় তিনি করেন ৮০ রান। ইনিংসের ১৬তম ওভারে চামিরার বলে জয়সুরিয়ার তালুবন্দি হন তিনি। এর আগে নিজের টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ারে তৃতীয় অর্ধশতক তুলে নেন সাব্বির। ৩৮ বলে হাফসেঞ্চুরি পূর্ণ করেন সাব্বির। সাব্বির-সাকিব স্কোরবোর্ডে আরও ৮২ রান যোগ করেন (৬৭ বলে)।
ইনিংসের ১৮তম ওভারে সাব্বিরের পর ৩৪ বলে ৩২ রান করে ফেরেন সাকিব। তার ব্যাট থেকে আসে তিনটি বাউন্ডারি। চামিরার বলে উইকেটের পেছনে ক্যাচ তুলে দেন সাকিব।
মাহামুদুল্লাহ রিয়াদ অপরাজিত থাকেন ১২ বলে ২৩ রান করে। আর মাশরাফি ২ রান করেন।
ইনিংসের শেষ ওভারে নুরুল হাসান সোহান ২ রান করে বিদায় নেন।
আরব আমিরাতের বিপক্ষে খেলা দলটিকেই রেখে দেয় বাংলাদেশ। উইনিং কম্বিনেশনে বদল আনেনি স্বাগতিকরা। চার পেসার নিয়েই মাঠে নামবে তারা। ইনজুরির কারণে শ্রীলঙ্কা দলে খেলছেন না টি-টোয়েন্টির বিধ্বংসী বোলার লাসিথ মালিঙ্গা। তার পরিবর্তে দলে আসেন থিসারা পেরেরা। আর এ ম্যাচে অধিনায়কত্ব করেন ২০১৩ সালে সবশেষ টি-টোয়েন্টিতে অধিনায়কত্ব করা অ্যাঞ্জেলো ম্যাথুস।
বাংলাদেশের হয়ে বোলিং শুরু করেন তাসকিন আহমেদ। ১৪৮ রানের টার্গেটে লঙ্কানদের হয়ে ব্যাটিং উদ্বোধন করতে নামেন দিলশান ও চান্দিমাল। ইনিংসের চতুর্থ ওভারে বোলিং আক্রমণে এসেই ১২ রান করা দিলশানকে ফেরান সাকিব। সৌম্য সরকারের অসাধারণ এক ক্যাচে ফেরেন দিলশান। প্রথম ওভারেই জীবন ফিরে পান চান্দিমাল। সৌম্য সরকার তার ক্যাচটি তালুবন্দি করতে পারেননি। দ্বিতীয় ওভারে আল আমিনের বলে স্লিপে দাঁড়ানো মাহামুদুল্লাহ জীবন পাইয়ে দেন দিলশানকে।
দলীয় ২০ রানের মাথায় দিলশানকে হারায় লঙ্কানরা। উইকেটে থেকে জয়সুরিয়া ও চান্দিমাল দলকে এগিয়ে নিতে থাকেন। তবে, ইনিংসের ১১তম ওভারে মাহামুদুল্লাহ রিয়াদ ফিরিয়ে দেন ওয়েলসেট চান্দিমালকে। তাসকিনের হাতে ধরা পড়ার আগে তিনি ৩৭ বলে ৩৭ রান করেন। পরের ওভারে সাকিব ফেরান আরেক সেট ব্যাটসম্যান জয়সুরিয়াকে। স্ট্যাম্পিং হওয়ার আগে তিনি করেন ২২ বলে ২৬ রান।
১৩তম ওভারে মুস্তাফিজের কাটারে এলবির ফাঁদে পড়েন থিসারা পেরেরা (৪)। ১৫তম ওভারে মাশরাফি ফেরান শ্রীবর্ধানেকে। সাব্বিরের হাতে ধরা পড়েন তিনি।
১৮তম ওভারের প্রথম বলে ম্যাথুজকে ফিরিয়ে দেন আল আমিন। সাকিবের হাতে ধরা পড়ার আগে তিনি করেন ১২ রান। শেষ ওভারের প্রথম বলে আল আমিন ফেরান ১৪ বলে ১৪ রান করা শানাকাকে। তৃতীয় বলে কুলাসেকারাকে ফিরিয়ে দেন আল আমিন।
টাইগারদের হয়ে সাকিব দুটি উইকেট নেন। একটি করে উইকেট পান মুস্তাফিজ, মাশরাফি ও মাহামুদুল্লাহ।
আগামী ০২ মার্চ পাকিস্তানের বিপক্ষে মাঠে নামবে বাংলাদেশ।
বাংলাদেশ একাদশ: সৌম্য সরকার, মোহাম্মদ মিঠুন, সাব্বির রহমান, মুশফিকুর রহিম, সাকিব আল হাসান, মাহমুদুল্লাহ, নুরুল হাসান (উইকেটরক্ষক), মাশরাফি বিন মুর্তজা (অধিনায়ক), আল-আমিন হোসেন, মুস্তাফিজুর রহমান ও তাসকিন আহমেদ।
শ্রীলঙ্কা একাদশ: দিনেশ চান্দিমাল, তিলকারত্নে দিলশান, মিলিন্ডা শ্রীবর্ধানে, দাসুন শানাকা, অ্যাঞ্জেলো ম্যাথুজ, চামারা কাপুগেদারা, সিহান জয়সুরিয়া, নুয়ান কুলাসেকারা, রঙ্গনা হেরাথ, দুসমন্ত চামিরা ও থিসারা পেরেরা।
বাংলাদেশ সময়: ২২৫৮ ঘণ্টা, ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৬
এমআর
** লঙ্কানদের চতুর্থ উইকেটের পতন
** লঙ্কানদের তিন উইকেটের পতন
** ১০ ওভার শেষে ৬৬/১
** জয়ের লক্ষ্যে ফিল্ডিংয়ে টাইগাররা
** সাব্বির ঝড়ে টাইগারদের সংগ্রহ ১৪৭
** সাকিবেরও বিদায়
** ১৫ ওভার শেষে বাংলাদেশ ৯৭/৩
** ১২ ওভার শেষে বাংলাদেশ ৬৭/৩
** বাংলাদেশের দুই ওপেনারের বিদায়
** অপরিবর্তিত দল নিয়ে নামবে টাইগাররা