কলকাতা থেকে: নিউজিল্যান্ডের ছুঁড়ে দেওয়া ১৪৬ রানের টার্গেটে ব্যাট করছে বাংলাদেশ। টপঅর্ডারের ছয় ব্যাটসম্যানকে হারিয়ে খেলছে বিপাকে পড়া বাংলাদেশ।
১১ ওভার শেষে বাংলাদেশ ৬ উইকেট হারিয়ে তুলেছে ৪৫ রান।
১৪৬ রানের টার্গেটে টাইগারদের হয়ে ব্যাটিং উদ্বোধন করতে নামেন তামিম ইকবাল ও মোহাম্মদ মিঠুন। তবে, ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারে রান আউট হয়ে ফেরেন ৩ রান করা তামিম। ইনিংসের ষষ্ঠ ওভারে বোল্ড হয়ে ফেরেন ১৭ বলে ১১ রান করা মিঠুন। ম্যাকক্লেনাঘ্যানের বলে বোল্ড হন তিনি।
এরপর সাব্বিরকে নিয়ে জুটি গড়ার চেষ্টা করেন সাকিব আল হাসান। তবে, সান্টনারের করা ইনিংসের অষ্টম ওভারের প্রথম বলে বাউন্ডারি লাইনে ম্যাককালামের হাতে ধরা পড়েন ২ রান করা সাকিব। পরের ওভারে ১২ রান করা সাব্বির বিদায় নেন। আর স্ট্যাম্পিংয়ের ফাঁদে পড়ে বিদায় নেন ৬ রান করা সৌম্য সরকার।
এর আগে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ২৮তম ম্যাচে আগে ব্যাট করে নিউজিল্যান্ড নির্ধারিত ২০ ওভারে ৮ উইকেট হারিয়ে ১৪৫ রান সংগ্রহ করে। টাইগার পেসাররাই নিয়েছেন কিউইদের সবক’টি উইকেট। মুস্তাফিজ একাই নেন ক্যারিয়ার সেরা পাঁচটি উইকেট। এছাড়া, আল আমিন দুটি আর মাশরাফি একটি উইকেট তুলে নেন।
টাইগারদের জন্য নিয়মরক্ষার এ ম্যাচে টস জিতে আগে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নেন নিউজিল্যান্ড দলপতি কেন উইলিয়ামসন। টাইগারদের হয়ে বোলিং শুরু করেন মাশরাফি বিন মর্তুজা। নিউজল্যান্ডের হয়ে ব্যাটিং শুরু করেন কেন উইলিয়ামসন এবং অভিষিক্ত হেনরি নিকোলস। মার্টিন গাপটিলের পরিবর্তে খেলতে নামেন নিকোলস।
টাইগার দলপতির প্রথম ওভার থেকে কিউই ওপেনাররা তুলে নেন ৯ রান। শুভাগতর দ্বিতীয় ওভারে আরও ৬ রান যোগ করে কিউইরা। সাকিবের করা তৃতীয় ওভারে ৮ রান যোগ হয় স্কোরবোর্ডে। চতুর্থ ওভারে বোলিংয়ে এসে মুস্তাফিজ দেন মাত্র ২ রান। তবে, ইনিংসের শেষ বলে নিকোলসকে (৭ রান) বোল্ড করে ফিরিয়ে দেন কাটার স্পেশালিস্ট।
দলীয় ২৫ রানের মাথায় প্রথম উইকেট হারানো নিউজিল্যান্ড দলীয় ৫৭ রানের মাথায় দ্বিতীয় উইকেট হারায়। নিজের প্রথম ওভারেই আঘাত হানার পর নিজের দ্বিতীয় ওভারেও আঘাত হানেন মুস্তাফিজুর রহমান। নবম ওভারের শেষ বলে আরেক ওপেনার উইলিয়ামসনকে বোল্ড করে সাজঘরে পাঠান তিনি। বিদায় নেওয়ার আগে উইলিয়ামসন ৫টি চার আর একটি ছক্কায় ৩২ বলে ৪২ রান করেন।
