মিরপুর থেকে: প্রিমিয়ার লিগে শাহরিয়ার নাফিসের সবশেষ সেঞ্চুরি ছিল ২০১০ সালে। গাজী ট্যাংকের হয়ে লিগের ওই আসরে মোহামেডানের বিপক্ষে তার ব্যক্তিগত সংগ্রহ ছিল অপরাজিত ১১৪ রান।
অবশেষে দীর্ঘ ৬ বছর পর প্রিমিয়ার ক্রিকেটে সেঞ্চুরি দেখা দিল নাফিসের ব্যাটে। ঢাকা প্রিমিয়ার ক্রিকেট লিগের এবারের আসরে ষষ্ঠ রাউন্ডে ক্রিকেট কোচিং স্কুলের বিপক্ষে মিরপুর শের-ই-বাংলা স্টেডিয়ামে ১৩৪ রানের এক সমৃদ্ধ ইনিংস খেলে তুলে নিলেন সেই বহু কাঙ্খিত শতকটি।
‘জাতীয় দল নিয়ে আমি চিন্তা করছিনা। কারণ জাতীয় দলে ঢোকার ক্ষেত্রে অনেক সিচুয়েশন থাকে, কম্বিনেশন থাকে। তবে জাতীয় দলে সবাই ভালো করলে টিমে জায়গা খালি হবে না। আর আমি যদি পারফর্ম করে আমার কাজটি এগিয়ে না রাখি, তাহলে দলে সুযোগ আসবেনা। আর যেহেতু আমি দীর্ঘ নয় বছর জাতীয় দলে খেলেছি এবং ১৬ বছর ধরে ঘরোয়া ক্রিকেট খেলছি, সেহেতু নিজের নামের একটা সুবিচারের ব্যাপার আছে। আমি যদি ক্যারিয়ারের এই পর্যায়ে এসে পারফর্ম না করতে পারি, তাহলে হয়তো দেখা যাবে খেলাটাই আমাকে ছেড়ে দিয়েছে। তো আমি খেলাটাকে ছাড়তে চাই, খেলা আমাকে ছেড়ে দেয়ার আগে। ’-কথাগুলো বলছিলেনে প্রিমিয়ার লিগ ক্রিকেটে ৬ বছর পর সেঞ্চুরির দেখা পাওয়া শাহরিয়ার নাফিস।
শনিবার (১৪ মে) ম্যাচ পরবর্তী সংবাদ সম্মেলনে তিনি এমনটি জানালেন।
এর আগের ম্যাচটিতেও অবশ্য ব্যাট হাতে বেশ উজ্জ্বল ছিলেন নাফিস। প্রাইম ব্যাংকের বিপক্ষে এই মিরপুরেই ৮৪ রানের দুর্দান্ত এক ইনিংস খেলে দলকে এনে দিয়েছিলেন দ্বিতীয় জয়।
ফলে টনা দুই ম্যাচে নাফিসের ব্যাটে রানের ধারাবাহিকতা দেখলো এবারের ঢাকা প্রিমিয়ার ক্রিকেট লিগ। ক্রিকেট কোচিংয়ের বিপক্ষে তার ১৩৪ রানের এই ইনিংসে তৃতীয় জয় তুলে নিয়ে দলকে সুপার লিগের লড়াইয়ে টিকিয়ে রেখেছে। তাই ম্যাচ শেষে নিজের এই কাঙ্খিত ইনিংস সম্পর্কে বলতে গিয়ে নাফিস জানালেন তার এই লম্বা ইনিংসের রহস্য, ‘কোচ বলেছেন টপ ফোরের যেকোনো একজন ব্যাটসম্যান সর্বনিম্ন ৪৫ রান পর্যন্ত খেলতে । তো ওটাই ফলো করার চেষ্টা করেছি। অর্থাৎ টিমের যে পরিকল্পনা ছিলো ওটা আমাকে ব্যাটিং করতে সাহায্য করেছে। ’
তবে এখানেই থামতে চাইছেন না নাফিস, চাইছেন পারফরমেন্সের এই ধারাবাহিকতা সামনের ম্যাচগুলোতেও ধরে রাখতে আর সেই ক্ষেত্রে কোচের বেধে দেয়া টিম পরিকল্পনার সঠিক বাস্তবায়নের কোন বিকল্পই দেখছেন না। তিনি যোগ করেন, ‘আমি দুইটা জিনিস চেষ্টা করবো। একটা হলো রানের ধারাবাহিকতা ধরে ম্যাচ চালিয়ে যাওয়ার; এটা হচ্ছে ব্যক্তিগত পরিকল্পনা। আর একটা হচ্ছে, টিমের যে পরিকল্পনা থাকে সে অনুযায়ি ব্যাটিং করা। ’
ঘরোয়া ক্রিকেটে যার এমন পারফরমেন্স তিনি তো জাতীয় দলের খেলার স্বপ্ন দেখতেই পারেন। স্বপ্ন দেখছেন নাফিসও। ব্যাটে রানের এমন ধারাবাহিকতা ধরে রেখে জাতীয় দলে আসার আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। সেই চেষ্টায় কতটুকু সফল হবেন তার পুরো ব্যাপারটাই ছেড়ে দিয়েছেন বোর্ড ও নির্বাচকদের হাতে। ‘আমার টার্গেট থাকবে পারফর্ম করা। প্লেয়ার নির্বাচন তো আর আমি করিনা। নির্বাচন করেন নির্বাচকরা আর বোর্ড। আমি যদি ঘরোয়া ক্রিকেটের চারটি টুর্নামেন্টে ধারাবাহিকভাবে পারফরমেন্স করতে পারি এবং সাথে যদি জাতীয় দলের ওই জায়গাটা খালি হয়, তাহলে একটা সুযোগ আসবে। কিন্তু আমি যদি পারফর্ম না করতে পারি, তাহলে কোনদিনই সুযোগ আসবেনা। আর সুযোগ যদি না আসে তাহলে এই যে ভালো খেলছি এতেই আমি খুশি থাকবো। ’
বাংলাদেশ সময়: ১৮৫৩ ঘণ্টা, ১৪ মে ২০১৬
এইচএল/এমআর