মিরপুর থেকে: মাশরাফি বিন মর্তুজার কলাবাগান ক্রীড়া চক্রের ব্যাটিং, বোলিং ও ফিল্ডিং দৈন্যতা অব্যাহত থাকলো পঞ্চম রাউন্ডে গাজী গ্রুপ ক্রিকেটার্সের বিপক্ষে ম্যাচেও। আর সেই দৈন্যতার সুযোগ শতভাগ কাজে লাগিয়ে ঢাকা প্রিমিয়ার লিগ ক্রিকেটে দলটিকে ৬ উইকেটে হারিয়ে নিজেদের তৃতীয় জয় তুলে নিয়েছে গাজী গ্রুপ।
পক্ষান্তরে মাশরাফিদের সন্তুষ্ট থাকেত হয়েছে ৫ ম্যাচে এক জয়েই। তাদের এই জয়ের পেছনে ব্যাট হাতে দলটির যে দুই কুশীলবের নাম না বললেই নয় তাঁরা হলেন দুই ওপেনার এনামুল হক বিজয় ও শামসুর রহমান শুভ। বিজয়ের অপরাজিত ৭০ ও শুভ’র ৭৫ রানের ধারালো ব্যাটিংয়েই মূলত কলাবাগানের দেয়া ২২৪ রানের লক্ষ্য ৪ উইকেটেই হারিয়েই টপকে গেছে গাজী গ্রুপ ক্রিকেটার্স।
মঙ্গলবার (১০ মে) মিরপুর শের-ই-বাংলা ক্রিকেট স্টেডিয়ামে অলোক কাপালির গাজী গ্রুপ ক্রিকেটার্সের বিপক্ষে টস হেরে ব্যাটিংয়ে নামে মাশরাফি বিন মর্তুজার কলাবাগান ক্রীড়া চক্র।
ব্যাটিংয়ে নেমে গাজী গ্রুপের বোলিং আক্রমণের সামনে ব্যাট হাতে থিতু হতে না পারায় কলাবাগানের ব্যাটসম্যানেরা একদিকে ব্যক্তিগত সংগ্রহের ভান্ডার থেকে যেমন বঞ্চিত হয়েছেন অন্যদিকে দলকেও এনে দিতে পারেননি সমৃদ্ধ সংগ্রহ।
কেননা, ওপেনিং অর্ডারের দুই ব্যাটসম্যান সাদমান ইসলাম ও জসিম উদ্দিন প্যাভিলিয়নে ফিরেছেন ব্যক্তিগত ১৯ ও ২৯ রান নিয়ে।
এদিন কলাবাগানেরর হয়ে দুই টপ অর্ডার জিম্বাবুইয়ান ব্যাটসম্যান হ্যামিল্টন মাসাকাদজা ব্যক্তিগত ৪০ ও তাসমাউল হক ৪৭ রানের সংগ্রহ না পেলে হয়তো ২০০ রানের কোঠাও মাশরাফিরা পার হতে পারতেন না।
এই দুই ব্যাটসম্যান ছাড়া অনাকাঙ্খিত ভাবে হলেও টেল এন্ডার আব্দুর রাজ্জাক এদিন ব্যাট হাতে কিছুটা প্রতিরোধ গড়তে পেরেছিলেন। ১৮ বলে তাঁর ৩০ রানের ইনিংটিই ৪৮.৪ ওভারে সবকটি উইকেটের বিনিময়ে কলাবাগানকে ২২৩ রানের সংগ্রহ এনে দিয়েছে। কলাবাগানের হয়ে চতুর্থ সর্বোচ্চ সংগ্রহটি ছিল তানভির হায়দারের ২৬ রানের ইনিংস।
গাজী গ্রুপ ক্রিকেটার্সের হয়ে বল হাতে অলোক কাপালি ৩টি, সাইদ আনোয়ার জুনিয়র ও মইনুল ইসলাম ২টি করে আর মেহেদি হাসান, সাজেদুল ইসলাম ও মোহাম্মদ শরীফ নিয়েছেন ১টি করে উইকেট।
জবারে, জয়ের জন্য ২২৪ রানের লক্ষ্যে খেলতে নেমে গাজী গ্রুপের দুই ওপেনার এনামুল হক বিজয় ও শামসুর রহমান শুভ’র ব্যাটিং তান্ডবে রীতিমত উড়ে গেছেন কলাবাগানের বোলাররা।
ব্যাটের পর তাদের বোলিং দৈন্যতার সুযোগ নিয়ে কোন উইকেট না হারিয়েই একটানা পানি পানের বিরতি পর্যন্ত মাশরাফির বোলারদের উপর স্টিম রোলার চালিয়ে তারা অপরাজিত থেকেছেন ১১২ রানে।
পানি পানের বিরতি থেকে ফেরার পর গাজী গ্রুপের ব্যাটসম্যানদের কী যেন হলো। ব্যক্তিগত ৭০ রানের পর হঠাৎই ক্রিজের মধ্যে শুয়ে পড়লেন এনামুল বিজয়। এভাবে কিছুক্ষণ কেটে যাওয়ার পর রিটায়ার্ড হার্ট হয়ে মাঠ ছাড়েন বিজয়। গাজী গ্রুপের দলীয় সংগ্রহ তখন ১৫৬।
বিজয় ব্যথা পেয়ে মাঠ থেকে বের হয়ে যাবার পর দলের সঙ্গে ১৭ রান যোগ করে এবারের প্রিমিয়ার ক্রিকেট লিগে নিজের ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ ৭৫ রান করে মাশরাফির বলে ক্রিজ ছাড়া হন শুভ।
এরপর আব্দুর রাজ্জাকের বলে ১১ রানে মেহেদি, নিহাদের বলে ১০ রানে ফরহাদ ও ১ রানে ফারুক মাশরাফির দ্বিতীয় শিকার হয়ে ফিরে গেলে কাপালিদের নিশ্চিত জয় কিছুটা অনিশ্চিত হয়ে পড়ে।
তবে পঞ্চম উইকেটে জুটিতে অলোক কাপালি ও সাইদ আনোয়ার জুনিয়রের ৩৪ রানের জুটিতে সেই অনিশ্চয়তা কাটিয়ে উঠে ৪ উইকেট হারিয়ে ২২৫ রান সংগ্রহ করে টুর্নামেন্টে তৃতীয় জয়ের বন্দরে নোঙ্গর ফেলে গাজী গ্রুপ ক্রিকেটার্স।
ব্যাট হাতে অলোক কাপালি ২৩ ও সাইদ আনোয়ার খেলেছেন ব্যক্তিগত ১৮ রানের ইনিংস।
বল হাতে কলাবাগানের হয়ে মাশরাফি বিন মর্তুজা ২টি, আব্দুর রাজ্জাক ও নিহাদুজ্জামান নিয়েছেন ১টি করে উইকেট।
বাংলাদেশ সময়: ১৬২০ ঘণ্টা, ১০ মে, ২০১৬
এইচএল/এমআরএম
** চোট পেয়ে মাঠ ছাড়লেন বিজয়