পাওয়ার প্লে’র ছয় ওভারে নিউজিল্যান্ড এক উইকেট হারিয়ে তোলে ৩৯ রান। ১০ ওভার শেষে কিউইরা দুই উইকেট হারিয়ে ৫৯ রান সংগ্রহ করে। ৯২ বলে দলীয় শতক করে উইলিয়ামসন বাহিনী।
ইনিংসের ১৫তম ওভারের পঞ্চম বলে কলিন মুনরোকে বোল্ড করেন আল আমিন। ৩৩ বলে একটি চার আর দুটি ছক্কায় মুনরো করেন ৩৫ রান। দলীয় ৯৯ রানের মাথায় নিউজিল্যান্ড তৃতীয় উইকেট হারায়।
ইনিংসের ১৬তম ওভারে মাশরাফি বোল্ড করে ফিরিয়ে দেন কোরি অ্যান্ডারসনকে (০)। ইনিংসের ১৮তম ওভারে মুস্তাফিজের স্লোয়ারে বোকা-বনে যান গ্রান্ট ইলিয়ট। শুভাগত হোমের দুর্দান্ত ক্যাচে সাজঘরে ফেরার আগে তিনি করেন ৯ রান। পরের ওভারে আল আমিন ফেরান রস টেলরকে। এবারে অসাধারণ ক্যাচটি লুফে নেন মোহাম্মদ মিঠুন। আউট হওয়ার আগে টেলর ২৪ বলে ২৮ রান করেন।
শেষ ওভারে বোলিং আক্রমণে এসে চতুর্থ বলে মুস্তাফিজ বোল্ড করেন ৩ রান করা সান্টনারকে। পরের বলেই বোল্ড করেন নাথান ম্যাককালামকে। তবে, হ্যাটট্রিক বঞ্চিত হতে হয় টি-টোয়েন্টিতে ক্যারিয়ারে সেরা বোলিং করা মুস্তাফিজকে।
কলকাতার ইডেন গার্ডেনসে বাংলাদেশ সময় দুপুর সাড়ে তিনটায় শুরু হয় ম্যাচটি।
টাইগারদের হয়ে ৩ ওভারে ২১ রান দিয়ে একটি উইকেট নেন মাশরাফি। ৩ ওভারে শুভাগত হোম দেন ১৬ রান। সাকিব ৪ ওভারে ৩৩ রান খরচ করেন। ২ ওভারে ২১ রান দেন মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ। ৪ ওভারে ২৭ রানের বিনিময়ে দুটি উইকেট নেন আল আমিন। আর ৪ ওভারে মাত্র ২২ রান খরচ করে ৫ উইকেট দখল করেন মুস্তাফিজ। কিউইদের চার ব্যাটসম্যানকে বোল্ড করেন তিনি।
এর আগে নিজেদের প্রথম ম্যাচে পাকিস্তানের বিপক্ষে হারের পর নিজেদের দ্বিতীয় ম্যাচে ঘুড়ে দাঁড়ায় টাইগাররা। অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে লড়াই করেই হার মানে লাল-সবুজরা। নিজেদের তৃতীয় ম্যাচে স্বাগতিক ভারতকে কাঁপিয়ে দিয়ে মাত্র এক রানের ব্যবধানে হার মানে মাশরাফি-মুশফিক-সাকিব-তামিম-সৌম্য-মুস্তাফিজরা।
বাংলাদেশ একাদশ: তামিম ইকবাল, সৌম্য সরকার, সাব্বির রহমান, সাকিব আল হাসান, মুশফিকুর রহিম, মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ, শুভাগত হোম, মোহাম্মদ মিঠুন, মাশরাফি বিন মর্তুজা (অধিনায়ক), আল-আমিন হোসেন, মুস্তাফিজুর রহমান।
নিউজিল্যান্ড একাদশ: হেনরি নিকোলস, কেন উইলিয়ামসন (অধিনায়ক), কলিন মুনরো, কোরি অ্যান্ডারসন, রস টেলর, গ্র্যান্ট এলিয়ট, লুক রঞ্চি, মিশেল সান্টনার, মিশেল ম্যাকক্লেনাঘান, ইশ সোধি, নাথান ম্যাককালাম।
বাংলাদেশ সময়: ১৮১৪ ঘণ্টা, ২৬ মার্চ ২০১৬
এমআর